পুলিশের চোখে ‘পলাতক’ আসামি ইউএনওর সঙ্গে অভিযানে

একটি অপহরণ মামলার প্রধান আসামি ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ পৌরসভার ২ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রুবেল পুলিশের চোখে পলাতক। অথচ প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন তিনি। শুধু তা-ই নয়, প্রশাসনের বিভিন্ন অনুষ্ঠানেও তার সরব উপস্থিতি দেখা যায়।
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে অনিয়মতান্ত্রিক পার্কিং, যানজট ও ফুটপাত দখলের বিরুদ্ধে ইউএনওর সঙ্গে (সবুজ জামা) অভিযানে কাউন্সিলর ও অপহরণ মামলার আসামি রুবেল মিয়া (পাঞ্জাবি পরিহিত)। ছবি: সংগৃহীত

একটি অপহরণ মামলার প্রধান আসামি ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ পৌরসভার ২ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রুবেল পুলিশের চোখে পলাতক। অথচ প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন তিনি। শুধু তা-ই নয়, প্রশাসনের বিভিন্ন অনুষ্ঠানেও তার সরব উপস্থিতি দেখা যায়।

এমনকি কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাদিয়া জেরিনের সঙ্গে এক অভিযানে আসামি রুবেলকে দেখা গেছে। এমন একটি ছবি গতকাল মঙ্গলবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে গেলে বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক ও সমালোচনা তৈরি হয়েছে।

সূত্র জানায়, গত ২৪ অক্টোবর কালীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অমিত সাহা বিষুকে অপহরণ ও মারপিটের ঘটনায় তার মা ইতি শিকদার কালীগঞ্জ থানায় ৪ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন। মামলায় কাউন্সিলর রুবেলকে প্রধান আসামি করা হয়।

আজ বুধবার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কালীগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক ভবতোষ রায় দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, এ মামলার ৩ আসামি আদালত থেকে ইতোমধ্যে জামিন নিলেও, প্রধান আসামি কাউন্সিলর রুবেল জামিন নেননি। 

তিনি বলেন, 'ঘটনার সঙ্গে আসামি রুবেলের সম্পৃক্ততা নিয়ে কিছুটা সন্দেহ আছে। প্রকৃত ঘটনা জানতে পুলিশ সেদিনকার কল রেকর্ড তলব করেছে। তবে আমার সামনে কখনো রুবেল পড়েননি।'

'তিনি পুলিশের চোখে পলাতক,' যোগ করেন তিনি।

এদিকে মঙ্গলবার বিকেলে কালীগঞ্জের ইউএনওর ফেসবুক পেজে ইউএনও সাদিয়া জেরিনের অনিয়মতান্ত্রিক পার্কিং, যানজট ও ফুটপাত দখলে সচেতনতামূলক অভিযানে অংশ নিতে দেখা যায় আসামি রুবেলকে।

এ বিষয়ে ইউএনও সাদিয়া জেরিনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমরা যখন সরকারি কাজে যাই, তখন আমাদের সঙ্গে কে থাকে না থাকে অতটা খেয়াল করতে পারি না। হয়ত অভিযানের সময় তিনি আমাদের কাছে আসতে পারেন। আমি সঠিকভাবে বলতে পারব না।'

যোগাযোগ করা হলে কাউন্সিলর রুবেল মিয়া দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমার নামে যে থানায় মামলা হয়েছে, সেটিই আমি জানি না। আর যদি কেউ মামলা করেও থাকেন তবে সেটি মিথ্যা ও উদ্দেশ্যমূলক।'

এ বিষয়ে মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী আব্দুল মালেক মিনা ডেইলি স্টারকে বলেন, 'অপহরণ ও মারপিট মামলার পলাতক আসামির ইউএনও বা পুলিশের সঙ্গে ঘুরে বেড়ানো অপরাধ ও গর্হিত কাজ। আসামিকে হয় জামিন নিতে হবে, না হলে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করবে।'

তিনি বলেন, 'কালীগঞ্জের সাবেক ছাত্রলীগ সভাপতি অমিত সাহাকে অপহরণের পর মারপিট করা মামলার আসামি কীভাবে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ায় তা বোধগম্য নয়।'

Comments