সাভারে সাবেক দুই এমপিসহ আ. লীগের ১১৯ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা

মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম ও তৌহিদ জং মুরাদ। ছবি: সংগৃহীত

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে পিটিয়ে ও গুলি করে হত্যার অভিযোগে ঢাকা-১৯ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম ও তৌহিদ জং মুরাদসহ আওয়ামী লীগের ১১৯ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা হয়েছে।

নিহত শিক্ষার্থী আস-সাবুরের চাচাতো ভাই সাহিদ হাসান মিঠু গতকাল শুক্রবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে আশুলিয়া থানায় মামলাটি করেন।

আস-সাবুর (১৬) নওগাঁ জেলার মহাদেবপুর থানার মহাদেবপুর গ্রামের নায়েদ জাকিরের ছেলে। সে আশুলিয়ার ইয়ারপুর ইউনিয়নের জামগড়ার শিমুলতলার এলাকায় পরিবারের সঙ্গে ভাড়া থেকে জামগড়া শাহীন স্কুলের দশম শ্রেণীতে লেখাপড়া করতো।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ৫ আগস্ট সকাল ১১টার দিকে আস-সাবুর নিজের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কেনাকাটা করার জন্য শিমুলতলা থেকে বাইপাইলে যায়। পরে দুপুর ২টার দিকে মামলার বাদী খবর পান যে তার ভাই আস-সাবুর মৃত অবস্থায় বাইপাইল মোড়ে পড়ে আছে।

খবর পেয়ে লোকজন নিয়ে বাইপাইল মোড়ে গিয়ে তিনি দেখেন তার ভাইয়ের ক্ষত-বিক্ষত নিথর মরদেহ পড়ে আছে। আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের সন্ত্রাসীরা তাকে পিটিয়ে ও গুলি করে হত্যা করা হয়েছে বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।

মামলার আসামিদের মধ্যে রয়েছেন—ঢাকা-১৯ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও আশুলিয়া থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম (৫৫), আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য তালুকদার মো. তৌহিদ জং মুরাদ, আশুলিয়া থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফারুক হাসান তুহিন (৫৪) ও তার বাবা সাভার পৌরসভার মেয়র আব্দুল গনি, পাথালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পারভেজ দেওয়ান (৬১), আশুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাহাবউদ্দিন মাদবর (৫৮), ইয়াপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সুমন আহমেদ ভূইয়া (৫০), সাভার উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আলী হায়দার (৭০) ও আশুলিয়া থানা যুবলীগের আহ্বায়ক কবির হোসেন সরকার (৫২)।

আরও আছেন গাজীরচট এলাকার সাহাদাত হোসেন খাঁন (৫৬), দক্ষিণ গাজীরচট এলাকার এ আর মন্টু (৬০), দেলোয়ার (৪৫), কাশেম ওরফে আংটি কাশেম (৫৫), ঢাকা জেলা পরিষদের সদস্য এনামুল হক মুন্সী (৪৭)  ও উত্তর গাজীরচট এলাকার মইনুল ভূইয়া (৪২), ভাদাইল এলাকার সাদেক ভূইয়া (৬০), ইসরাফিল (৪৫), দেলোয়ার মাস্টার (৫২), আনোয়ার হোসেন (৫৩), ভাদাইল দক্ষিণ পাড়া এলাকার শফি মাতবর (৪৫), জামগড়া এলাকার সানি ভূইয়া (৪৫), রুবেল ভূইয়া (৩৫), সুমন মীর (৩৫), জয়নাল আবেদিন (৩২), মোখলেছুর রহমান (৩৪), আশরাফ উদ্দিন (৩৫), জামগড়া উত্তরপাড়া এলাকার সফর শেখ (৪৭), চিত্রশাইল এলাকার মতিন প্রধান (৫০), নয়ন মুন্সি (৫৪), মাসুম খাঁ (৪২), শরিফ (৪৬), মতিন প্রধানের ছেলে খলিল প্রধান (৪৫), অলিল প্রধান (৪৮), মোশারফ প্রধান (৪৪), ওয়াসিম প্রধান (৫০), মহসিন প্রধান (৪১), পল্লীবিদ্যুতের ডেন্ডাবর এলাকার মহিদুল (৪৫), গাউস (৩৫), পান্নু (৩৭), পলাশবাড়ী কাঁঠালতলা এলাকার ইউসুফ আলী (৫৮),পলাশবাড়ী এলাকার খোরশেদ আলম (৪৩), বাঁশবাড়ী এলাকার শফিউদ্দিন মেম্বার (৬০), আনিসুল দেওয়ান (৪৫), ডগরতলী এলাকার সিরাজ দেওয়ান (৪৫), কাইচাবাড়ী এলাকার সানাউল্লাহ (৫৬), একই এলাকার হালিম মেম্বার (৬০), বাইপাইল এলাকার নুরু মিয়া (৪৫), বগাবাড়ি বাজার এলাকার সবেদ আলী (৪৫) ও আয়নাল সরকার (৬০), ইয়ারপুর এলাকার মুশাররফ হোসেন মুসা (৫১), হাসান কবির (৫৫), জমত আলী দেওয়ান (৬৫), লিয়াকত দেওয়ান (৬৭), মিজান সেক্রেটারী (৬৫), নাহিদ (৪০) ও মোহাম্মদ আলী (৫৫), জিরাবো এলাকার খোরশেদ আলম (৫৮), সাইফুল ইসলাম বেপারী হিকু (৫৭), সামছুল হক বেপারী (৭২), আবুল হোসেন (৬২), রাজু দেওয়ান (৪৫), লিয়াকত দেওয়ান (৬০), জিল্লুর রহামান দিলা (৬০), মজিবুর রহমান (৫৮), সৌরব (২৪), আশেক আলী (৬৫), মঞ্জু দেওয়ান (৫৮), জুয়েল (আমেনা ফ্যাশন) (৪৫), সাবু (৬০), মোহাম্মদ আলী মেম্বার (৫৮) ও ফরহাদ শেখ (৩৫); নরসিংহপুর এলাকার সুনিল নাগ (৬৫), আব্দুল কাদের দেওয়ান (৫৮) ও নরসিংহপুর এলাকার প্রবাস চন্দ্র (৬০), টঙ্গাবাড়ি এলাকার দুলাল তালুকদার (৫৬), সুহান মাদবর (২৮), আলমঙ্গীর মাতবর (৪৫), আশরাফ উদ্দিন মাতবর (৫৭), সাইদুল ইসলাম (৬০), তাইজুল তালুকদার (৫০), রিপন মাদবর (৪৫); ঘোষবাগ এলাকার মজিবুর রহমান ওরফে চুরা মজিবুর (৫২), আফজাল মেম্বার (৫৪), জাহাঙ্গীর বেপারী (৩৫), উজ্জল ভূইয়া (৩৫), নাজিম উদ্দিন (৫২) ও খোকা (৪০), গোরাট এলাকার আরিফ মাদবর (৪৫), ফরিদ মণ্ডল (৫২), গুমাইল এলাকার বকুল মেম্বার (৪৮), একই এলাকার হাসেম সরকার (৪০), ধনাইদ এলাকার মাহাবুব সরকার (৩২), তৈয়বপুর এলাকার ডা. জাহের আলী (৭০), নুরু মেম্বার (৫৯) ও ফারুক হোসেন (৩৫); নিশ্চিন্তপুর এলাকার সাত্তার মোল্লা (৪৬), আজম মোল্লা (৪৮) ও মালু মেম্বার (৬৫); দুর্গাপুর এলাকার আমজাদ সরকার (৫২), সাজাহান মণ্ডল (৪৮), মহিউদ্দিন সরকার (৫৮); পাড়াগাঁও এলাকার রুহুল মণ্ডল (৪৮), আহমেদ দেওয়ান (৪৮), আমির হোসেন গাজি (৫৪), মোহাম্মদ আলী (৩৫), জাহিদ মণ্ডল (৩০); কুটুরিয়া নিক্কন হাউজিং এলাকার রেজাউল করিম (৫৬), আড়াগাঁও এলাকার রাসেল মাতবর (৩৮), চারাবাগ এলাকার নজরুল (৪০) ও একই এলাকার হোসেন আলী মেম্বার (৫৮), শ্রীখন্ডিয়া এলাকার কুসুম মোল্লা (৪৩), গেরুয়া এলাকার রনি মিয়া মেম্বার (৩২), গেরুয়া এলাকার রবিন মিয়া (২৪), খালিলুর রহমান (৩৫), নজরুল ইসলাম (৫২), ওয়ালিয়া এলাকার তৌহিদ হোসেন (৪০)।

এই আসামিদের সবাই আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা ও কর্মী।

৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে পুলিশ, আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের দিনব্যাপী সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশসহ মোট ৪৪ জন নিহত হয়েছে।

Comments

The Daily Star  | English

JP central office vandalised, set ablaze

A group of unidentified people set fire to the central office of Jatiyo Party in Dhaka's Kakrail area this evening

1h ago