দলিত-হরিজন জনগোষ্ঠীকে সমাজের মূল স্রোতে অন্তর্ভুক্তির তাগিদ

সংলাপে অংশ নেওয়া বক্তা ও সুধীজন। ছবি: সংগৃহীত

রাষ্ট্রীয় ও সামাজিকভাবে বৈষম্যের শিকার দলিত জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে বিভিন্ন নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত করার পাশাপাশি তাদের সমাজের মূল স্রোতে অন্তর্ভূক্ত করার তাগিদ এসেছে একটি সংলাপ অনুষ্ঠান থেকে।

গতকাল বুধবার খুলনার সিএসএস আভা সেন্টারে 'দলিত-হরিজন জনগোষ্ঠীর নাগরিক সেবা প্রাপ্তিতে করণীয়' শীর্ষক এই সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়। ইউএসএইড ও কাউন্টারপার্ট ইন্টারন্যাশনাল'র আর্থিক সহযোগিতায় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা 'দলিত' এই সংলাপের আয়োজন করে।

সংলাপে অংশ নেওয়া বক্তারা বলেন, শুধু পেশা ও জন্মগত পরিচয়য়ের কারণে অবহেলার শিকার হচ্ছেন বাংলাদেশের দলিত ও হরিজন জনগোষ্ঠী। যথাযথ সুযোগ-সুবিধার অভাবে তারা ধীরে ধীরে সমাজ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন এবং নাগরিক সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। তাদেরকে সমাজের মূল স্রোতে ফিরিয়ে আনতে না পারলে এই বৈষম্য আরও বাড়বে। তাই রাষ্ট্রের উচিত বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা দিয়ে সমাজে তাদের প্রতিষ্ঠিত করা।

এ ছাড়া দলিত ও হরিজন জনগোষ্ঠীর থাকার জায়গাগুলোকে মুচিপাড়া, ঋষিপাড়া, রবিদাসপাড়া, মেথরপট্টি, সুইপার কলোনি, হরিজন কলোনি, কলুপাড়া, জেলেপাড়া- এমন সব নামকরণের ভেতর দিয়েও বৈষম্য তৈরি করা হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন বক্তারা।

বাংলাদেশ দলিত যুব পরিষদের সমন্বয় সচিব বিকাশ কুমার দাস বলেন, 'নিজস্ব জায়গা না থাকায় দলিতরা বৈধ উপায়ে বিদ্যুৎ সংযোগ নিতে পারেন না। এ ছাড়া খুলনা সিটি করপোরেশন এলাকার ১৪ ও ১৬ নং ওয়ার্ডে বসবাসকারী দলিত সম্প্রদায়ের জেলেরা জেলেকার্ডও পাচ্ছেন না।

নগরীর সোনাডাঙ্গা এলাকার হরিজন কলোনির বাসিন্দা কিশোর লাল বলেন, 'সিটি করপোরেশনের ১০টি ওয়ার্ডে দলিত সম্প্রদায়ের বসবাস। কিন্তু তাদের থাকার জন্য সোনাডাঙ্গায় হরিজনপল্লী নামের একটিমাত্র থাকার জায়গা বরাদ্দ আছে। অন্য জায়গাগুলোতে তারা থাকেন উদ্বাস্তুর মতো। সব সময় উচ্ছেদের ভয় কাজ করে।'

একইসঙ্গে দলিত ও হরিজন সম্প্রদায়ের থাকার জায়গাগুলোতে সুপেয় পানির সংস্থান, ড্রেনেজ ব্যবস্থা ও পয়ঃনিস্কাশন ব্যবস্থাসহ সিটি করপোরেশনের কোনো সেবা পৌঁছায় না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

এ ব্যাপারে সংলাপে উপস্থিত খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক বলেন, 'এই (দলিত-হরিজন) সম্প্রদায়ের অবস্থার কথা সবার ভাবা উচিত। আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থাগুলো যদি তাদের আবাসন তৈরির খরচ বহন করে তাহলে দ্রুত এই সমস্যার সমাধান হতে পারে।'

এ ছাড়া দলিত ও হরিজন সম্প্রদায়ের বিভিন্ন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর সঙ্গে কথা বলে তাৎক্ষণিকভাবে কয়েকটি অভিযোগের সুরাহা করেন মেয়র।

Comments

The Daily Star  | English

CSA getting scrapped

The interim government yesterday decided in principle to repeal the Cyber Security Act which has been used to curb press freedom and suppress political dissent.

5h ago