ছিনতাই মামলায় আদালতে হাজিরা দিয়ে ১৫ লাখ টাকা ছিনতাই, গ্রেপ্তার ৩

‘ছিনতাই মামলায় গত ১৭ সেপ্টেম্বর আদালতে হাজিরা দিতে এসে আবারও তারা ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা করে।’
গ্রেপ্তারকৃত তিন ছিনতাইকারী। পাশে তাদের ব্যবহৃত সিএনজিচালিত অটোরিকশাটি। ছবি: সংগৃহীত

তিন জনই ছিনতাই মামলার আসামি। আদালতে হাজিরা দিতে গিয়ে ১৫ লাখ টাকা ছিনতাই করে আবারও ধরা পড়েছে পুলিশের হাতে।

চট্টগ্রাম নগরীর অলংকার মোড় এলাকা থেকে প্রায় ১৫ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় তিন জনকে গ্রেপ্তার করেছে নগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

ডিবির (বন্দর-পশ্চিম) উপকমিশনার মো. আলী হোসেন জানান, গতকাল শনিবার রাতভর ঢাকা ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয় বলে ।

গ্রেপ্তারকৃত তিন জন হলেন—নুরুল হক সজীব (৩৩), মো. মহিউদ্দিন (৪২) ও মো. রায়হান (২৮)।

চট্টগ্রাম নগরীর বিভিন্ন থানায় অস্ত্র ও ছিনতাইয়ের অভিযোগে সজীবের বিরুদ্ধে আটটি, রায়হানের বিরুদ্ধে চারটি ও মহিউদ্দিনের বিরুদ্ধে ভোলায় ছয়টি মামলা আছে বলেও জানান আলী হোসেন।

ডিবি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গ্রেপ্তার এই তিন জন ছিনতাইয়ের অন্য একটি মামলায় আদালতে হাজিরা দিতে যান। সেখানেই তারা আবারও ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা করেন এবং এক অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তার কাছ থেকে প্রায় ১৫ লাখ টাকা ছিনতাই করে পালিয়ে যান।

গত ১৮ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ রেলওয়ের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রুহুল আমিন তার স্ত্রীকে নিয়ে পেনশনের টাকা তুলতে নগরীর পাহাড়তলীতে ইসলামী ব্যাংকের একটি শাখায় যান। পেনশনের ১৪ লাখ ৬০ হাজার টাকা তুলে একটি ব্যাগে করে অন্য একটি ব্যাংকে জমা দিতে যাচ্ছিলেন। তারা হেঁটে যাওয়ার সময় একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশায় তিন ছিনতাইকারী এসে টান মেরে ব্যাগ নিয়ে চলে যান।

এ ঘটনায় পাহাড়তলী থানায় মামলা করেন রুহুল আমিন। তবে থানা পুলিশ তাদের ধরতে ব্যর্থ হয়।

আজ দুপুরে নগরীর মনসুরাবাদে ডিবি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে ডিসি আলী হোসেন বলেন, 'ঘটনাস্থল থেকে সংগ্রহ করা সিসি ক্যামেরার ফুটেজ এবং গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ছিনতাইয়ে জড়িত তিন জনকে এবং তাদের ব্যবহার করা সিএনজিচালিত অটোরিকশাটি আমরা শনাক্ত করি। এরপর মহিউদ্দিনের লোকেশন শনাক্ত করে প্রথমে তাকে ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার স্বীকারোক্তি মতে সজীব ও রায়হানকে গ্রেপ্তার করা হয়। ছিনতাইকৃত টাকার মধ্যে তাদের কাছ থেকে ১১ লাখ ৩০ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।'

ডিবি উত্তরের উপপরিদর্শক রাজিব হোসেন বলেন, 'সজীবের কাছ থেকে নয় লাখ, মহিউদ্দিন কাছ থেকে দুই লাখ ও রায়হান থেকে কাছ থেকে ৩০ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। রায়হানের বিয়ে আগামী ৫ অক্টোবর। ভাগে পাওয়া ছিনতাইয়ের টাকা দিয়ে তিনি বিয়ের কেনাকেটা করেছে বলে জানিয়েছেন।'

ডিসি আলী হোসেন বলেন, 'জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানিয়েছেন যে তাদের নেতা সজীব। ছিনতাইয়ের জন্য সিএনজিচালিত অটোরিকশাও সজীব যোগাড় করেছেন। এক বছর আগেও ছিনতাইয়ের অপরাধে তাদের গ্রেপ্তার করেছিল সিএমপির ডিবি। সেই মামলায় গত ১৭ সেপ্টেম্বর আদালতে হাজিরা দিতে এসে আবারও তারা ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা করে।'

Comments