চাঁদা আদায় নিয়ে যমুনা সার কারখানায় মুখোমুখি অবস্থানে ২ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান

ফাইল ছবি। স্টার

জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে যমুনা সারকারখানায় (জেএফসিএল) আমদানি করা সারে ট্রাকপ্রতি ৫০০ টাকা চাঁদা আদায়কে কেন্দ্র করে ২ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার পর ৩ দিন ধরে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।

আজ সোমবার সকাল থেকে পরিস্থিতি থমথমে, ২ পক্ষ মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে। 

জেএফসিএল সূত্র দ্য ডেইলি স্টারকে জানায়, বাংলাদেশ রাসায়নিক শিল্প সংস্থা (বিসিআইসি) চট্টগ্রামের কাফকো থেকে যমুনা সারকারখানার বাফার গুদামে ৩০ হাজার মেট্রিক টন ইউরিয়া আমদানির জন্য গ্রামসিকো লিমিটেডকে পরিবহন ঠিকাদার নিয়োগ করে। গ্রামসিকো সারগুলো কারখানায় আনলোডের জন্য মেসার্স মাজেদা ট্রেডার্সকে দায়িত্ব দেয়। অন্য আরেকটি কার্যাদেশে বিআরটিসিকে পরিবহন ঠিকাদার নিয়োগ করে বিসিআইসি। বিআরটিসির স্থানীয় প্রতিনিধির দায়িত্ব পায় মেসার্স রিক্ত এন্টারপ্রাইজ। এদিকে সারগুলো কারখানায় আনলোড করার সময় মাজেদা ট্রেডার্সের লোকজন শ্রমিক বকশিশের নামে প্রতি ট্রাক থেকে ৫০০ টাকা করে চাঁদা আদায় করে। রিক্ত এন্টারপ্রাইজের লোকজন এ ঘটনার প্রতিবাদ জানালে উভয়পক্ষে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।

ট্রাক চালক মো. রানা দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, এখন পর্যন্ত তিনি ৩ বার সার নিয়ে কারখানায় গেছেন। দুবার ৩০০ টাকা করে দিলেও পরের বার ৫০০ টাকা চাঁদা দিয়ে সার আনলোড করতে হয়েছে। শ্রমিকদের বকশিশের নামে প্রতিটি ট্রাক থেকে এভাবে চাঁদা আদায় করা হয়।

মেসার্স রিক্ত এন্টারপ্রাইজের মালিক রফিকুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, বিআরটিসির সঙ্গে চুক্তি মোতাবেক রিক্ত এন্টারপ্রাইজ সার আনলোড করে আসলেও তারা টাকা আদায় করছে না। কিন্তু মাজেদা ট্রেডার্সের মালিক আশরাফুল আলম মানিক শ্রমিক সর্দার রইচ উদ্দিনের মাধ্যমে প্রতি ট্রাক থেকে ৫০০ টাকা করে চাঁদা আদায় করছেন। অথচ ঠিকাদার প্রতি মেট্টিক টন সার আনলোডের ব্যয় হিসেবে ২২০ টাকা হারে প্রতি ট্রাকে সর্বনিম্ন ৩ হাজার ৮০ টাকা পরিশোধ করে।

অভিযোগের বিষয়ে মেসার্স মাজেদা ট্রেডার্সের মালিক আশরাফুল আলম মানিক জানান, শ্রমিক খরচ হিসেবে প্রতি ট্রাক থেকে ২ হাজার টাকা করে আদায়ের দাবি ছিল। সমঝোতা করে সেটা ৫০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে এ টাকা তার লোকজন আদায় করে না বলে তিনি দাবি করেন।

এদিকে বিষয়টি নিয়ে রিক্ত এন্টারপ্রাইজের মালিক ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম এবং মাজেদা ট্রেডার্সের মালিক ও পোগলদিঘা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আশরাফুল আলম মানিকের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হওয়ায় গত ২২ অক্টোবর উভয়পক্ষের লোকজন মুখোমুখি অবস্থান নেয়। কয়েক দফা ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার হলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে এখন পর্যন্ত এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে এবং সংঘাতের আশঙ্কা বাড়ছে।

এ ব্যাপারে যমুনা সারকারখানার ভারপ্রাপ্ত মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) দেলোয়ার হোসেন জানান, চাঁদাবাজি হয়ে থাকলে সেটা কারখানার অভ্যন্তরের বিষয় না। তবে এমন অভিযোগ পেলে কর্তৃপক্ষ খতিয়ে দেখবে।

সরিষাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মুহাম্মদ মহব্বত কবীর দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'যমুনা সারকারখানা এলাকায় ক্ষমতাসীন দলের ২ পক্ষ অবস্থান নিয়েছিলো। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে। উভয়পক্ষে উত্তেজনা চলমান থাকলেও অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে প্রশাসন তৎপর আছে।'
 

Comments

The Daily Star  | English
chief adviser yunus confirms election date

Election in February

Chief Adviser Prof Muhammad Yunus last night announced that the general election will be held before Ramadan in February 2026, kickstarting the process of handing over the power to an elected government.

3h ago