তুর্কি সেনাবাহিনীতে নিয়োগের প্রলোভন দেখিয়ে অর্থ আত্মসাৎ, বাবা-ছেলে গ্রেপ্তার

গ্রেপ্তার কামরুল হাসান ও তার ছেলে ফাহাদ হাসান সিয়াম। ছবি: সংগৃহীত

তুরস্কের সেনাবাহিনীতে নিয়োগের প্রলোভন দেখিয়ে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে বাবা-ছেলেকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন-কামরুল হাসান (৬৫) ও তার ছেলে ফাহাদ হাসান সিয়াম (২৭)।

কামরুলের পাসপোর্টে স্থায়ী ঠিকানা শরীয়তপুর হলেও এনআইডিতে চাঁদপুর। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় চারটি মামলা আছে।

আজ রোববার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ডিবি প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ এসব তথ্য জানান।

তিনি বলেন, 'বাবা-ছেলে কখনো তুর্কি সেনাবাহিনীতে, কখনো মালয়েশিয়া, কানাডাসহ বিভিন্ন দেশে চাকরি দেওয়ার নাম করে অন্তত ১৫০০ জনের সঙ্গে প্রতারণা করে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে।'

প্রতারণার শিকার সহিদুল ইসলামের (৪২) মামলার পরিপ্রেক্ষিতে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সহিদুল ও তার কয়েকজন আত্মীয়সহ ২০ জনের কাছ থেকে বাবা-ছেলে ৩২ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।

মামলার পর শনিবার নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে ডিবির সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম (দক্ষিণ) বিভাগ।

এসময় তাদের কাছ থেকে ভুয়া প্রতিষ্ঠানের ভিজিটিং কার্ড, প্যাড, সিল, দুটি কম্পিউটার, ভুয়া নিয়োগপত্র ও ভিসা ও চারটি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়।

ডিবিপ্রধান হারুন বলেন, 'প্রতারকরা সহিদুলকে বলেছিল যে তুরস্কের সেনাবাহিনীতে অনেক লোক নিয়োগ দেওয়া হবে। নিয়োগ পেতে হলে সাত লাখ টাকা দিতে হবে। প্রাথমিকভাবে তিন লাখ টাকা দাবি করেন তিনি। কিন্তু কাউকে পাঠাতে পারেননি।'

তিনি আরও জানান, তাদের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার পর ডাক্তারি পরীক্ষার ব্যবস্থা করেন বাবা-ছেলে। পরে ২০ জনের জন্য ভুয়া চাকরির অফার লেটার তৈরি করে এবং যোগদানের জন্য বিভিন্ন তারিখ দিতে থাকে। 

পরে তারা তুরস্কে চাকরি বাদ দিয়ে মালয়েশিয়া, সার্বিয়াসহ বিভিন্ন দেশে পাঠানোর কথা বলে বিভিন্ন ব্যাংক অ্যাকাউন্টে সহিদুলের কাছ থেকে ৩২ লাখ ৩০ হাজার টাকা নেয় বলে জানান ডিবির এই কর্মকর্তা।

হারুন জানান, কামরুল একসময় একটি এজেন্সিতে চাকরি করতেন। পরে এজেন্সি মালিক মারা গেলে তিনি সেটির মালিকানা দাবি করেন। ওই এজেন্সির পাশাপাশি তিনি চার-পাঁচটি কোম্পানি খুলে বৈধ লাইসেন্সধারী হিসেবে পরিচয় দেন। কিন্তু, তার কোনো লাইসেন্সই ছিল না।

এসব কোম্পানির মাধ্যমে তিনি তুরস্ক, কানাডা, মালয়েশিয়া, সার্বিয়াসহ বিভিন্ন দেশে লোক পাঠানোর কথা বলে লোকজনের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নিতেন এবং টাকা নেওয়ার পর যোগাযোগ বন্ধ করে দিতেন।

ডিবি জানায়, কামরুল ১০ বছর মালয়েশিয়া ছিলেন। ১৯৯৮ সালে দেশে ফিরে তিনি ২০০১ সালে আল রিফাত ইন্টারন্যাশনাল নামের একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি নেন। ২০২২ সালে ওই প্রতিষ্ঠানের মালিকের মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি এই কোম্পানিতে এজেন্ট হিসেবে কাজ করেন। তার মৃত্যুর পর কামরুল কোম্পানির রিক্রুটিং লাইসেন্স ব্যবহার করা শুরু করেন।

Comments

The Daily Star  | English

Tribute to July uprising: Drone show lights up Dhaka's sky

In 12 vivid motifs, the July uprising came alive, tracing the heroism of Abu Sayed and the stirring role of women in the movement

13h ago