কুতুবদিয়ায় ১৩ ঘণ্টা পরও নিয়ন্ত্রণে আসেনি এলপিজি ট্যাংকারের আগুন, তদন্ত কমিটি গঠন

কুতুবদিয়া বহির্নোঙ্গরে আজ রোববার ভোররাতে একটি এলপিজি ট্যাংকারে লাগা আগুন ১৩ ঘণ্টা পরও নিয়ন্ত্রণে আসেনি।

আজ দুপুর ২টায় বাংলাদেশ কোস্টগার্ড ইস্ট জোনের জোনাল কমান্ডার ক্যাপ্টেন জহিরুল হক দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, গ্যাসভর্তি থাকায় ট্যাংকারের আগুন এখনো পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনা যায়নি।

তিনি জানান, বসুন্ধরা গ্রুপের মালিকানাধীন বি-এলপিজি সোফিয়া ট্যাংকারে আগুন লেগেছে। এই ট্যাংকার মাদার ভেসেল ক্যাপ্টেন নিকোলাস থেকে এলপিজি পরিবহন করছিল।

এ ঘটনা তদন্তে নয় সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। কমিটির প্রধান করা হয়েছে বন্দরের সদস্য (হার্বার অ্যান্ড মেরিন) কমোডর এম ফজলার রহমানকে।

এই কমিটিকে আগামী পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।

কমিটিতে নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স, ডিজিএফআই, এনএসআই, নৌপরিবহন অধিদপ্তরসহ অন্যান্য সংস্থার প্রতিনিধিরা আছেন।

এর আগে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মো. ওমর ফারুক জানান, তাদের তিনটি অগ্নিনির্বাপক টাগবোট কাণ্ডারি ৩, ৪ ও ১০ আগুন নেভাতে কাজ করে যাচ্ছে।

আগুন লাগার আগে মাদার ভেসেল ক্যাপ্টেন নিকোলাস থেকে এলপিজি নেওয়া হচ্ছিল বি-এলপিজি সোফিয়ায়। এরই মধ্যে আগুন লেগে গেলে মাদার ভেসেলের সঙ্গে বি-এলপিজি সোফিয়াকে বেধে রাখা দড়িটি ছিঁড়ে যায় এবং ট্যাংকারটি উন্মুক্ত অবস্থায় ভাসতে ভাসতে বেশ দূরে চলে যায়।

আগুন লাগে ক্যাপ্টেন নিকোলাসেও। ওমর ফারুক জানান, 'মাদার ভেসেলের আগুন ভোররাত ৩টার আগেই নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে।'

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বন্দরের মেরিন বিভাগের এক কর্মকর্তা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বি-এলপিজি সোফিয়ার শুধু পেছনের দিকে একটি অংশে আগুন জ্বলছে। বাকিটা নেভানো সম্ভব হয়েছে। ট্যাংকারটির পেছনের একটি অংশে কার্গোহোল্ডে পর্যাপ্ত গ্যাস রয়ে যাওয়ায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সময় লাগছে। আগুন নিভে যাওয়ার পর আবারও জ্বলে উঠছে। ফলে, আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করতে আরও কিছুটা সময় লাগবে।'

ট্যাংকারের ১৮ জন ক্রু, দুজন মুরিং ম্যান, তিনজন প্রহরী এবং মাদার ভেসেল থেকে সাগরে ঝাঁপ দেওয়া আটজন বন্দর নিরাপত্তারক্ষীকে উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানান ক্যাপ্টেন জহিরুল।

ক্রুদের মধ্যে নয়জন বাংলাদেশি, আটজন ইন্দোনেশিয়ান এবং একজন ভারতীয়।

মাদার ভেসেল থেকে বি-এলপিজি সোফিয়ায় এলপিজি নেওয়ার সময় বসুন্ধরা গ্রুপেরই আরেকটি টাগবোট কাছাকাছি অবস্থানে ছিল। দুর্ঘটনার খবরে এই টাগবোটটিই প্রথম এগিয়ে যেতে সক্ষম হয় এবং ৩১ জনকে উদ্ধার করে।

টাগবোটের মাস্টার মো. নজরুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমরা হাফ নটিক্যাল মাইলের মধ্যেই ছিলাম। খবর পেয়েই দ্রুত সেখানে পৌঁছে দেখতে পাই দুটি জাহাজেই আগুন ধরেছে। আমার ধারণা মাদার ভেসেল ক্যাপ্টেন নিকোলাসের ক্রুরাই সেখানে লাগা আগুন নিভিয়ে ফেলতে সক্ষম হয়েছিলেন।'

ক্যাপ্টেন জহিরুল জানান, কোস্টগার্ড রাত ১২টা ৫৫ মিনিটে খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই অগ্নিনির্বাপক টাগবোট প্রমত্ত, একটি টহল বোট ও আটটি স্পিড বোট নিয়ে উদ্ধারকাজ শুরু করে। নৌবাহিনীও অগ্নিনির্বাপক টাগবোট পাঠিয়েছে।

তিনি বলেন, 'ট্যাংকারের সঙ্গে বাঁধা দড়িটি ছিঁড়ে যাওয়ায় মাদার ভেসেল নিরাপদ আছে।'

Comments

The Daily Star  | English
NCP protest rally for election commission reform

NCP to hold protest rally in front of EC demanding its reconstitution

Calls on govt to hold local elections without delay

1h ago