মহাসড়কে সশস্ত্র মহড়া

ফরিদপুরে ছাত্রলীগ নেতাসহ জেলহাজতে ৫, দ্রুত বিচার আইনে মামলা

ছাত্রলীগ নেতা সাব্বিরসহ গ্রেপ্তার ৫। ছবি: স্টার

ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে ছাত্রলীগের একাংশের সশস্ত্র মহড়া দিয়ে জনমনে ভয়-ভীতি, ত্রাস-অরাজকতা ও যানবাহন চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি এবং বাড়িঘর ভাঙচুরের ঘটনায় ফরিদপুর সদরের কানাইপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাব্বিরসহ ৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

গতকাল রাত থেকে আজ রোববার সকাল পর্যন্ত ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে অভিযান চালিয়ে এই ৫ জনকে গ্রেপ্তার করে কোতোয়ালি থানা পুলিশ।

অভিযানকালে ওই সশস্ত্র মহড়ায় ব্যবহৃত দুটি রামদা, একটি বড় ছুরি ও একটি লোহার রড জব্দ করা হয়।

এ ঘটনায় ওই ছাত্রলীগ নেতাসহ ১৩ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাতনামা আরও ১০ জনকে আসামি করে আজ সকালে মামলা দায়ের করেন কানাইপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি এ এফ এম আসলাম।

বিকেলে গ্রেপ্তারকৃতদের ৫ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন জানিয়ে আদালতে সোপর্দ করে পুলিশ।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, মামলায় এজাহারভুক্ত আসামি কানাইপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও ইউনিয়নের কাশিমাবাদ গ্রামের সাব্বির, একই গ্রামের নাজমুল, পাশের কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের ভোলাবাজ গ্রামের মো. সাগর বেপারী, একই গ্রামের মো. রাকিব খান এবং কানাইপুর ইউনিয়নের ভাটি কানাইপুর গ্রামের তুষার।

এ বিষয়ে দুপুর ২টার দিকে জেলা পুলিশের উদ্যোগে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন পুলিশ সুপার মো. শাহজাহান।

সেসময় তিনি বলেন, 'কানাইপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে গত ২৫ আগস্ট ফরিদপুর সদরের কানাইপুর বাজার সংলগ্ন ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে ইউনিয়ন ছাত্রলীগের একাংশ সশস্ত্র মহড়া দিয়েছে।'

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, কানাইপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাব্বির ও থানা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সৌরভ মিলে একটি গ্রুপের নেতৃত্ব দেন। অপর গ্রুপের নেতৃত্ব দেন ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি এ এফ এম আসলাম এবং ছাত্রলীগের কর্মী ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের পদপ্রার্থী সোহাগ। এই ২ গ্রুপের বিরোধকে কেন্দ্র করে অভ্যন্তরীণ কোন্দল ও ভয়-ভীতি দেখানোর জন্য এ শোডাউন করা হয়। আসলাম ও সোহাগকে ভয় দেখানোর জন্য থানা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সৌরভ স্থানীয় সন্ত্রাসী খায়রুজ্জামান ওরফে খাজা গ্রুপের দিদার, শহীদ ও সোহেলসহ বিভিন্ন জায়গা থেকে লোকজনকে নিয়ে এসে আতঙ্ক সৃষ্টির উদ্দেশ্যে মহাসড়কে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে শোডাউন করেন।

পুলিশ সুপার মো. শাহজাহান বলেন, 'রাজনীতির নামে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড যারা করে এবং রাজনীতিতে যারা দুর্বৃত্তায়ন করে তাদের প্রতিহত করা হবে। রাজনীতি ও সন্ত্রাস একসঙ্গে চলতে দেওয়া হবে না। এ লক্ষ্যকে সামনে রেখে এ সশস্ত্র শোডাউনের ঘটনায় দ্রুত বিচার আইনে মামলা হয়েছে এবং এ মামলার আসামি হিসেবে যারা জড়িত ভিডিও ফুটেজ দেখে তাদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। এ পর্যন্ত ৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদের দ্রুত গ্রেপ্তার করা হবে।'

তিনি বলেন, 'যারা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে, তাদের স্থান হবে কারাগারে।'

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার আরও বলেন, 'ফরিদপুর শহরে সন্ত্রাসী কার্যক্রমের জন্য কাউকে ন্যূনতম প্রশ্রয় দেওয়া হবে না। ফরিদপুর শহরে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে অভিযান চলমান থাকবে এবং আরও বেগবান করা হবে। সন্ত্রাসীদের ফরিদপুরের মাটিতে কোনো জায়গা দেওয়া হবে না।'

এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মাহাবুব করিম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গ্রেপ্তার ৫ জনকে ৫ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন জানিয়ে আজ বিকেলে ফরিদপুরের এক নম্বর আমলি আদালতে সোপর্দ করা হয়। আদালত রিমান্ড শুনানির তারিখ পরে নির্ধারণ করার সিদ্ধান্ত জানিয়ে তাদের জেলহাজতে পাঠানোর আদেশ দেন।'

Comments

The Daily Star  | English

Parties agree on chief justice appointment, limiting emergency powers

Manifesto provision allows top-two judge choice; cabinet to approve emergency declaration

36m ago