গাজীপুরে বাস নেই, রিকশাভাড়া দ্বিগুণ 

জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় গাজীপুরে গণপরিবহন সংকট শুরু হয়েছে। সড়কে যাত্রীর তুলনায় বাস কম থাকায় অনেকে পায়ে হেঁটেই গন্তব্যের উদ্দেশে রওনা দিচ্ছেন।  
জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় গণপরিবহন সংকট। ছবি: সংগৃহীত

জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় গাজীপুরে গণপরিবহন সংকট শুরু হয়েছে। সড়কে যাত্রীর তুলনায় বাস কম থাকায় অনেকে পায়ে হেঁটেই গন্তব্যের উদ্দেশে রওনা দিচ্ছেন। 

ফাঁকা সড়কে দীর্ঘসময় অপেক্ষা করেও অনেকে বাস পাচ্ছেন না, হুড়োহুড়ি করে সিএনজি চালিত টেম্পুতে উঠছেন। অনেকে আবার দ্বিগুণ ভাড়া দিয়ে রিকশায় করে কর্মস্থলে যেতে হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন।

আজ শনিবার সকাল থেকেই ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের গাজীপুরের টঙ্গী, বোর্ডবাজার, চেরাগআলী, চান্দনা চৌরাস্তা, সালনা, রাজেন্দ্রপুর, ভবানীপুর, মাষ্টারবাড়ী, মাওনা চৌরাস্তা, নয়নপুর, এমসি বাজার ও জৈনা বাজার বাসস্ট্যান্ড এলাকা ঘুরে বাসের জন্য যাত্রীদের দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে দেখা গেছে। 

পোশাক কারখানার কর্মী আল-আমনি হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'রাত বা সকালেও যদি জানতাম পরিবহন বন্ধ তাহলে সময় হাতে নিয়ে বা অন্য ব্যবস্থা করে চলে যেতাম অফিসে। সকালে সড়কে এসে শুনি গাড়ি চলাচল বন্ধ। এটা তো কোনো নিয়মের পর্যায়ের পড়ে না। এই সুযোগে রিকশাওয়ালাও ডাবল ভাড়া আদায় করে নিচ্ছে।'

গাজীপুরের বৈরাগীরচালা এলাকার গার্মেন্টস কর্মী রুবায়েত হোসেন জানান, হঠাৎ জ্বালানির দাম বৃদ্ধির ঘোষণায় সিএনজি টেম্পো ও অটোরিকশাসহ জ্বালানি চালিত অন্যান্য ছোট ছোট যানবাহনের ভাড়াও বাড়িয়ে দেওয়ায় অফিসগামীদের চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে।

মহানগরের টঙ্গী এলাকার বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমি গাজীপুরের বাঘের বাজার এলাকার একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করি। বাস না থাকায় কারণে সকাল ৭ টায় বাসা থেকে বের হয়েও সময়মতো অফিসে পৌঁছাতে পারিনি।'

গাজীপুরের বাঘের বাজার এলাকার গার্মেন্টস কর্মকর্তা মো: পলাশ বলেন, 'আমি প্রতিদিন বোর্ড বাজার থেকে মোটরসাইকেলে অফিসে যাতায়াত করি। পেট্রোল ও অকটেনের দাম বেড়ে যাওয়ায় বাইকে অফিসে আসা সম্ভব নয়। যা বেতন পাই তা সারা মাসের আসা যাওয়ার তেল খরচ চলে যাবে। তাই আজকে বাইক ছাড়াই অফিসে আসছি।'

এদিকে, শুক্রবার মধ্য রাত ১২টার পর থেকে জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির ঘোষণার পর থেকেই অনেক পাম্প তেল বিক্রি বন্ধ করে দেয়। রাতে জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগ থেকে তেলের দাম বাড়ার ঘোষণার পরপরই পাম্পগুলোর কর্তৃপক্ষ তেল দেওয়া বন্ধ করে দেয়।

যেসব যানবাহান ও মোটরসাইকেল চালকেরা তেল কিনতে পাম্পে গেছেন তাদেরকে পাম্প ম্যনেজার 'তেল নেই' বলে ফিরিয়ে দিচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। অনেক পাম্প কর্মকর্মতাদের সাথে তেল নিতে আসা যানবাহন ও মোটরসাইকেল চালকদের তর্কে জড়াতে দেখা গেছে।

জানতে চাইলে শ্রীপুরের পলক সিএনজির এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমরা কি করব। জ্বালানির দাম বেড়ে গেলে আমরাও বাড়িয়ে বিক্রি করি।' 

আগে মজুদ করা জ্বালানি আজ থেকে বাড়ানো দামে কেন বিক্রি করা হচ্ছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'আমাদের জ্বালানি মজুদ থাকেনা। প্রতিদিন আমরা জ্বালানি নিয়ে আসি। যদি কোনো পাম্পে মজুদ থেকে থাকে তবে সেটি খুবই অল্প।'

এদিকে, রাস্তায় বাস না নামানোর প্রসঙ্গে ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ার আলম এশিয়া পরিবহনের চালক আব্দুল জব্বার বলেন, 'হঠাৎ করে ডিজেলের দাম যে পরিমাণ বেড়েছে, তাতে আগের ভাড়ায় যাত্রী পরিবহন করা আমাদের সম্ভব হবে না। তাই আপাতত যাত্রী পরিবহন বন্ধ রাখা হয়েছে।'

জানতে চাইলে গাজীপুর জেলা সড়ক পরিবহন কমচারী শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি সুলতান উদ্দিন বলেন, 'যেসব পরিবহনে জ্বালানি ছিল না তারা দাম বৃদ্ধির কারণে সড়কে গাড়ি নিয়ে বের হয়নি। আমরা পরিবহন চালক বা মালিকদের এ ব্যাপারে কোনো ধরনের নির্দেশনা দেইনি।'

 

Comments

The Daily Star  | English
IMF calls for smaller budget

IMF suggests raising power, gas and fertiliser prices

The International Monetary Fund yesterday recommended reducing government subsidies by hiking prices of power, gas and fertiliser, and spending the saved money on society safety net programmes.

15h ago