লোডশেডিং ও গ্যাস নিয়ে দুর্ভোগ বন্ধের দাবিতে সাভারে বিক্ষোভ

লোডশেডিং ও গ্যাস নিয়ে দুর্ভোগ বন্ধের দাবিতে সাভারে বিক্ষোভ
বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টায় সাভার রানা প্লাজার সামনে গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির উদ্যোগে এ বিক্ষোভ সমাবেশ হয়েছে। ছবি: সংগৃহীত

সারাদেশে লোডশেডিং দূর করা, শ্রমিক ও শিল্পস্বার্থে বিদ্যুৎ ও গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিতসহ অবিলম্বে মজুরি বোর্ড গঠন, মহার্ঘ্যভাতা ও রেশনিংয়ের দাবিতে সাভারে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতি।

আজ বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টায় সাভার রানা প্লাজার সামনে গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির উদ্যোগে এ বিক্ষাভ সমাবেশ হয়েছে। সমাবেশ শেষে শ্রমিকদের সঙ্গে নিয়ে মহাসড়কে মিছিল করেছে সংগঠনের নেতাকর্মীরা।

সভায় বক্তব্য রাখেন সংগঠনটির সভাপ্রধান তাসলিমা আখতার, বাবুল হোসেন, জিয়াদুল ইসলাম, রুপালী আক্তার, খোরশেদ আলম, নাসিমা বেগম ও মো. মাসুদ।

তাসলিমা আখতার বলেন, 'সারাদেশে দ্রব্যমূল্য উধ্বগতির সঙ্গে অসহনীয় লোডশেডিং পোশাক শ্রমিকসহ দেশবাসীর জীবনে এক বিপর্যয় ডেকে এনেছে। বর্তমানে সারাদেশে বিদ্যুৎ সংকটে দেশবাসী অশেষ দুর্ভোগের মধ্যে আছে। এই দুর্ভোগে মধ্যবিত্ত এলাকা থেকে শ্রমিক পাড়া কেউই বাইরে না। বরং পোশাক শ্রমিকসহ শ্রমজীবি এলাকায় লোডশেডিং অন্যান্য শহুরে এবং সুবিধাভোগী এলাকা থেকে অত্যন্ত নাজুক। দিনের বেলা ঘণ্টায় ঘণ্টায় বিদ্যুৎ না থাকা এমনকি রাতের বেলায়ও লম্বা সময় বিদ্যুৎ না থাকায় দেশবাসীর সঙ্গে পোশাক কারখানার শ্রমিকরাও অত্যন্ত সংকটের মধ্যে পড়েছে। কারখানা থেকে ফিরে এসে বিদ্যুৎ না থাকার কারণে পানির সমস্যা, গোসল ও রান্না বান্নার সমস্যায় পড়তে হচ্ছে তাদের।'

তিনি আরও বলেন, 'অক্টোবর মাস হলেও দেশে গরম তাপদাহ থাকায় এবং ব্যাপক মাত্রায় লোডশেডিংয়ের কারণে শারীরিকভাবেও শ্রমিকরা অসুস্থ হয়ে পড়ছে। রাতেও বিদ্যুৎ না থাকার কারণে পোশাক শ্রমিকরা ঠিকমতো বিশ্রাম না নিয়েই কাজে যাচ্ছে। কারখানায় কাজ শেষ করে বাসায় আসলে অনেক সময় বিদ্যুৎ থাকছে না। কোনো কোনো এলাকায় বিদ্যুতের সঙ্গে গ্যাসের সমস্যাও যুক্ত হওয়ায় বিপর্যয় প্রকট আকার ধারণ করেছে।'

সংগঠনটির আশুলিয়া শাখার সভাপ্রধান জিয়াদুল ইসলাম বলেন,  'বর্তমান বাজারে দ্রব্যমূল্যর ঊর্ধ্বগতি, মূল্যস্ফীতি ৯ শতাংশের সঙ্গে মুদ্রাস্ফীতি এবং বিদ্যুৎ গ্যাস সংকট সব মিলিয়ে শ্রমিকরা এক ভয়াবহ বিপর্যস্থ অবস্থার মধ্যে পতিত হয়েছে। শিল্পও সংকটে। ৮ হাজার টাকা মজুরিতে যখন বাঁচা দায় তখন এই সমস্ত সংকট শ্রমিকের জীবনকে অসহনীয় করে তুলছে।'

বিদ্যুৎ ও গ্যাস সরবরাহ নির্বিঘ্ন রেখে নতুন মজুরি বোর্ড গঠন করে শ্রমিকদের ২৫ হাজার টাকা মজুরি প্রদানের আহ্বান জানান নেতারা।

সমাবেশে নেতারা বলেন, রপ্তানি আয়ের শীর্ষ খাতের শ্রমিকদের জন্য সরকারের মহার্ঘ্যভাতা, রেশনিং ও বিশেষ ভূর্তকি প্রদানের উদ্যোগ নিতে হবে।

তারা আরও বলেন, 'বিদ্যুৎ ও গ্যাস সরবরাহের অভাবে ডিজেল বা জ্বালানি তেলে জেনারেটর চালিয়ে উৎপাদন অব্যাহত রাখা কঠিন হয়ে পড়েছে। ফলে উৎপাদনেও এই সংকটের প্রভাব পড়েছে। রপ্তানি আয়ের শীর্ষখাত পোশাকখাতে উৎপাদনের হার কমছে এবং সংকট ঘনীভূত হচ্ছে। তার ফলে অনেক কারখানা কাজের অর্ডার থাকা সত্ত্বেও কারখানার শ্রম ঘণ্টা কমিয়ে দিয়েছে। ফলে শ্রমিকদের ওভার টাইমের হারও কমে গেছে। বর্তমান লাগামছাড়া দ্রব্যমূল্যের এইকালে বিদ্যুৎ সংকট শ্রমিক ও শিল্প দুইকেই ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছে।'

এ ধরনের পরিস্থিতিতে কেবল আন্তর্জাতিক বিশ্ব পরিস্থিতিকে কেবল দায় না দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সরকারকে দ্রুত উদ্যোগ গ্রহণে আহ্বান জানান তারা।

Comments

The Daily Star  | English

Consensus commission: Fresh caretaker models on the table now

The National Consensus Commission, BNP, and Bangladesh Jamaat-e-Islami have each proposed separate methods for appointing the chief adviser to caretaker government.

7h ago