শাহবাগে তাণ্ডব

ডিএমপির ২ মামলায় আসামি মাসুদ সাঈদীসহ ২০ জন, অজ্ঞাত ৫ হাজার

সোমবার রাতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) মারা যান সাঈদী। পরে রাতেই শাহবাগ মোড়ে পুলিশের সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে জামায়াত ও শিবিরের সমর্থকরা।
সাঈদীর মরদেহকে কেন্দ্র করে জামায়াত-শিবির তাণ্ডব চালিয়েছে: ডিএমপি কমিশনার
ছবি: সংগৃহীত

মানবতাবিরোধী অপরাধে আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মরদেহকে কেন্দ্র রাজধানী ঢাকায় তাণ্ডবের অভিযোগে জামায়াত-শিবিরের বিরুদ্ধে ২টি মামলা করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)।

গতকাল মঙ্গলবার শাহবাগ ও পল্টন থানায় এ দুটি মামলা করা হয়।

এসব মামলায় ২০ জনের নাম উল্লেখসহ জামায়াত-শিবিরের ৫ হাজার কর্মী-সমর্থককে আসামি করা হয়েছে। এর একটি মামলায় সাঈদীর ছেলে মাসুদ সাঈদীকেও আসামি করা হয়।

শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুর মোহাম্মদ দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, 'শাহবাগে পুলিশের কাজে বাধা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর হামলা ও যানবাহনে অগ্নিসংযোগের অভিযোগে করা মামলায় ৪ জন সন্দেহভাজন ও প্রায় ৫ হাজার অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।'

সন্দেহভাজন আসামিরা হলেন-দেলাওয়ার হোসেন সাঈদীর ছেলে মাসুদ সাঈদী, জামায়াত নেতা সাইফুল ইসলাম, সাবেক শিবির নেতা শফিকুল ইসলাম মাসুদ ও হামিদুর রহমান আজাদ।'

সোমবার রাতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) মারা যান সাঈদী। পরে রাতেই শাহবাগ মোড়ে পুলিশের সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে জামায়াত ও শিবিরের সমর্থকরা।

পুলিশ জানায়, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে তারা ৫১৯ রাউন্ড রাবার বুলেট, ১৪২ রাউন্ড পেলেট, ৩৪টি গ্যাস সেল, ৩৯টি কাইনেটিক প্রজেক্টাইল, ২৩টি ব্যাং গ্রেনেড ও ৩০টি সাউন্ড গ্রেনেড ব্যবহার করে।

এদিকে পল্টন থানায় করা মামলায় ১৬ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত আরও ১৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

এ ঘটনায় বায়তুল মোকাররম মসজিদ এলাকা থেকে ১৬ জনকে আটক করেছে পল্টন থানা পুলিশ।

দণ্ডপ্রাপ্ত যুদ্ধাপরাধী দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর জানাজাকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার ঢাকাসহ দেশের কয়েকটি স্থানে সংঘর্ষের ১ জন নিহত ও অন্তত ৭০ জন আহত হয়েছেন।

চট্টগ্রামে জামায়াত-শিবিরের বিরুদ্ধে ৩ মামলা, কারাগারে ৪০

এদিকে সাঈদীর গায়েবানা জানাজাকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার চট্টগ্রামে পুলিশের সঙ্গে জামায়াত-শিবিরের সংঘর্ষের ঘটনায় কোতোয়ালি থানা ও খুলশী থানায় ৩টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। 

এছাড়া, ওই সংঘর্ষের ঘটনায় আটক জামায়াত ও শিবিরের ৪০ নেতাকর্মীকে আজ বুধবার কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।

কোতোয়ালি থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে করা ২ মামলায় ৬৫ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত ২৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে। খুলশী থানায় করা মামলায় অজ্ঞাতনামা ১০০-১৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

নগর পুলিশের সহকারী কমিশনার (কোতোয়ালি) অতনু চক্রবর্তী দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'মঙ্গলবার ঘটনাস্থল থেকে গ্রেপ্তার জামায়াত-শিবিরের ৪০ জনকে কোতোয়ালী থানায় দায়ের করা ২ মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। এছাড়া আরও ২৫ জনের নাম এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।'

কক্সবাজারের চকরিয়া ও পেকুয়ায় ৫ মামলা

এ ছাড়া, সাঈদীর গায়েবানা জানাজাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ ও গোলাগুলির ঘটনায় কক্সবাজারের চকরিয়া ও পেকুয়া থানায় ৫টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। ওই ৫ মামলার এজাহারে ২২৬ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।  ৯ হাজার ৭০০  জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে। এর মধ্যে পুলিশ বাদি হয়ে ৪টি এবং চকরিয়ায় নিহত মোহাম্মদ ফোরকানের স্ত্রী বাদি হয়ে একটি মামলা করেছেন। পুলিশের ৪টি মামলা বিশেষ ক্ষমতা আইন ও সরকারি কাজে বাধা প্রদানের অভিযোগে। নিহতের স্ত্রীর মামলাটি হত্যা মামলা। বুধবার রাত ৮টায় এসব তথ্য জানান কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো. মাহাফুজুল ইসলাম।

 

Comments