পুলিশের চার্জশিট

অভ্যুত্থানের পর সুব্রত বাইন দেশে ঢুকে আধিপত্য বিস্তারে অস্ত্র সংগ্রহ শুরু করেন

তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী 'সেভেন স্টার' গ্যাং নেতা সুব্রত বাইন ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর ভারত থেকে দেশে ঢুকে নিজের গ্রুপ বড় করতে থাকেন। রাজধানী ঢাকায় আধিপত্য বিস্তারের জন্য তিনি অস্ত্র সংগ্রহ শুরু করেন।

অস্ত্র মামলায় তার বিরুদ্ধে পুলিশের জমা দেওয়া চার্জশিটে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

ডিএমপির গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) পরিদর্শক ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মুহাম্মদ আমিনুল ইসলাম গত ১০ জুলাই ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ চার্জশিট দেন।

এতে বলা হয়, গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ভারতে পালিয়ে থাকা সন্ত্রাসী সুব্রত বাইন দেশে ফেরেন। 

রাজধানীতে আধিপত্য বিস্তারে আবার তিনি সন্ত্রাসী গ্রুপ গঠনের কাজ শুরু করেন এবং কুষ্টিয়ায় থেকে অস্ত্র-গুলি সংগ্রহ করতে থাকেন। কারণ, সীমান্তে এসবের দাম ঢাকার তুলনায় কম। 

চার্জশিটে আরও বলা হয়, অস্ত্র ও সদস্য সংগ্রহে সুব্রত বাইনকে সহায়তা করেন আরেক শীর্ষ সন্ত্রাসী আবু রাসেল মাসুদ ওরফে মোল্লা মাসুদ।

চার্জশিটে আরাফাত ইবনে নাসির ওরফে শুটার আরাফাত ও এম এ এস শরীফের নামেও অভিযোগ আনা হয়েছে।

ইন্টারপোলের 'মোস্ট ওয়ান্টেড' তালিকায় থাকা সন্ত্রাসী সুব্রত বাইনের বিরুদ্ধে হত্যা, চাঁদাবাজি ও অপহরণসহ অনেক অপরাধের অভিযোগ আছে। ২০০১ সালে বাংলাদেশের ২৩ জন মোস্ট ওয়ান্টেডের একজন ছিলেন তিনি। নেপালে ধরা পড়ার পর ২০১২ সালে সেদেশের একটি কারাগার থেকে সুড়ঙ্গ খুঁড়ে পালিয়ে যান এই সন্ত্রাসী।

কলকাতাসহ কয়েক জায়গায় একাধিকবার গ্রেপ্তার হলেও বারবার জামিনে মুক্তি পেয়ে পুনরায় অপরাধে জড়িয়েছেন সুব্রত।

গত ২৭ মে কুষ্টিয়ায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অভিযানে গ্রেপ্তার হন সুব্রত ও মাসুদ। তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে রাজধানীর হাতিরঝিল এলাকা থেকে তাদের সহযোগী আরাফাত ও শরীফকেও আটক করে পুলিশ। এরপর তাদের বিরুদ্ধে হাতিরঝিল থানায় অস্ত্র মামলা করা হয়।

মামলায় তাদের বিরুদ্ধে দেওয়া চার্জশিটে বলা হয়, সুব্রত বাইন ওরফে ফতেহ আলী দীর্ঘ ২৫ বছর ভারতে আত্মগোপনে ছিলেন। 

আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সামি উদ্ দৌলা চৌধুরী এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে বলেন, 'এই লোকেরা দেশের বিভিন্ন এলাকায় হত্যা, চাঁদাবাজি ও নাশকতায় জড়িত ছিলেন। দীর্ঘদিন নজরদারির পর কোনো রক্তপাত বা সংঘর্ষ ছাড়াই অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়।'

তিনি আরও জানান, সুব্রত বাইন ও মোল্লা মাসুদ দেশের শীর্ষ ২৩ মোস্ট ওয়ান্টেড অপরাধীর তালিকায় রয়েছেন এবং তারা কুখ্যাত 'সেভেন স্টার' গ্যাংয়ের মূল হোতা বলে ধারণা করা হয়।

গত ২৮ মে আদালতে সুব্রত বাইন নিজের কাছে আগ্নেয়াস্ত্র রাখার কথা স্বীকার করে বলেন, 'আমি বাঁচার জন্য অস্ত্র রাখি। যদি কেউ বলে যে আমার কাছে অস্ত্র নেই, তাহলে তা পুরোপুরি মিথ্যা।'

Comments

The Daily Star  | English

US retailers lean on suppliers to absorb tariffs

Rather than absorbing the cost or immediately passing it on to consumers, many US apparel retailers and brands have turned to their suppliers in Bangladesh, demanding they share the pain

4h ago