সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হকের বিরুদ্ধে মামলা

রোববার বিকেলে ফতুল্লা মডেল থানায় মামলাটি দায়ের করা হয়।
বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক। ছবি: সংগৃহীত

নারায়ণগঞ্জে সাবেক প্রধান বিচারপতি ও সদ্য পদত্যাগ করা আইন কমিশনের চেয়ারম্যান এবিএম খায়রুল হকের বিরুদ্ধে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের রায় পরিবর্তন ও জালিয়াতির অভিযোগে মামলা হয়েছে।

রোববার বিকেলে ফতুল্লা মডেল থানায় মামলাটি দায়ের করা হয় বলে জানান ওই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূরে আযম।

মামলার বাদী অ্যাডভোকেট আব্দুল বারী ভূঁইয়া নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ও ফতুল্লা থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক।

মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি থাকাকালীন সংবিধানের ত্রয়োদশ মামলার শুনানিকালে সুপ্রিম কোর্টের আটজন সিনিয়র আইনজীবীকে অ্যামিকাস কিউরি নিযুক্ত করা হয়। একজন আইনজীবী ছাড়া বাকি সবাই তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বহাল রাখার পক্ষে মতামত দেন। ত্রয়োদশ সংশোধনী মামলায় বিচারপতি মো. মোজাম্মেল হক, বিচারপতি এসকে সিনহা ও বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের পক্ষে রায় দেন। বিচারপতি আব্দুল ওয়াহাব মিঞা, বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা ও বিচারপতি ঈমান আলী তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বহাল রাখার পক্ষে রায় দেন। এই বিষয়টি সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক আগেই বুঝতে পেরে সরকারের কর্তা-ব্যক্তিদের সঙ্গে ষড়যন্ত্র করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিলের পক্ষে কাস্টিং ভোট দেন। ফলে চার-তিনে মেজরিটি হয়ে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতিদের সংখ্যাগরিষ্ঠতায় তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিলের রায় হয়।

'প্রকাশ্য আদালতে আসামি সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক পরবর্তী দুটি জাতীয় নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হতে পারে বলে উল্লেখ করেন। এই সংক্ষিপ্ত রায়ের ওপর ভিত্তি করে সরকার তড়িঘড়ি করে সংবিধান সংশোধন করে সংবিধান থেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করেন। ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল করে দেওয়া সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের রায় সর্বসম্মত ছিল না। রায় প্রদানের পরপরই খায়রুল হক অবসরে চলে যান। অবসরে যাওয়ার প্রায় ১৬ মাস পর রাষ্ট্রীয় কাঠামো ধ্বংস ও জাতির মেরুদণ্ড ভেঙে দেওয়ার ষড়যন্ত্রে ক্ষমতাসীন দলের কর্তাব্যক্তিদের পরামর্শ ও ইন্ধনে এক রায় লিখে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টে জমা দেন। এতে সাবেক প্রধান বিচারপতি তঞ্চকতা, জাল-জালিয়াতি, রাষ্ট্রদ্রোহ ও রাষ্ট্র ব্যবস্থা ধ্বংসের অভিপ্রায়ে "পরবর্তী দুটি নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হতে পারে" কথাটি বাদ দেন' উল্লেখ করা হয় এজাহারে।

প্রকাশ্য আদালতে দেওয়া রায়টি পরিবর্তন করে তিনি বিশ্বাস ভঙ্গ, তঞ্চকতা, জালিয়াতি, রাষ্ট্রদ্রোহ বা রাষ্ট্র ব্যবস্থা ধ্বংসের ফৌজদারি অপরাধ করেছেন বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।

Comments

The Daily Star  | English

US must intervene to stop Gaza carnage

Says ‘helpless’ UN chief as 16 more die in the Palestinian enclave

2h ago