জিএম কাদেরের বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ হাইকোর্টের
দলীয় মনোনয়ন বাণিজ্য করে অবৈধ অর্থ আদায়ের অভিযোগ তদন্ত করে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদেরের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে দুর্নীতি দমন কমিশনকে আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
তদন্তে গাফলতি হলে দুদকের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
বিচারপতি নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চের প্রকাশিত রায়ে এ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার আদেশ প্রকাশের বিষয়টি নিশ্চিত করে রিটকারীর আইনজীবী মোহাম্মাদ হেলাল উদ্দিন এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, 'জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মাদ (জিএম) কাদেরের বিরুদ্ধে নারী এমপি পদের মনোনয়ন বাণিজ্যের অভিযোগ তদন্তের আবেদন করা হয় দুদকে। দুদক এ বিষয়ে তদন্ত শুরু না করায় লিগ্যাল নোটিশ দিয়েছিলেন আবেদনকারী মো. ইদ্রিস আলী। তবে আইনি নোটিশ পাওয়ার পরেও কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মাদ কাদেরের বিরুদ্ধে সংসদ সদস্য পদের মনোনয়ন বাণিজ্যের অভিযোগ নিষ্পত্তি করার নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট করা হয়। রিটের শুনানি শেষে সেটি নিষ্পত্তি করে দেন বিচারপতি নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ। তারা এ বিষয়ে বেশ কিছু নির্দেশনাও দেন।'
'ইতোমধ্যে এ বিষয়ে হাইকোর্টের রায়ও প্রকাশিত হয়েছে। প্রকাশিত ৬ পৃষ্ঠার রায়ে বলা হয়, রিট আবেদনটির শুনানি শেষে আদালত রুল জারি করার প্রয়োজনীয়তা দেখছেন না। বিবাদীদের বিরুদ্ধে যথাযথ আদালতে যাওয়ার নির্দেশনা দিয়ে আবেদনটি নিষ্পত্তি করা হলো,' বলেন তিনি।
আইনজীবী হেলাল উদ্দিন আরও জানান, রায়ে দুদককে জিএম কাদের এর বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। অবহেলা করলে দুদকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও বলা হয়েছে। শুধু তাই নয়, পরবর্তীতে বাদী যদি মনে করেন ন্যায়বিচার পাননি তাহলে তিনি আদালতের দ্বারস্থ হতে পারবেন।
গত ১৮ সেপ্টেম্বর জাপার চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের বিরুদ্ধে দলীয় মনোনয়ন বাণিজ্য করে অবৈধ অর্থ আদায়ের অভিযোগ এনে তা তদন্ত করার জন্য দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) আবেদন করেন জাপার কেন্দ্রীয় কমিটির দপ্তর সম্পাদক মো. ইদ্রিস আলী।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরে জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত নারী আসনে জাতীয় পার্টির ৪ (চার) জন নারী সংসদ সদস্যের মনোনয়ন কার্যক্রমে ১৮ কোটি ১০ লাখ টাকা উৎকোচ নেন জি এম কাদের। বিনিময়ে ওই ৪ নারীকে জাতীয় সংসদ সদস্য হিসেবে মনোনয়ন দেওয়া হয়। মসিউর রহমান রাঙ্গার মাধ্যমে মনোনীত নারী সংসদ সদস্যদের সঙ্গে জাতীয় সংসদের আসনে মনোনীত করার অঙ্গীকার ও অর্থ প্রদানের শর্তে চুক্তিপত্র সম্পাদন হয়। এ বিষয়ে একজন নারী সংসদ সদস্যের চুক্তি হয়, যা এরইমধ্যে গণমাধ্যমে ফাঁস হয়েছে। ৩ জন সদস্য থেকে কমপক্ষে প্রতিজনে ৫ কোটি করে মোট ১৫ কোটি টাকা এবং প্রয়াত অধ্যাপক মাসুদা এম রশীদ চৌধুরীর কাছ থেকে ৩ কোটি ১০ লাখ টাকা দুর্নীতির মাধ্যমে জি এম কাদের গ্রহণ করেছেন, যা তদন্ত করলে বেরিয়ে আসবে।
অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, দলীয় পদ-পদবি ব্যবহার ও প্রভাব খাঁটিয়ে দলের কো-চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের মুত্যুর পর মসিউর রহমান রাঙ্গাকে ব্যবহার করে জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে সৃষ্ট একটি নামসর্বস্ব প্যাডে এরশাদ সাহেবের দস্তখত তৈরি করেন।
Comments