পাবলিক পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে নৈরাজ্য বন্ধের আহ্বান ২৪ নাগরিকের

বিভিন্ন পাবলিক পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে নৈরাজ্য বন্ধের আহ্বান জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন দেশের ২৪ নাগরিক।
স্টার ফাইল ছবি

বিভিন্ন পাবলিক পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে নৈরাজ্য বন্ধের আহ্বান জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন দেশের ২৪ নাগরিক।

আজ শুক্রবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তারা বলেছেন, সম্প্রতি মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক ও কারিগরি স্তরের পাবলিক পরীক্ষার সৃজনশীল প্রশ্নপত্রে সাম্প্রদায়িক উস্কানিমূলক, নারীর প্রতি অবমাননাকর এবং একজন লেখকের প্রতি বিদ্বেষপ্রসূত ও অবমাননাকর প্রশ্ন সংযোজনের যে ঘটনা ঘটেছে, তা অনাকাঙ্ক্ষিত এবং অনভিপ্রেত। কোনো অবস্থাতেই এসব মেনে নেওয়া যায় না। এসব বিষয় আমাদের ক্ষুব্ধ করেছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, মুক্তিযুদ্ধের ৫০ বছর পরও ৩০ লাখ জীবনের বিনিময়ে অর্জিত বাংলাদেশে একটি সার্বজনীন, অসাম্প্রদায়িক, বিজ্ঞানভিত্তিক শিক্ষা ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হয়নি। হেফাজতের ১৩টি দাবি মেনে নিয়ে এই শিক্ষাকে আরও পশ্চাৎপদ ও প্রতিক্রিয়াশীল করা হয়েছে। দেশের শিশুদের একটি বিরাট অংশ শিক্ষাগ্রহণ করছে সরকার নিয়ন্ত্রিত আলিয়া মাদ্রাসা ও সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে থাকা কওমি মাদ্রাসায়।

এতে উল্লেখ করা হয়, অনেক বিতর্কের মধ্যে শিক্ষাক্ষেত্রে সৃজনশীল পদ্ধতি প্রবর্তনের পরও শিক্ষকরা নিজেদের এই পদ্ধতি উপযোগী গড়ে তুলতে পেরেছেন কী না- তা নিয়ে এখনো প্রশ্ন আছে। সৃজনশীল শিক্ষা পদ্ধতিতে শিক্ষক-শিক্ষার্থী সকলকে সৃজনশীল হয়ে উঠতে হবে। অতি সম্প্রতি পাবলিক পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ, নারীর প্রতি অবমাননাকর, ব্যক্তির প্রতি বিদ্বেষমূলক প্রশ্নপত্র শিক্ষা ব্যবস্থার প্রতিক্রিয়াশীল, সাম্প্রদায়িক ও আধুনিকতাবিরোধী প্রবণতার চিত্র উঠে এসেছে।

বিবৃতিতে জানানো হয়, এর পরিপ্রেক্ষিতে শুধু প্রশ্নপত্র প্রণয়নকারী ও মডারেশন বোর্ডের সদস্যদের যোগ্যতা ও ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন করার পাশাপাশি সমগ্র শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে ভাবার সময়ও এসেছে। পাশাপাশি মৌলবাদী একটি গোষ্ঠী বিজ্ঞান শিক্ষার পঠন-পাঠন থেকে চার্লস ডারউনের যুগান্তকারী বিবর্তনবাদ তত্ত্ব বাদ দেওয়ার যে দাবি তুলেছে, তাও আমাদের বিচলিত করছে। এসব বিষয়ে বাংলাদেশে বিজ্ঞান শিক্ষা ও মুক্ত চিন্তার প্রসারকে বাধাগ্রস্ত করবে এবং দীর্ঘমেয়াদে রাষ্ট্র ও সমাজকে অন্ধকার, সাম্প্রদায়িকতা আর কূপমণ্ডূকতায় ঠেলে দেবে।

বিবৃতিতে সই করেছেন, ঐক্য ন্যাপ সভাপতি পঙ্কজ ভট্টাচার্য, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য রামেন্দু মজুমদার, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি ও সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ডা. সারওয়ার আলী, বাংলাদেশ কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. নুর মোহাম্মদ তালুকদার, বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রানা দাশ গুপ্ত, বাংলাদেশ কৃষক সমিতির সভাপতি এস এম এ সবুর, মানবাধিকারকর্মী খুশী কবির, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এম এম আকাশ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক সালেহ আহমেদ, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের অ্যাডভোকেট পারভেজ হাসেম, জাতীয় শ্রমিক জোটের কার্যকরী সভাপতি আবদুল ওয়াহেদ, সমাজকর্মী এম এ সামাদ, গবেষক ও সংস্কৃতিকর্মী ড. সেলু বাসিত, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্য রণজিৎ কুমার সাহা, সংস্কৃতিকর্মী এ কে আজাদ, সংস্কৃতিকর্মী অলক দাস গুপ্ত, শ্রমিক সংগঠক আব্দুর রাজ্জাক, মানবাধিকারকর্মী আবদুল আলীম, বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের তথ্য ও প্রচার সম্পাদক দীপায়ন খীসা এবং বাংলাদেশ ছাত্রলীগের (বিসিএল) সভাপতি গৌতম শীল।

Comments

The Daily Star  | English

Old, unfit vehicles running amok

The bus involved in yesterday’s accident that left 14 dead in Faridpur would not have been on the road had the government not caved in to transport associations’ demand for allowing over 20 years old buses on roads.

5h ago