গাইবান্ধার উপনির্বাচন: ‘লোম বাছতে গিয়ে কম্বল উজাড় করলে তো হবে না!’

কারচুপির অভিযোগে স্থগিত গাইবান্ধা-৫ আসনের উপনির্বাচনে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে জানিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, একটা জিনিস মনে রাখতে হবে, লোম বাছতে গিয়ে কম্বল উজাড় করলে তো হবে না! কম্বলটা তো থাকতে হবে, গায়ে দিতে হবে।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে আইন-শৃঙ্খলা বিষয়ক সভা শেষে গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
সিইসি বলেন, 'পোলিং এজেন্ট যদি কোনো অন্যায় আচরণ করে থাকে সেটা দেখার দায়িত্ব আমাদের প্রিসাইডিং অফিসারের। তারপরও আমরা পোলিং এজেন্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছি। একটা জিনিস মনে রাখতে হবে, লোম বাছতে গিয়ে কম্বল উজাড় করলে তো হবে না! কম্বলটা তো থাকতে হবে, গায়ে দিতে হবে। পোলিং এজেন্ট যেহেতু আমাদের দ্বারা নিযুন্ত নন, পার্টি দ্বারা নিযুক্ত, তাদের পর্যবেক্ষণ করা আমাদের জন্য কষ্টকর। আমরা বলেছি, যারা পোলিং এজেন্ট ছিলেন তাদের গাইবান্ধার আসন্ন নির্বাচনে পোলিং এজেন্ট হিসেবে নিয়োগ করা যাবে না। রিটার্নিং অফিসার তালিকা দেখবেন।'
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপিকে আনতে কমিশনের কোনো উদ্যোগ আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে সব দলের প্রতি আহ্বান জানিয়ে আসছি। নিঃসন্দেহে আমরা অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন প্রত্যাশা করি। সব দলের প্রতি আমাদের সমান আহ্বান আছে—আপনারা আসুন, নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুন। আমরা কাউকে বাধ্য করতে পারছি না, কারণ সেটা আমাদের ম্যানডেটের মধ্যে নেই। আমরা খুশি হবো, বিএনপিও যদি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে। নির্বাচনে যদি প্রতিদ্বন্দ্বিতা না থাকে তাহলে গণতান্ত্রিক চর্চা হবে না। ভোট নির্দেশ করে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে। অর্থবহ প্রতিদ্বন্দ্বিতা যদি না হয়, তাহলে গণতন্ত্রের বিকাশের প্রয়োজন আছে, উন্নত পর্যায়ে উঠতে পারে সেটা ব্যাহত হবে।
আমরা প্রত্যাশা করি, প্রতিটি দল নির্বাচনে এসে সক্রিয়ভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। আমি বলেছি, রাজনৈতিক দলগুলোকে নিজেদের মধ্যে সংলাপের ব্যবস্থা করতে হবে। সড়কে নয়, রাজপথে শক্তি প্রদর্শন যেটা; টেবিলে বসে আলোচনা করতে হবে। রাজপথে শক্তি প্রদর্শন আর কাস্টিং অব ব্যালট এক জিনিস না। আপনারা মানুষকে নির্বাচনমুখী করুন। রাজনীতিবিদদের আমরা বলেছি, আপনারা অনেক উচ্চস্তরের। আমরা নির্বাচন অনুষ্ঠান করে থাকি, এটা কিন্তু খুব বড় কাজ না। বাংলাদেশে এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ কাজ হয়ে গেছে। একজন ক্লার্ককে বসিয়ে দিলে সেও করতে পারতো—ওই ধরনের কাজ হওয়া উচিত ছিল। নির্বাচনে গণতান্ত্রিক ভারসাম্যের প্রয়োজন হয়, বলেন তিনি।
সব দলের প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার আরও বলেন, বিরোধ যতই থাকবে আপনাদের মধ্যে কিন্তু দিন শেষে আপনারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন। নির্বাচনকে গ্রহণযোগ্য-অর্থবহ করে তুলবেন।
সিটি নির্বাচন প্রসঙ্গে সিইসি বলেন, 'আমাদের বিশ্বাস কেউ প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করবেন না, কেউ কোনো বিঘ্ন ঘটনাবেন না। তারপরও আমরা সজাগ থাকবো।'
রংপুরের নির্বাচন সুষ্ঠু হবে প্রত্যাশা ব্যক্ত করে তিনি বলেন, আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিষয়টি আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা দেখবেন।
Comments