রাজশাহী সিটি নির্বাচন

কেন্দ্রে ভোটার আনাই যখন ‘চ্যালেঞ্জ’

রাজশাহী সিটি নির্বাচন
রাজশাহী নগরীর কাদিরগঞ্জ এলাকায় নির্বাচনী প্রচারণা। ছবি: আনোয়ার আলী/স্টার

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের বয়কটের মধ্যে আসন্ন রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনে এখন একটাই প্রশ্ন সব মহলে ঘুরছে, ভোটাররা কি নির্বাচনের দিন কেন্দ্রে আসবেন?

আগামী ২১ জুন নির্বাচনের দিন কেন্দ্রে ভোটারের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন কাউন্সিলর প্রার্থীদের প্রচেষ্টার ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভর করছেন।

কাউন্সিলর প্রার্থীরা দিন-রাত প্রচারণা চালিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি নিজেদের স্বার্থেই নির্বাচনের দিন ভোটারদের ভোট দিতে যাওয়ার জন্য উদ্বুদ্ধ করছেন।

নির্বাচন কমিশনও নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক হিসেবে উপস্থাপনের প্রচারণা অব্যাহত রেখেছে। তাদেরও ভরসা কাউন্সিলর প্রার্থীদের ওপর।

গত শুক্রবার রাজশাহীতে নির্বাচন কমিশনার রাশিদা সুলতানা বলেছেন, 'কিছু দল নির্বাচন বর্জন করলেও উল্লেখযোগ্য সংখ্যক কাউন্সিলর প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আমরা আশা করি, ভোটাররা ভোটকেন্দ্রে যাবেন।'

শহরের নানকিং দরবার হলে প্রিসাইডিং কর্মকর্তাদের দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন।

মেয়রপ্রার্থী লিটনও বাড়ি বাড়ি যাচ্ছেন। আসন্ন নির্বাচনে ভোটারদের কেন্দ্রে আসতে রাজি করানোর জন্য তিনি রাজশাহী আওয়ামী লীগের নবগঠিত কমিটিগুলোকে দায়িত্ব দিয়েছেন। নারী কর্মীদেরও প্রচারণার কাজে উদ্বুদ্ধ করছেন।

তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আশা করি, আগামী নির্বাচনে ৭০ শতাংশ ভোট পড়বে।'

সিটি নির্বাচনকে ঘিরে রাজশাহীতে প্রচারণা। ছবি: আনোয়ার আলী/স্টার

লিটন আরও বলেন, 'অতীতে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের ভোটাররা ভোট দিতে বেশি আগ্রহ দেখিয়েছিলেন। আমার প্রচারণা দল উচ্চবিত্ত ভোটারদের উপস্থিতি নিশ্চিত করার জন্য কাজ করেছে।'

নগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোহাম্মদ আলী কামাল ডেইলি স্টারকে জানান, আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনী প্রচারণা শুরুর আগে থেকেই আওয়ামী লীগ পেশাজীবী ও ব্যবসায়ী সংগঠন এবং উন্নয়ন সমিতির সঙ্গে ৮০টিরও বেশি সভা করেছে।

তিনি বলেন, 'ওই সভাগুলোয় আমরা অংশগ্রহণকারীদের ভোটকেন্দ্র যেতে উৎসাহিত করেছি।'

লিটনের নির্বাচনী প্রচার কমিটির আহ্বায়ক কামাল ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ভোটার উপস্থিতি বাড়াতে দলের নারী কর্মীরাও বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রচারণা চালাচ্ছেন।'

লিটনের প্রচারণা কমিটির অন্যতম সদস্য নুরুল ইসলাম সরকার আসলাম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বৈরী আবহাওয়ার কারণে কয়েকটি কেন্দ্রে ভোটার কম হতে পারে। কারণ, অনেক কেন্দ্রে যেতে ভোটারদের এক কিলোমিটারের বেশি পথ হাঁটতে হবে।'

'দুর্বল' প্রতিদ্বন্দ্বী

মেয়র পদে লিটন ছাড়াও জাতীয় পার্টির সাইফুল ইসলাম স্বপন ও জাকের পার্টির লতিফ আনোয়ার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

তবে, তাদের প্রচারণার দিকটি তুলনা করলে লিটনের আধিপত্য স্পষ্ট হয়।

লিটনের প্রচারণায় ৪০টির বেশি লাউডস্পিকার বা মাইক ব্যবহার করা হচ্ছে, যেখানে স্বপন ও আনোয়ার ব্যবহার করছেন মাত্র ৪টি। এ ছাড়া, লিটনের ৩০টির বেশি, স্বপনের ৬টি ও আনোয়ারের মাত্র একটি নির্বাচনী ক্যাম্প আছে।

লিটনের প্রচারণায় পোস্টার ও ব্যানারে নগরীর রাস্তাগুলো ছেয়ে গেছে। অন্য মেয়রপ্রার্থীদের প্রচারণায় খুব বেশি কিছু চোখে পড়েনি।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী মুর্শিদ আলমের প্রার্থিতা এখনো বৈধ থাকলেও বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দলীয় প্রধানের ওপর হামলার পর তিনি নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেন। এ কারণে নির্বাচনী আমেজ অনেকখানি কমে গেছে।

বিএনপি নির্বাচনে অংশ না নিলেও রাজশাহীতে কাউন্সিলর পদে বিএনপির ১৬ সদস্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এ ছাড়া, জামায়াতের ৯ প্রার্থী নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন।

আগামী ২১ জুন ১৫৫টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে, এর মধ্যে ৮০টি কেন্দ্রকে নির্বাচন কমিশন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী 'গুরুত্বপূর্ণ' হিসেবে চিহ্নিত করেছে।

Comments

The Daily Star  | English

BNP rally begins at Nayapaltan

The rally will conclude at Manik Mia Avenue, where the closing speech will be delivered by Tarique Rahman

37m ago