হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা মামলা: মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ৯ আসামিসহ সবাই খালাস

৩০ বছর আগে ঈশ্বরদীতে তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা ও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বহনকারী ট্রেনে বোমা হামলার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত নয়জনসহ ৪৭ আসামির সবাইকে খালাস দিয়েছেন হাইকোর্ট।
আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মাকসুদ উল্লাহ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, আজ বুধবার বিচারপতি মুহাম্মদ মাহবুব উল ইসলাম ও বিচারপতি হামিদুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ মামলার রায় ও ডেথ রেফারেন্সের বিরুদ্ধে করা আপিলের শুনানি শেষে এ রায় দেন।
মাকসুদ উল্লাহ আরও বলেন, আসামিদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় হাইকোর্ট তাদের বেকসুর খালাস দিয়েছেন।
এ মামলায় যারা সাক্ষ্য দিয়েছেন তাদের কেউ প্রত্যক্ষদর্শী ছিলেন না মন্তব্য করে এই আইনজীবী আরও বলেন, সংশ্লিষ্ট ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে যারা জবানবন্দি দিয়েছেন, তারা সবাই ছিলেন আওয়ামী লীগের লোক।
১৯৯৪ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর খুলনা থেকে সৈয়দপুর যাওয়ার পথে শেখ হাসিনাকে বহনকারী ট্রেনটি পাকশী স্টেশনে পৌঁছালে সেটি হামলার কবলে পড়ে। চলন্ত ট্রেনে হাতবোমার পাশাপাশি গুলি ছোড়া হয়। ঈশ্বরদী স্টেশন পর্যন্ত হামলা চলতে থাকে। এতে তখনকার বিরোধীদলীয় নেতা অক্ষত থাকলেও অনেকে আহত হন।
এ ঘটনায় ঈশ্বরদী জেনারেল রেলওয়ে থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম বাদী হয়ে বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের পাঁচ সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
২০১৯ সালের ৩ জুলাই পাবনার বিশেষ জজ আদালত মামলার রায়ে নয় জনকে মৃত্যুদণ্ড ও ২৫ জনকে যাবজ্জীবন এবং ১৩ জনকে দশ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড দেন।
পরে বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে পৃথক আপিল করেন আসামিরা।
ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের শুনানিতে আসামিপক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার কায়সার কামাল আদালতকে বলেন, এ মামলার তদন্ত ছিল 'সন্দেহজনক ও কাল্পনিক'।
ব্যক্তিগত আক্রোশের বশবর্তী হয়ে আপিলকারীদের ওপর প্রতিশোধ নেওয়ার অসৎ উদ্দেশ্য থেকে তদন্তের কাজ শুরু করা হয়েছিল বলেও মন্তব্য করেন কায়সার কামাল।
নিম্ন আদালতের রায়ে এর প্রতিফলন ঘটেছে উল্লেখ করে কায়সার কামাল আদালতকে আরও বলেন, 'সম্ভবত কাউকে খুশি করার জন্যই নয় জনকে মৃত্যুদণ্ড, ২৫ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং ১৩ জনকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল।'
Comments