কড়াইল বস্তিতে ৫০-৬০টি ঘর পুড়ে গেছে: ফায়ার সার্ভিস
আগুনে রাজধানীর কড়াইল বস্তির ৫০-৬০টি ঘর পুড়ে গেছে বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।
আজ রোববার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে এই আগুন লাগে। পরে ফায়ার সার্ভিসের ৯টি ইউনিটের প্রায় ১ ঘণ্টা চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
এরপর এই অগ্নিকাণ্ড নিয়ে ঘটনাস্থলে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের পরিচালক (অপারেশনস) লেফটেন্যান্ট কর্নেল তাজুল ইসলাম চৌধুরী।
তিনি বলেন, 'আগুনে কড়াইল বস্তির ৫০-৬০টি ঘর পুড়ে গেছে। আগুন নেভাতে কাজ করেছে ফায়ার সার্ভিসের ৯টি ইউনিট। তবে আগুনের সূত্রপাত কীভাবে হয়েছে তা তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি, তদন্ত সাপেক্ষে বলা যাবে।'
চলতি মাসেই ৩ হাজার ৬০০ টাকা ভাড়ায় কড়াইল বস্তির একটি ঘরে উঠেছিলেন সিলেটের শাহপরান এলাকার মাজেদা বেগম। সিকিউরিটি গার্ড স্বামী জাফরুল হক কাজে চলে যাওয়ায় শিশু সন্তানকে নিয়ে ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন অন্তঃসত্ত্বা এই নারী। হঠাৎ প্রতিবেশীদের আগুন আগুন চিৎকারে তার ঘুম ভাঙে। এরপর তড়িঘড়ি করে শিশুকে কোলে নিয়ে কোনোরকমে আগুন থেকে বেরিয়ে আসতে সক্ষম হন তিনি।
মাজেদা বেগম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'প্রতিবেশীদের চিৎকারে ঘুম ভাঙে। ঘরের দরজা খুলে দেখি চারপাশে আগুন। কোনো উপায়ন্তর না পেয়ে বাচ্চাটাকে কোলে নিয়ে দৌড় দেই। আমি ৯ মাসের অন্তঃসত্ত্বা, ঠিকমতো দৌড়াতেও পারছিলাম না। যাইহোক প্রাণে বেঁচে গেছি। কিন্তু সঙ্গে মোবাইলটাও নিতে পারিনি। ঘরের সবকিছু পুড়ে গেছে। স্বামী এখনো আমাদের কোনো খবর জানে না।'
বস্তির আরেক বাসিন্দা প্রাইভেটকারচালক রমজান আলী বলেন, 'গাড়ি চালিয়ে অনেক কষ্টে টাকা জমিয়ে বস্তিতে ৫টি ঘর তুলেছিলাম। ৪টি ভাড়া দিয়ে এবং একটিতে থাকতাম। আগুনে আমার ৫টি ঘরই পুড়ে গেছে। এখন পরিবার-পরিজন নিয়ে কোথায় উঠব, কীভাবে থাকব জানি না।'
গত ৬ বছর ধরে কড়াইল বস্তিতে থাকেন শেরপুরের ময়না বেগম। স্বামী স্বপন মিয়া রিকশাচালক এবং তিনি গৃহপরিচারিকার কাজ করেন। অগ্নিকাণ্ডের সময় তারা দুজনেই বাইরে ছিলেন। ঘরে ছিল তাদের ছোট্ট ২ শিশু।
ময়না বেগম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বস্তিতে আগুন লাগার খবর শুনে দ্রুত ছুটে আসি। এসে দেখি আমার সন্তানেরা ঘর থেকে বের হতে পেরেছে। কিন্তু ঘরে কিছুই নেই, সব পুড়ে গেছে। সামনের দিন কীভাবে কাটবে তা ভেবে কোনো কূল পাচ্ছি না।'
Comments