উখিয়া ক্যাম্পে ২ রোহিঙ্গা নেতাকে গুলি করে হত্যা

ছবি: ফাইল ফটো

কক্সবাজারের উখিয়া ক্যাম্পে সন্ত্রাসীদের গুলিতে ২ রোহিঙ্গা নেতা (মাঝি) নিহত হয়েছেন। আজ বুধবার সকালে কক্সবাজার আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন-৮ এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) মো. কামরান হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, সন্ত্রাসীদের গুলিতে ক্যাম্প-১৫ ব্লক সি এর মাঝি আবু তালেব (৪০) এবং ক্যাম্প-১৫ সাব-ব্লক সি/৯ মাঝি সৈয়দ হোসেন (৩৫) নিহত হয়েছেন। গতকাল দিবাগত রাত পৌনে ১২টার দিকে ক্যাম্প-১৫ সাব-ব্লক সি/৯ এর বাসিন্দা আছিয়া বেগমের ঘরের সামনে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।

কামরান বলেন, আছিয়া বেগমের ঘরের সামনে বসার জন্য মাচা করা আছে। ওই জায়গায় মোবাইল ফোনের নেটওয়ার্ক ভালো পাওয়া যায়। প্রতি রাতেই তালেব ও হোসেন সেখানে যেতেন—হত্যাকারীরা সেটা জানতো এবং গতকাল তারা আগে থেকেই ওত পেতে ছিল। তারা গুলি চালালে ঘটনাস্থলেই দুজনের মৃত্যু হয়। সৈয়দ হোসেনের গলায় একটি গুলি লেগেছে এবং তালেবের পাঁজরে ও গলায় ৩টি গুলি লেগেছে।

যেখানে হত্যাকাণ্ড হয়েছে তার পেছনেই পাহাড় আছে। ধারণা করা হচ্ছে, হত্যাকারীরা পাহাড়ের সরু রাস্তা দিয়ে পালিয়ে গেছে। এই হত্যাকাণ্ডের কোনো প্রত্যক্ষদর্শী পাওয়া যায়নি। গুলির শব্দ শুনে ক্যাম্পের বাসিন্দারা যখন ঘর থেকে বের হয়ে আসে তখন তারা কাউকে পালিয়ে যেতে দেখেনি। আমরা ঘটনাস্থল থেকে ৩টি গুলির খোসা উদ্ধার করেছি। মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে, বলেন কামরান।

তিনি আরও বলেন, তাদের স্বজনের দাবি আগে থেকেই হত্যার হুমকি ছিল। কারা হুমকি দিয়েছিল সেটা আমরা তদন্ত করে দেখছি।

সাম্প্রতিক সময়ে কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে গোলাগুলি, হামলা, হত্যাসহ বিভিন্ন অপরাধের ঘটনা বেড়ে গেছে।

গত ৮ আগস্ট রাতে উখিয়ার বালুখালী ৮ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সন্ত্রাসীদের গুলিতে গুরুতর আহত হন পাহারাদার রোহিঙ্গা যুবক আয়াত উল্লাহ(২৮)। 

৭ আগস্ট টেকনাফের হ্নীলার নয়াপাড়া নিবন্ধিত রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন পাহাড়ে গোলাগুলির ঘটনায় রোহিঙ্গা যুবক মোহাম্মদ ইব্রাহিম নিহত হন।

২ আগস্ট দুপুরে টেকনাফের নয়াপাড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সন্ত্রাসীদের গুলিতে আহত হন আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন সদস্য কাউসার আহমদ। 

১  আগস্ট রাতে উখিয়ার বালুখালী ৪ নম্বর  ক্যাম্পে গুলিতে নুর সালাম (২৬) নামে এক রোহিঙ্গা যুবক নিহত হন। 

২১ জুলাই রাতে উখিয়ার কুতুপালং ৪ নম্বর বর্ধিত ক্যাম্পে দুই দল সন্ত্রাসীর মধ্যে গোলাগুলির ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হন রশিদ আহমা, নুর হোসেন ও মোহাম্মদ হোসেন নামে ৩ রোহিঙ্গা। 

১৬ জুন ভোরে বালুখালী ক্যাম্পে দুই দল সন্ত্রাসীর মধ্যে গোলাগুলির ঘটনায় নিহত হন রোহিঙ্গা যুবক মোহাম্মদ সেলিম।

১০ জুন বালুখালী ৪ নম্বর ক্যাম্পের সি ব্লক থেকে মোহাম্মদ সোমেন নামের এক রোহিঙ্গা যুবকের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। 

৯ জুন বালুখালী ৪ নম্বর ক্যাম্পে রোহিঙ্গা মাঝি আজিম উদ্দীনকে গুলি করে হত্যা করে দুষ্কৃতিকারীরা। 

গত বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর রাতে উখিয়ার কুতুপালং সংলগ্ন লম্বাশিয়া ক্যাম্পে মুখোশধারী বন্দুকধারীদের গুলিতে নিহত হন রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহ।

২০২১ সালের ২৩ অক্টোবর বালুখালী ১৮ নম্বর ক্যাম্পের দারুল উলুম নাদওয়াতুল ওলামা আল ইসলামিয়াহ মাদ্রাসায় ঘুমন্ত অবস্থায় গুলি করে হত্যা করা হয় ৬ জনকে। ওই ঘটনায় আহত হন ১২ জন রোহিঙ্গা। 

এসব হত্যা, হামলা,অপহরণ ও গোলাগুলির ঘটনা ছাড়াও নিয়মিতভাবে রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলো থেকে দেশীয় অস্ত্র ও গোলাবারুদ জব্দ করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

Comments

The Daily Star  | English

Bangladesh's exports stuck in EU, US orbit

Non-garment exports struggle with quality standards and logistics bottlenecks

13h ago