‘চর্তুদিকে আগুন, আমার জন্য দোয়া করো’

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে স্বামীর ছবি হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে আহাজারি করছিলেন রেবা আক্তার (২৫)।
ছবি: শাহীন মোল্লা/স্টার

'রাত ১০টায় সর্বশেষ ফোনে কথা হয়। আমাকে জানায়, চতুর্দিকে আগুন দোয়া করো যেন বেঁচে ফিরতে পারি। এরপরে আর তাকে ফোনে পাইনি…'

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে স্বামীর ছবি হাতে নিয়ে স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন রেবা আক্তার (২৫)।

গতকাল রাতে রাজধানীর বেইলি রোডে ছয়তলা ভবনের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে নিহত ৪৪ জনের মধ্যে একজন তার স্বামী জুয়েল গাজী (২৭)। তিনি ভবনটির তৃতীয় তলায় পিজ্জা ইন রেস্টুরেন্টে কাজ করতেন।

রেবা বলেন, 'রাত ১০টার দিকে আমরা ঘুমানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। তখন আমার স্বামী ফোন করে। আমি তাকে বললাম, তুমি তাড়াতাড়ি সেখান থেকে বের হও। সে আমাকে বলে, "সিঁড়িতে আগুন, কোথাও যেতে পারছি না, নিচেও নামতে পারছি না, উপরেও উঠতে পারছি না। আমার জন্য দোয়া করো"। এরপরই ফোনের লাইন কেটে যায়। পরে আর তাকে ফোনে পাইনি।'

'জানতে পারি তাকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করে আইসিইউতে নেওয়া হয়েছে। কিন্তু এসে দেখি, আমার স্বামী আর বেঁচে নেই,' রেবা বলেন।

জুয়েল ও রেবা দম্পতির দুটি সন্তান রয়েছে। বাবার মৃতুর খবরে কান্না থামছে না আট বছর বয়সী তাসলিমা আক্তারের।

জুয়েলের বড় ভাই আল আমীন বলেন, 'ওই ভবনের একটি রেস্টুরেন্টে আমার বোনের ছেলে রাকিবও কাজ করে। আগুনের খবর পেয়ে আমি দ্রুত সেখানে যাই। আমি দুজনকেই জীবিত পেয়েছিলাম। আমার সাথে জুয়েল কথাও বলেছে। পরে আইসিইউতে নেওয়ার পর মারা গেল।'

রাকিব ঢামেকে চিকিৎসা শেষে এখন সুস্থ আছে বলে জানান তিনি।

'আমার স্বামী রেস্টুরেন্টে কাজ করে মাসে ২০ হাজার টাকা বেতন পেত। এ দিয়েই সংসার চলত। এখন দুই সন্তান নিয়ে আমি কার কাছে যাব,' কাঁদতে কাঁদতে বলেন রেবা।

Comments

The Daily Star  | English
SSC result 2024

SSC, equivalent exam results tomorrow

The results of the Secondary School Certificate and equivalent examinations of 2024 will be published tomorrow

4h ago