সাতক্ষীরায় নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় ১০ বাড়ি ভাঙচুর, ৬ মামলায় গ্রেপ্তার ১৩
সাতক্ষীরার আশাশুনিতে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় কমপক্ষে ১০টি ঘর-বাড়ি ভাঙচুর ও পাঁচজন আহত হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
আহতদের মধ্যে দুজনকে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সহিংসতায় জড়িত থাকার অভিযোগে ১৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গতকাল মঙ্গলবার রাত ও আজ বুধবার সকালে নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা এ বি এম মোস্তাকিম এবং পরাজিত প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা শাহ নেওয়াজ ডালিমের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে এসব সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
এসব ঘটনায় খাজরা ইউনিয়নে একটি অস্থায়ী ক্যাম্প বসিয়েছে পুলিশ। বর্তমানে পরিস্থিতি থমথমে রয়েছে।
পরাজিত প্রার্থী শাহ নেওয়াজ ডালিম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গতরাতে এ বি এম মোস্তাকিমের কর্মী খাজরা ইউনিয়নের পিরোজপুর গ্রামের মিলন পারভেজের নেতৃত্বে দেশীয় আগ্নেয়াস্ত্রে সজ্জিত হয়ে পিরোজপুর গ্রামের রিপন হোসেনের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে। পরে একই গ্রামের আনারুল ইসলাম ও সাইফুল ইসলামের বাড়ি তছনছ করা হয়। আজ সকালে হামলায় ভাঙচুর হয় বড়দল ইউনিয়নের গোয়ালডাঙ্গা গ্রামের আনোয়ারুল ইসলাম, কাদাকাটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান দীপঙ্কর সরকার, তেতুলিয়া গ্রামের সাইফুর রহমান ও লিটন সরদার, প্রতাপনগরের আব্দুস সামাদ, খড়িয়াটি গ্রামের মেহেদী হাসান, দুর্গাপুর গ্রামের রায়হান সরদার ও নাছিমাবাদ গ্রামের আব্দুল্লাহর বাড়ি। এ ছাড়া, প্রতিপক্ষের কর্মী-সমর্থকদের হাতুড়ি পেটায় গুরুতর আহত হয়েছেন খাজরা ইউনিয়নের চেউটিয়া গ্রামের আনিসুর রহমান ও তোয়ারডাঙ্গা গ্রামের ইমরান হোসেন। তাদের সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।'
নির্বাচিত প্রার্থী এ বি এম মোস্তাকিম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'কয়েকটি ছোটখাট ঘটনা ঘটেছে। তবে এটা নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতা নয়, এটি আসলে মানুষের দীর্ঘদিনের চাপা ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ। তারা নিজেরা কয়েকটি ঘর ভাংচুর করে আমার কর্মী-সমর্থকদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। নির্বাচনে আমাকে সমর্থন করায় গুনাকরকাটি গ্রামের মোশাররফ হোসেন, খাজরা ইউনিয়নের গদাইপুর গ্রামের আব্দুস সামাদ ও বড়দল ইউনিয়ন চেয়ারম্যান জগদীশ সানার বামনডাঙ্গা গ্রামের বাড়ি-ঘর ভাঙচুর করেছে পরাজিত প্রার্থীর সমর্থকরা।'
এ বিষয়ে আশাশুনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিশ্বজিৎ অধিকারী ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ভাঙচুর ও মারপিটের ঘটনায় ছয়টি মামলা হয়েছে। আশাশুনি উপজেলার নাছিমাবাদ গ্রামের আরাফাত হোসেন, খড়িয়াটি গ্রামের মো. সাত্তার গাজী ও মো. আকবর গাজী, পিরোজপুর গ্রামের মো. আব্দুর রহমান, মো. জাহাঙ্গীর গাজী, মো. আলমগীর গাজী, মো. মনিরুল গাজী ও মো. ইব্রাহিম গাজী, দুর্গাপুর গ্রামের ভবেন মণ্ডল, খুলনা জেলার পাইকপাছা উপজেলার মৌখালি গ্রামের মো. আবু হামজা, মো. সোহেল মোল্যা ও মো. আজগর গাজী এবং কয়রা উপজেলার নাকসা গ্রামের মো. আরিফুল ইসলামকে এসব মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে।'
সাতক্ষীরার পুলিশ সুপার মতিউর রহমান সিদ্দিকী ডেইলি স্টারকে বলেন, 'পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ জায়গায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েনের পাশাপাশি খাজরা ইউনিয়নে একটি অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প বসানো হয়েছে।'
Comments