‘গ্রিন অ্যাওয়ার্ড’ পেলেন ৭০ কৃষক

পরিবেশ সংরক্ষণ ও দূষণ নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখায় ‘গ্রিন অ্যাওয়ার্ড’ পেয়েছেন কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার ৭০ জন কৃষক। থনাগেশ্বরী উপজেলার ভিতরবন্দ ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে কৃষকদের এ সম্মাননা দেয় ‘গ্রিন ভিলেজ ফাউন্ডেশন’ নামে একটি বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। প্রত্যেক কৃষককে ক্রেস্ট ও পরিধেয় বস্ত্র দেওয়া হয়।
‘গ্রিন অ্যাওয়ার্ড’ পেলেন ৭০ কৃষক
স্কুলশিক্ষক এম রশিদ আলী পরিবেশ সংক্রান্ত বিষয়ে কৃষক নাজির হোসেনকে পরামর্শ দিচ্ছেন। ছবি: এস দিলীপ রায়/স্টার

পরিবেশ সংরক্ষণ ও দূষণ নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখায় 'গ্রিন অ্যাওয়ার্ড' পেয়েছেন কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার ৭০ জন কৃষক। থনাগেশ্বরী উপজেলার ভিতরবন্দ ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে কৃষকদের এ সম্মাননা দেয় 'গ্রিন ভিলেজ ফাউন্ডেশন' নামে একটি বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। প্রত্যেক কৃষককে ক্রেস্ট ও পরিধেয় বস্ত্র দেওয়া হয়।

নাগেশ্বরী উপজেলার ভাঙ্গামোর গ্রামের কৃষক নাজির হোসেন (৪৬) ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ক্রেস্ট ও পরিধেয় বস্ত্র পেয়েছি এটা বড় কথা নয়। গর্বের বিষয় হলো কৃষককে নিয়ে কেউ ভাবেন এবং কৃষকদের সম্মানিত করেন। আমি সারাবছরই সবজি উৎপাদন করছি। খুব বেশি প্রয়োজন ছাড়া আমি রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ব্যবহার করি না। অধিকাংশ সময়ই জৈবসার ব্যবহার করে সবজি উৎপাদন করি। আমাদেরকে সম্মানিত করায় আমরা খুশি হয়েছি। পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণে আরও বেশি মনোযোগী হবো।'

নাগেশ্বরী উপজেলার কুমারপাড়া গ্রামের কৃষক গেল্লা চন্দ্র (৫৫) ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গ্রামে যত্রতত্র ফেলে রাখা আবর্জনা সংগ্রহ করে জৈবসার প্রস্তুত করি। এসব সার ব্যবহার করে ফসল উৎপাদন করি। এছাড়া ফসলে পরিমান মতো রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ওষুধ ব্যবহার করি। আমাকে অ্যাওয়ার্ড দেওয়ায় আমি খুশি হয়েছি।'

হাজীপুর গ্রামের কৃষক বাবু মিয়া (৫৮) ডেইলি স্টারকে বলেন, গেল কয়েকবছর যাবত বিষমুক্ত শাক-সবজি উৎপন্ন করছি। এসব শাক-সবজি দিয়ে পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে বাজারে বিক্রি করছি। বৃক্ষরোপণ আমার শখ। বাড়ির আশে-পাশে এমনকি গ্রামের রাস্তার দুধারে বৃক্ষরোপণ করেছি।'

পন্ডিতপাড়া গ্রামের কৃষক আজগার আলী (৪৪) ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গ্রিন অ্যাওয়ার্ড আমাদেরকে পরিবেশ সংরক্ষণে আরও বেশি কাজ করতে উৎসাহী করেছে। পরিবেশ সংরক্ষণ করা হলে জীবন বাঁচবে আর জীবন বাঁচলে সমাজ রক্ষা হবে। বাড়ির আশে-পাশে বৃক্ষরোপণ করতে সবাইকে সজাগ করে থাকি। এমনকি আমি নিজেই বৃক্ষরোপণ করে দিয়ে সহায়তা করছি।'

গ্রিন ভিলেজ ফাউন্ডেশনের পরিচালক স্কুলশিক্ষক এম রশিদ আলী ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গ্রিন অ্যাওয়ার্ড প্রাপ্ত কৃষকরা প্রত্যেকেই নিজ এলাকায় পরিবেশ সংরক্ষণ ও দূষণ নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখছেন। তাদের অনেকেই রাসায়নিকমুক্ত শাক-সবজি উৎপাদন করছেন। বাড়ির আশে-পাশে ও গ্রামে যত্রতত্র ফেলে রাখা আবর্জনা সংগ্রহ করে তা দিয়ে জৈবসার প্রস্তুত করছেন। এতে তারা পরিবেশকে দূষণমুক্ত রাখছেন। তাদের সংগঠন ২০১৮ সাল থেকে পরিবেশ নিয়ে কাজ করছে এবং কৃষকদের পরিবেশবান্ধব ফসল উৎপাদনে অনুপ্রেরণা দিচ্ছে।'

Comments