ইয়াবা ‘হোম ডেলিভারি’র ফেরিওয়ালা
একটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশায় নানা সামগ্রী বোঝাই করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের বিভিন্ন এলাকায় ফেরি করেন আল-আমিন। সেমাই, নুডলস, আমের জুস, লবণ, সাবান, টুথপেস্টসহ প্রায় ২০ ধরনের পণ্য রিকশায় নিয়ে ঘোরেন তিনি। মোড়ক নামিদামি কোম্পানির হলেও এগুলো মূলত ভেজাল পণ্য। তবে এটা তার মূল ব্যবসা নয়। ভেজাল পণ্যের আড়ালে ইয়াবা হোম ডেলিভারির কাজ করেন তিনি।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের কাজীপাড়ার ঈদগাহ মাঠ এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। তার কাছ থেকে ২০০ ইয়াবা ট্যাবলেট ও অটোরিকশা জব্দ করা হয়।
সেই সঙ্গে আজ সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত মাদক বিরোধী টাস্কফোর্স এবং বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ যৌথ অভিযান চালিয়ে মাদক বিক্রি, সেবন ও ভেজাল পণ্য বিক্রির দায়ে আরও চার জনকে গ্রেপ্তার করে। তাদের কাছ থেকে ১ হাজার ২০০ ইয়াবা ট্যাবলেট জব্দ করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন আশুগঞ্জের তালশহর গ্রামের বাসিন্দা নাজমুল হক ভূঁইয়ার ছেলে রাশিদুল হক ভূঁইয়া হৃদয়, ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের কাজীপাড়া এলাকার প্রয়াত আব্দুল হাসিমের ছেলে মো. আবির মিয়া, একই এলাকার প্রয়াত আব্দুল হামিদ মিয়ার ছেলে আল-আমিন, চাঁন মিয়ার ছেলে মানিক মিয়া ও শিমরাইলকান্দি এলাকার আলী আকবর মিয়ার ছেলে হাফিজুর রহমান ফয়সাল। এর মধ্যে মানিক ও ফয়সালকে ইয়াবা ট্যাবলেট ও গাঁজা সেবনের দায়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। ইয়াবা বিক্রির সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করা হবে।
জেলা নিরাপদ খাদ্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ ফারহান ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ভেজাল খাবার উৎপাদন, সরবরাহ, বিক্রয় ও মজুদের দায়ে আল-আমিনকে আটক করা হয়। তার কাছ থেকে একটি অটোরিকশা বোঝাই বিভিন্ন ধরনের ভেজাল খাদ্য সামগ্রী জব্দ করা হয়। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা তার কাছ থেকে ইয়াবা জব্দ করেছেন।
জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মিজানুর রহমান বলেন, অটোরিকশার মালিক আল-আমিন ছাড়াও আরও দুজনের কাছ থেকে ইয়াবা জব্দ করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করা হবে। এছাড়া অন্য দুজনকে মাদক সেবনের দায়ে আটক করার কারণে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাৎক্ষণিক জেল-জরিমানা করেন।
জিজ্ঞাসাবাদে আল-আমিন জানায়, এলাকার চিহ্নিত মাদক বিক্রেতা পরান মিয়া তার কাছে ইয়াবা সরবরাহ করতেন। ফোনে পাওয়া ফরমায়েশ অনুযায়ী তিনি সরাসরি গ্রাহকদের কাছে ইয়াবা ট্যাবলেট পৌঁছে দেন।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা জানান, মামলায় পরান মিয়াকেও আসামি করা হবে।
Comments