আমি আল্লাহ পাকের কাছে বিচার দিলাম: কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ ইসমাইল
উচ্চ আদালতে শুনানি শেষে কক্সবাজারের জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল বলেছেন, 'আমি আল্লাহ পাকের কাছে বিচার দিলাম।'
আজ বৃহস্পতিবার আদালত প্রাঙ্গণে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
আপনি কিছু বলবেন—গণমাধ্যমকর্মীরা প্রশ্ন করলে কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে মোহাম্মদ ইসমাইল বলেন, 'আল্লাহ সবাইকে হেদায়েত দান করুক। আমি আল্লাহ পাকের কাছে বিচার দিলাম।'
কার বিরুদ্ধে বিচার দিলেন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, 'আল্লাহ পাক করবে, যা করার।'
কার বিচার করবে—আবারও প্রশ্ন করা হলে ইসমাইল বলেন, 'আল্লাহ পাক ভালো বুঝবেন।'
এর আগে ফৌজদারি রিভিশন পিটিশনের শুনানির সময় উচ্চ আদলত বলেন, ফৌজদারি মামলার ৯ আসামিকে জামিন দেওয়ার বিষয়ে কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল আদেশে যে পরিবর্তন এনেছেন সেটি কেবল ভুল নয়, অপরাধও।
বিচারপতি মো. হাবিবুল গণি ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের হাইকোর্ট বেঞ্চ ইসমাইলকে বলেন, 'আপনি নিজের আদেশ বাতিল করেছেন। এক অন্যায়কে ঢাকতে আপনি আরেকটি অন্যায় করেছেন এবং আপনি তা করতে দ্বিধা করেননি।'
এর আগে বিচারপতি মোহাম্মদ ইসমাইল হাইকোর্ট বেঞ্চে হাজির হন এবং তার কাজের জন্য আদালতে নিঃশর্ত ক্ষমা চান।
ইসমাইলের আইনজীবী মোহাম্মদ সাঈদ আহমেদ রাজা তার মক্কেলের পক্ষে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেন এবং তার মক্কেলকে কার্যধারা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার জন্য হাইকোর্টের কাছে আবেদন করেন।
হাইকোর্ট বেঞ্চ বলেছে যে কোনো বিচারকের আদেশে কোনো পরিবর্তন আনার জন্য মামলার উভয়পক্ষের আইনজীবীদের ডাকতে হবে। কিন্তু তিনি (বিচারক ইসমাইল) হাইকোর্টে হাজির হওয়ার আগেই তার আদেশ বাতিল করেছেন।
ইসমাইল আদালতকে বলেন, জামিন আদেশে দুটি শব্দ ব্যবহার করে তিনি ভুল করেছেন।
'আমি দুঃখিত। আমি আপনার কাছে ক্ষমাপ্রার্থী,' তিনি হাইকোর্ট বেঞ্চকে বলেন।
বেঞ্চ বলেন, 'আপনার মনে অনুতাপ দেখি না। আপনি বাধ্য হয়ে বলছেন। অন্তর থেকে আসেনি। অন্তর থেকে আসতে হবে।'
আবেদনের পরবর্তী শুনানির জন্য ২৭ জুলাই দিন ধার্য্য করেন আদালত।
কক্সবাজারের দক্ষিণ মিঠাছড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান খোদেস্তা বেগম রিনা গত মাসে বিচারক ইসমাইলের আদালতের দেওয়া জামিন আদেশকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে পুনর্বিবেচনার আবেদন করেন।
খোদেস্তার পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ বি এম আলতাফ হোসেন আবেদনের শুনানিকালে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত তালুকদার।
Comments