৩ জেলায় নৌকার কর্মী-সমর্থকদের ওপর হামলা-ভাঙচুরের অভিযোগ

জামালপুর, ঝিনাইদহ ও পটুয়াখালীতে এসব ঘটনা ঘটে।
ঝিনাইদহ
ঝিনাইদহে নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতা। ছবি: স্টার

জামালপুর, ঝিনাইদহ ও পটুয়াখালীতে নৌকার প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের ওপর হামলা ও তাদের বাড়িঘর ভাঙচুরের অভিযোগ পাওয়া গেছে স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের বিরুদ্ধে।

 

জামালপুর

জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে পরাজিত নৌকার প্রার্থীর সমর্থকদের প্রায় ১০টি বাড়িঘরে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ পাওয়া গেছে বিজয়ী ট্রাক প্রতীকের সমর্থকদের বিরুদ্ধে। 

নৌকার প্রার্থী মাহবুবুর রহমান হেলাল ও তার কর্মী-সমর্থকরা অভিযোগ করেন, হেলাল পরাজিত হওয়ার পর ট্রাক প্রতীকে বিজয়ী স্বতন্ত্র প্রার্থী তেঁজগাও থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যক্ষ আবদুর রশীদের লোকজন উপজেলার কয়েকটি স্থানে নৌকার সমর্থকদের বাড়িঘরে হামলা চালায়।

আজ সকালে মহাদান ইউনিয়নের বিলবালিয়া ও বনগ্রামে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি সাইফুল ইসলাম অক্ষর ও সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক শাহীনের বাড়িসহ অন্তত ৫টি বাড়িঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও দুটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে তারা।

এ ছাড়া, সাতপোয়া ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ কর্মী ও নৌকার প্রার্থীর সমর্থক রবিউল ইসলামের মালিকানাধীন আদ্রা আর এফ কিন্ডারগার্টেন ভাঙচুর করে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে  ট্রাক প্রতীকের লোকজন। একই এলাকায় হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়েছে অন্তত ৫টি বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে। এসব ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত ১০ জন।

এ বিষয়ে জানতে স্বতন্ত্র প্রার্থী অধ্যক্ষ আবদুর রশিদকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

সরিষাবাড়ী থানার ওসি মুশফিকুর রহমান বলেন, 'কয়েকটি জায়গায় বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটেছে। আমরা সেসব জায়গায় গিয়েছি ও একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।'

ঝিনাইদহ

ঝিনাইদহে নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় ৫০টির মতো বাড়িঘরে হামলা, লুটপাট ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। আজ সকালে সদর উপজেলার পোড়াহাটি ইউনিয়নের বারইখালী, হীরাডাঙ্গা ও সুরাপাড়া গ্রামে এসব ঘটনা ঘটে।

নির্বাচনে ঝিনাইদহ ২ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী নাসের শাহরিয়ার জাহেদী জয়ী হয়েছেন। ফল ঘোষণার পর সদরের ওই ৩টি গ্রামে উত্তেজনা দেখা দেয়।

নৌকার প্রার্থী তাহজীব আলম সিদ্দিকী ও নৌকার কর্মী-সমর্থকদের অভিযোগ, এরই জের ধরে আজ সকালে জাহেদীর সমর্থক পোড়াহাটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম হিরনের অনুসারীরা পরাজিত নৌকার প্রার্থী তাহজীব আলম সিদ্দিকীর সমর্থক ও জেলা যুবলীগের সদস্য ইব্রাহিম খলিল রাজার বাড়িসহ তার অনুসারীদের বাড়িতে হামলা চালায়।

এ সময় বারইখালী, হীরাডাঙ্গা ও সুরাপাড়া গ্রামের অন্তত ৫০টি বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়। হামলায় অন্তত ১০ জন আহত হন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

এ বিষয়ে জানতে স্বতন্ত্র প্রার্থী নাসের শাহরিয়ার জাহেদীকে ফোন দিলে তিনি রিসিভ করেননি।

ঝিনাইদহ সদর থানার ওসি শাহীন উদ্দিন বলেন, 'এলাকায় উত্তেজনা থাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।'

পটুয়াখালী

পটুয়াখালী ৪ আসনে পরাজিত স্বতন্ত্র প্রার্থী মাহবুবুর রহমানের সমর্থকরা বিজয়ী নৌকার প্রার্থী মহিব্বুর রহমানের ৭ কর্মীকে কুপিয়ে জখম করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

পটুয়াখালীর কলাপাড়ার টিয়াখালী হাটখোলা বাজার সংলগ্ন মুজিব কিল্লার পাশে আজ সকাল ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

আহতদের কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে গুরুতর আহত বশির চৌকিদারকে (৫০) উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, জয়ী নৌকার প্রার্থী মহিব্বুর রহমানের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়ের জন্য সকালে নৌকার কয়েকজন কর্মী-সমর্থক উপজেলা আওয়ামী লীগের অফিসের দিকে যাচ্ছিলেন। মুজিব কিল্লা এলাকায় পৌছলে টিয়াখালী ইউপি চেয়ারম্যান সুজন মোল্লার নেতৃত্বে স্বতন্ত্র প্রার্থী মাহবুবুর রহমানের সমর্থকরা তাদের ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করে। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

কলাপাড়া থানার ওসি আলী আহম্মদ বলেন, 'পরিস্থিতি এখন পুলিশের নিয়ন্ত্রণে। এখনও অভিযোগ পাইনি। পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'

Comments