আত্মসমর্পণের পর মাহির স্বামী রাকিবের জামিন
সৌদি আরব থেকে ওমরা পালন করে দেশে ফেরার একদিন পর আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন পেয়েছেন চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহির স্বামী রাকিব সরকার।
আজ সোমবার দুপুরে গাজীপুর মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৪ এর বিচারক নিয়াজ মাখদুম দুটি মামলাতেই তার জামিন মঞ্জুর করেন।
রাকিব সরকারের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আনোয়ার সাদাত সরকার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে রাকিব সরকার মামলার খবর জানার পরও দেশে ফিরে আসেন। পরে আজ বেলা দেড়টার দিকে তিনি গাজীপুর মহানগর ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক নিয়াজ মাখদুমের আদালতে আত্মসমর্পণ করে তার বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া দুটি মামলাতেই জামিন আবেদন করেন। আদালতের বিচারক শুনানি শেষে ২০০০ টাকার বন্ডে তার জামিন মঞ্জুর করেন।'
মামলায় পুলিশ প্রতিবেদন দেওয়ার আগ পর্যন্ত এই জামিন বহাল থাকবে বলেও জানান তিনি।
আইনজীবী বলেন, 'চাঁদাবাজি ও মারামারির ঘটনার সময় রাকিব সরকার ও মাহিয়া মাহি দেশের বাইরে ছিলেন। আলোচিত সম্পত্তি নিয়ে সিভিল ডিসপিউট আছে। এই সিভিল ডিসপিউটকে কেন্দ্র করে মামলার উৎপত্তি হয়েছে। যে জমি নিয়ে ঘটনা সেই জমিতে আদালতের স্থিতাবস্থা রয়েছে। এসব কারণে আদালত প্রথম মামলায় তার জামিন মঞ্জুর করেন।'
পুলিশের দায়ের করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় জামিন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'তাদের জমি দখলের ঘটনাকে কেন্দ্র করেই এই মামলার সূত্রপাত। রাকিব সরকার বিদেশে থাকার কারণে উপায়ান্তর না দেখে ফেসবুক লাইভে আসেন। তার লাইভ দেখে রাকিব সরকারের স্বজনরা ঘটনাস্থলে গিয়ে তার সম্পত্তি রক্ষা করেন।'
আইনজীবী আরও বলেন, 'কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে হেয় করার জন্য রাকিব সরকার ফেসবুকে লাইভ করেননি। তিনি ফেসবুকে লাইভ করেছিলেন মূলত তার সম্পত্তি রক্ষা করার জন্য।'
জামিন শুনানির সময় রাকিব সরকারের পক্ষে আরও উপস্থিত ছিলেন, গাজীপুর আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট আহসান উদ্দিন প্রধান এবং সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান সরকারসহ অন্যান্য সিনিয়র আইনজীবীবৃন্দ।
গত শুক্রবার ভোরে গাজীপুর মহানগরীর চান্দনা এলাকায় রাকিব সরকারের মালিকানাধীন একটি শোরুমে হামলার ঘটনায় ফেসবুকে লাইভ করেন চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি। এতে তিনি শোরুমে হামলার পাশাপাশি মহানগর পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। এ ঘটনায় বিকেলে সাংবাদিক সম্মেলনে স্থানীয় ইসমাইল হোসেন রাকিব সরকারের বিরুদ্ধে তার জমি দখলের অভিযোগ করেন। পরে রাতে গাজীপুর মহানগর পুলিশের বাসন থানায় মাহিয়া মাহি ও রকিব সরকারের বিরুদ্ধে দুটি মামলা রেকর্ড করা হয়। এরমধ্যে কোটি টাকার জমি দখল ও জমিতে কাজ করতে গেলে বাধা প্রদান ও মারধরের অভিযোগে একটি মামলা দায়ের করেছেন স্থানীয় ইসমাইল হোসেন। এ মামলায় মাহি ও তার স্বামী রকিব সরকারসহ ২৮ জনকে আসামি করা হয়। এ ছাড়া, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মিথ্যা ও বানোয়াট প্রচারণা চালিয়ে পুলিশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার অভিযোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে আরেকটি মামলা করে পুলিশ। বাসন থানার উপপুলিশ পরিদর্শক (এসআই) রোকন মিয়া বাদী হয়ে এ মামলা করেন।
সৌদি আরব থেকে দেশে ফিরলে শনিবার পৌনে ১২টার দিকে পুলিশ মাহিয়া মাহিকে বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারের ২ ঘণ্টার মাথায় তাকে আদালতে তোলা হয়। প্রথমবার শুনানি শেষে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। কারাগারে পাঠানোর পর ৫ ঘণ্টার নাটকীয়তা শেষে শনিবার সন্ধ্যায় একই আদালত মাহির জামিন মঞ্জুর করেন। পরে সন্ধ্যা ৭টা ৪৫ মিনিটের দিকে মাহি গাজীপুর জেলা কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পান।
Comments