কাপাসিয়ায় ২ মাসে ৭০ গরু চুরি, পাহারা বসিয়েও ঠেকানো যাচ্ছে না

গাজীপুরের কাপাসিয়ায় গরু চুরি থামছে না। নভেম্বর মাসের শুরু থেকে এই উপজেলায় গরু চুরির ঘটনা বেড়ে গেছে। গরু চুরি ঠোকাতে অনেক এলাকায় স্থানীয়দের উদ্যোগে রাত জেগে পাহারা দেওয়া হচ্ছে। তারপরও প্রায় প্রতি রাতে কোনো না কোনো এলাকায় গরু চুরি হচ্ছে।
অক্টোবর ও নভেম্বর মাসে কাপাসিয়ার রাওনাট, দুর্গাপুর, নাশেরা, ফুলবাড়িয়া, বেগুনহাটি, নলগাঁও, চাঁদপুর, বর্জনা, কোটবাজালিয়া, ভাকোয়াদিসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রায় প্রতি রাতেই গরু চুরি হয়েছে। স্থানীয়দের হিসান অনুযায়ী, উপজেলায় ২ মাসে অন্তত ৭০টি গরু চুরি হয়েছে।
গতকাল রাতে কাপাসিয়ায়র বড় পুশিয়া গ্রামের আব্দুর রব মোড়লের গোয়াল থেকে ২টি গরু চুরি হয়। তিনি জানান, মাস ছয়েক আগে ১ লাখ ১৫ হাজার টাকায় গরু দুটি কিনেছিলেন। এখন বিক্রি করলে দেড় লাখ টাকার ওপরে দাম পাওয়া যেত। চুরির ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় গরু বিক্রি করে দেওয়ার কথাও ভেবেছিলেন। পরে সিদ্ধান্ত নেন ঈদের সময় বিক্রি করবেন। এরই মধ্যেই তার গোয়াল ঘরের তালা কেটে গরু চুরি হলো।
উপজেলার তরগাঁও ইউনিয়নের বাঘিয়া চিনাডুলি গ্রামে গত ১৪ নভেম্বর রাতে ৫ কৃষকের ১২টি গরু চুরি হয়। ওই গ্রামের মো. ইলিয়াসের ৩টি, মো. মিলন মিয়ার ৩টি, মো. চাঁনমিয়ার ৩টি, মো. শাহজাহানের ১টি ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল হোসেন শেখের ২টি গরু চুরি হয়।
১৩ নভেম্বর রাতে উপজেলার সদর ইউনিয়নের পাবুর এলাকার ওবায়দুল কবির খানের ৪টি, খান বাড়ি এলাকার মৃত আবদুল বাতেন খানের ছেলে আবুল কাশেম খানের ৩টি ও পারভেজ খানের ১টিসহ মোট ৮টি গরু চুরি হয়। এ ব্যাপারে কাপাসিয়া থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে।
অন্যদিকে, গত ১০ নভেম্বর রাতে হাইলজোর গ্রামের কলেজ মোড়ের দোকানি মো. জিয়াউদ্দিনের ৩টি, রায়েদ মধ্যপাড়ার আমীর আলীর ২টি, সিদ্দিকুর রহমানের ১টি, কোরবান আলীর ১টি, আবদুস সাহিদের ১টি, হারিছ মিয়ার ১টি ও আবদুল হাইয়ের ১টিসহ মোট ৮টি গরু ও সজিব মিয়ার ৩টি ছাগল চুরি হয়েছে।
২৮ অক্টোবর রাতে রায়েদ ইউনিয়নের দরদরিয়া গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল হাসেমের ৫টি গরু চুরি হয়। পরদিন তিনি কাপাসিয়া থানায় অভিযোগ করেন।
কাপাসিয়া থানার ওসি এএফএম নাসিম জানান, গরু চুরি ঠেকাতে উপজেলায় প্রবেশের ফিডার রোডগুলো রাতের বেলা বন্ধ করে দেওয়া হয়। এলাকাবাসীর সহায়তায় অনেক এলাকায় রাতে পাহারা দেওয়া হচ্ছে। চুরি হলেও অনেকে মামলা করতে অনীহা প্রকাশ করেন। এর মধ্যে চুরি হওয়া ২টি গরু প্রাইভেটকারসহ উদ্ধার করা হয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে ওসি বলেন, পুলিশের সঙ্গে কখনো চোরের সন্ধি হতে পারে না।
Comments