পাবনায় সবজি চাষে কৃষকের মুখে হাসি

ঈশ্বরদী উপজেলার ভারইমারি গ্রামে খেতের সবজি বিক্রির জন্য প্রস্তুত করছেন কৃষকরা। ছবি: আহমেদ হুমায়ুন কবির তপু/ স্টার

লাভের মুখ দেখায় গত কয়েক বছরের মতো এ বছরও সবজি আবাদে ঝুঁকেছেন পাবনার কৃষকরা। এক সময় এখানকার কৃষকরা বাড়ির আঙিনায় বা পতিত জমিতে সবজি আবাদ করলেও এখন মূল ফসলের পাশাপাশি বাণিজ্যিক ভিত্তিতে সবজি আবাদ করছেন তারা।

পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার ভারইমারি গ্রামের কৃষক রজব আলি জানান, কয়েক বছর আগেও ২ বিঘা জমিতে সরিষা, তিল বা অন্য রবি ফসল আবাদ করতেন তিনি। তবে এখন রবি মৌসুমে পুরো জমিতেই গাজর আবাদ করেন।

রজব বলেন, 'সরিষা বা অন্য রবি ফসল আবাদ করে ১ বিঘা জমি থেকে ১৫ হাজার টাকার বেশি লাভ করা যায় না, কিন্তু গাজর আবাদ করে প্রতি বিঘা জমি থেকে প্রায় ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা লাভ করতে পারছি।'

লাভের আশায় তার গ্রামের অনেক কৃষকই এখন গাজর ও টমেটোসহ বিভিন্ন শীতের শাক-সবজি আবাদ করছেন বলে জানান তিনি।

একই গ্রামের কৃষক মো. জসিম উদ্দিন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমার ২ বিঘা জমিতে আগাম জাতের হাইব্রিড গাজর আবাদ করেছি। ১ বিঘা জমি থেকে প্রায় ৮০ হাজার টাকার গাজর বিক্রি করে প্রায় ৩০ হাজার টাকার বেশি লাভ করেছি। জমি থেকে গাজর তুলে নেওয়ার পর এখন শীতকালীন লাল শাক আবাদ করছি।'

পাবনা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উন্নয়ন শাখার কর্মকর্তা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. ইদ্রিস আলি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আশানুরূপ লাভের মুখ দেখায় পাবনার কৃষকরা সবজি আবাদের প্রতি আগ্রহী হয়েছেন। এ বছর পাবনায় ২২ হাজার ২৫০ হেক্টর জমিতে সবজি আবাদ করে প্রায় ৫ দশমিক ৬৭ লাখ মেট্রিক টন সবজি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে ২১ হাজার হেক্টর জমিতে সবজি আবাদ সম্পন্ন হয়েছে। বাকি জমিতেও দ্রুত সময়ের মধ্যেই আবাদ সম্পন্ন হবে।'

'লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী সবজি আবাদ হলে জেলায় সবজি ব্যবসা ১ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে', বলেন তিনি।

পাবনা সদর উপজেলার কমরপুর গ্রামের মো. রেজাউল ইসলাম বলেন, 'আগে আমি জমিতে কলা চাষ করতাম। এখন কুমড়া ও বেগুন চাষ করছি। স্বল্প সময়ে প্রতি বিঘা জমি থেকে ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা আয় করছি।'

ছবি: আহমেদ হুমায়ুন কবির তপু/ স্টার

আটঘরিয়া উপজেলার দেবোত্তর গ্রামের মো. রফিকুল ইসলান জানান, সবজি চাষ আগে তার শখের মতো ছিল। এখন অল্প সময়ে সর্বোচ্চ লাভের জন্য ৫ বিঘা জমির মধ্যে ২ বিঘাতেই সবজি চাষ করছেন।

এদিকে জেলায় সবজির ব্যাপক আবাদ হলেও মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য আর অতিরিক্ত পরিবহন খরচের কারণে কৃষক প্রকৃত লাভ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন বলে অভিযোগ করেন কৃষকরা।

কৃষক রজব আলি বলেন, 'বাজারে যখন ৭০ টাকা কেজির ওপর গাজর বিক্রি হয়েছে তখন মাঠ থেকে আমরা ৯০০ থেকে ১ হাজার টাকা মন দরে গাজর বিক্রি করেছি। মাঠ থেকে ফড়িয়ারা কম দামে পণ্য কিনে দেশের বিভিন্ন বাজারে চড়া দামে বিক্রি করছে। ফলে ফসলের প্রকৃত দাম পাচ্ছে না কৃষক।'

সবজি ব্যবসায়ী মেহেদি হাসান বলেন, 'তেলের দাম বাড়ার কারণে সবজির ট্রাকের ভাড়া প্রায় দিগুণ হয়ে পড়েছে। ১ ট্রাক সবজি ঢাকা পৌঁছাতে আগে ১০ হাজার টাকা লাগলেও এখন প্রায় ১৭ থেকে ১৮ হাজার টাকা খরচ হচ্ছে। ফলে সবজির দাম বেড়ে যাচ্ছে।'

Comments

The Daily Star  | English

Stocks fall on poor performance of large companies

Indexes of the stock market in Bangladesh declined yesterday on rising the day before, largely due to the poor performance of Islami Bank Bangladesh along with the large-cap and blue-chip shares amid sales pressures..Large-cap refers to shares which account for large amounts in market capi

2h ago