মাস্টার ও ভিসা কার্ড প্রতারণা চক্রের ৪ সদস্য গ্রেপ্তার

মাস্টার কার্ড ও ভিসা কার্ডধারীদের অ্যাকাউন্টের তথ্য নিয়ে অর্থ হাতিয়ে নেওয়া প্রতারণা চক্রের ৪ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) এর গোয়েন্দা গুলশান বিভাগ।
মাস্টার ও ভিসা কার্ড প্রতারণা চক্রের ৪ সদস্য গ্রেপ্তার
মাস্টার কার্ড ও ভিসা কার্ডধারীদের অ্যাকাউন্টের তথ্য নিয়ে অর্থ হাতিয়ে নেওয়া প্রতারণা চক্রের ৪ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) এর গোয়েন্দা গুলশান বিভাগ। ছবি: সংগৃহীত

মাস্টার কার্ড ও ভিসা কার্ডধারীদের অ্যাকাউন্টের তথ্য নিয়ে অর্থ হাতিয়ে নেওয়া প্রতারণা চক্রের ৪ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) এর গোয়েন্দা গুলশান বিভাগ।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- মো. সোহেল মীর, মো. নাজমুল হোসেন, পারুল ও মো. তারা মিয়া।

শুক্রবার ও শনিবার ঢাকা, ফরিদপুর ও সাভার এলাকায় ধারাবাহিক অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা বিভাগের গুলশান জোনাল টিম।

আজ শনিবার দুপুরে ডিএমপির ডিবি কম্পাউন্ডে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।

তিনি বলেন, 'বর্তমান ডিজিটাল প্রযুক্তির যুগে ভিসা ও মাস্টার কার্ড ব্যবহার করে পৃথিবীর যেকোনো দেশে ইলেকট্রনিক পেমেন্ট, কেনাকাটা, এটিএম বুথ থেকে টাকা উত্তোলন ও মোবাইল রিচার্জসহ বিভিন্ন কাজ করা যায়। এই কার্ড ব্যবহার করে বিকাশ অ্যাকাউন্টে টাকা লোডও করা যায়। আর এই সুযোগটিকে কাজে লাগিয়ে কার্ড ব্যবহারকারীদের অ্যাকাউন্ট হ্যাক করে অর্থ হাতিয়ে নিয়ে আসছিল একটি প্রতারক চক্র।'

তিনি আরও জানান, এই ধরনের কয়েকটি ঘটনায় গুলশান, বনানী এবং হাতিরঝিল থানায় একাধিক মামলা হয়েছে। গোয়েন্দা গুলশান বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মাহবুবুল হক সজীবের টিম মামলাগুলোর ছায়া তদন্ত শুরু করে। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে এ চক্রের সদস্যদের শনাক্ত করা হয়। পরবর্তিতে রাজধানী ঢাকা, ফরিদপুর ও সাভার এলাকায় অভিযান চালিয়ে সোহেল, নাজমুল, পারুল ও তারা মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃতদের প্রতারণার কৌশল সম্পর্কে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার বলেন, 'এ চক্রের এক সদস্য বিভিন্ন কার্ডধারীদের মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে গ্রেপ্তারকৃত নাজমুল ও সোহেলের কাছে পাঠায়। সোহেল ও নাজমুল স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক ও ব্র্যাক ব্যাংকসহ বিভিন্ন ব্যাংকের কার্ড ডিভিশনের কর্মকর্তা সেজে ভিসা এবং মাস্টার কার্ড ব্যবহারকারীদের নাম্বারে ফোন দিয়ে তথ্য হালনাগাদ, কার্ডের পাসওয়ার্ড চার ডিজিটের পরিবর্তে ছয় ডিজিট ও ইমেইল আপডেট না করার কারণে কার্ডের কার্যক্রম বন্ধ হয়েছে মর্মে জানায়। অনেক কার্ডধারীর অ্যাকাউন্টে বড় অংকের ব্যালেন্স থাকায় আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়ে প্রতারকদের কথা অনুযায়ী কাজ করতে থাকে।'

'এভাবে সংগৃহীত তথ্য থেকে ১৬ ডিজিটের নম্বর, কার্ডের মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখ, কার্ডের বিপরীত পাশে উল্লিখিত ৩ ডিজিটের সিকিউরিটি পিন নম্বর সংরক্ষণ করে। পরবর্তীতে গ্রাহকদের কাছে ওটিপি কোড পাঠায়। কৌশলে পাঠানো ওটিপি কোড সংগ্রহ করে বিকাশ অ্যাপে ঢুকে 'কার্ড টু বিকাশ অ্যাড মানি' অপশনের মাধ্যমে টাকা আত্মসাৎ করে নেয় তারা,' বলেন তিনি।

এর আগে বিকাশ অ্যাকাউন্ট হ্যাক করে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার ঘটনা ঘটলেও মাস্টার কার্ড অথবা ভিসা কার্ড ব্যবহারকারীদের সঙ্গে প্রতারণার বিষয়টি নতুন হওয়ায় অনেক ব্যবহারকারী প্রাথমিকভাবে সন্দেহ করেননি। অনেকেই কার্ড স্থায়ীভাবে সাসপেন্ড হয়ে যাওয়া ও কার্ডে জমা অর্থের ক্ষতির আশঙ্কায় প্রতারকদের বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যেই তথ্য দিয়ে দিয়েছেন বলে জানান তিনি।

মাস্টার কার্ড বা ভিসা কার্ড প্রতারণায় একাধিক ধাপে কয়েকটি তথ্যের প্রয়োজন হয়। যেমন- কার্ড নাম্বার, মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখ, নিরাপত্তা পিন নাম্বার, ওটিপি কোড ইত্যাদি। এ ধরনের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ও নিজের পাসওয়ার্ড ও ওটিপি কোড কখনোই কারো সঙ্গে এমনকি সেবা দানকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গেও শেয়ার না করার অনুরোধ জানান তিনি।

গ্রেপ্তারকৃতদের রিমান্ড আবেদনসহ আদালতে পাঠানো হয়েছে। এ চক্রের অন্যান্য সদস্যদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলেও পুলিশের এই কর্মকর্তা জানান।

Comments

The Daily Star  | English
USAID to provide $202 million in grant to Bangladesh

USAID to provide $202 million in grant to Bangladesh

The United States Agency for International Development (USAID) will provide $202.25 million in aid to Bangladesh as part of the Development Objective Grant Agreement

1h ago