বাংলাদেশ

নির্বাচন কমিশন স্বাধীনভাবে কাজ করছে এবং ভবিষ্যতেও করবে: প্রধানমন্ত্রী

আমরা একটি অবাধ, সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ নির্বাচনের প্রত্যাশা করছি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য বাংলাদেশ এই প্রথম একটি আইন পাস করা হয়েছে। সেই আইনের আওতায় সার্চ কমিটি গঠন করে নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশনকে আর্থিক স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে। কমিশন স্বাধীনভাবে কাজ করছে এবং ভবিষ্যতেও করবে।’
নির্বাচন কমিশন স্বাধীনভাবে কাজ করছে এবং ভবিষ্যতেও করবে
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: ভিডিও থেকে

আমরা একটি অবাধ, সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ নির্বাচনের প্রত্যাশা করছি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, 'নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য বাংলাদেশ এই প্রথম একটি আইন পাস করা হয়েছে। সেই আইনের আওতায় সার্চ কমিটি গঠন করে নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশনকে আর্থিক স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে। কমিশন স্বাধীনভাবে কাজ করছে এবং ভবিষ্যতেও করবে।'

তিনি বলেন, 'সরকার সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানে নির্বাচন কমিশনকে সব ধরনের সহায়তা দিয়ে যাবে।' 

আজ শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন। 

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের বর্তমান মেয়াদের চতুর্থ বছর পূর্তি উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী জাতির উদ্দেশে এ ভাষণ দেন। 

ভাষণে শেখ হাসিনা বলেন, 'গত ১৪ বছরে বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল থেকে উজ্জ্বলতর হয়েছে। বাংলাদেশকে আজ আর কেউ বন্যা-খরা-দুর্যোগের দেশ হিসেবে দেখে না। বাংলাদেশ এখন উদীয়মান অর্থনীতির দেশ, উন্নয়নের রোল মডেল। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামে বাংলাদেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। জাতিসংঘসহ ২ ডজনেরও বেশি বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা ও সংগঠনের বাংলাদেশ সক্রিয় সদস্য।'

গত অক্টোবরে পঞ্চম বারের মতো বাংলাদেশ বিপুল ভোটে জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'প্রতিবেশি দেশগুলোর সঙ্গে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত করেছে বাংলাদেশ। ভারতের সঙ্গে স্থল সীমানাচুক্তি বাস্তবায়নের মাধ্যমে ছিটমহলবাসীর ৬৮ বছরের বন্দিজীবনের অবসান হয়েছে। ভারত ও মিয়ানমারের সঙ্গে সমুদ্রসীমানার শান্তিপূর্ণ মীমাংসার মাধ্যমে আমরা বঙ্গোপসাগরে প্রায় ১ লাখ ১৮ হাজার ৮১৩ বর্গকিলোমিটার সামুদ্রিক এলাকার ওপর সার্বভৌম অধিকার অর্জন করেছি।' 

'আমরা ১১ লাখের মতো রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়ে বিশ্বে মানবিকতার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছি।' 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'এ বছরের শেষ কিংবা আগামী বছরের শুরুতেই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। কিন্তু এখন থেকেই স্বাধীনতাবিরোধী, ক্ষমতালোভী ও জনগণের সম্পদ লুণ্ঠনকারী আর পরগাছাগোষ্ঠীর সরব তৎপরতা শুরু হয়েছে। এদের লক্ষ্য ঘোলাটে পরিস্তিতির সৃষ্টি করে পেছনের দরজা দিয়ে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল করা। গণতন্ত্রের এই অগ্রযাত্রা ব্যাহত করা। এরা লুণ্ঠন করে অর্থ দিয়ে দেশে-বিদেশে বাড়াটে বুদ্ধিজীবী এবং বিবৃতিজীবী নিয়োগ করেছে। আওয়ীমী লীগের বিরুদ্ধে কুৎসা রটিয়ে এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এরা মিথ্যা ও ভুয়া তথ্য দিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে। এদর মিথ্যাচারে বিভ্রান্ত হবেন না। গণতন্ত্র ও আইনের শাসনে বিশ্বাসী রাজনৈতিক দলসমূহ এবং প্রতিষ্ঠানের প্রতি আমার অনুরোধ, সাংবিধানিক প্রক্রিয়া ব্যহত হয় এমন কোনো উদ্ভট ধারণাকে প্রশ্রয় দেবেন না এবং ইন্ধন যোগাবেন না।'

'আওয়ামী লীগ জনগণের দল। জনগণের শান্তিতে বিশ্বাস করে, জনগণের শক্তিতে বিশ্বাস করে। জনগণ ভোট দিয়ে বিজয়ী করলে আওয়ামী লীগ দেশ গড়ার জাতীয় দায়িত্ব পালন অব্যাহত রাখবে। যদি বিজয়ী না করেন তাহলে আমরা জনগণের কাতারে চলে যাব। তবে যেখানেই থাকি আমরা জনগণের সেবা করে যাব। কিন্তু ষড়যন্ত্র করে কেউ যাতে জনগণের অধিকার কেড়ে নিতে না পারে সেদিকে সকলের সজাগ দৃষ্টি রাখার আহ্বান জানাচ্ছি।' 

শেখ হাসিনা বলেন, 'একই সঙ্গে কেউ যাতে আন্দোলনের নামে অরাজকতা সৃষ্টি করে মানুষের জানমালের এবং জীবীকার ক্ষতিসাধন করতে না পারে সেদিকে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।' 

আমাদের দেশ এগিয়েছে অনেক উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'তবে আরও এগিয়ে যেতে হবে। একটি উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ অর্জন আমাদের লক্ষ্য। জিডিটাল বাংলাদেশ গড়ার পর আমাদের পরবর্তী লক্ষ্য হলো, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলা ' 

'চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের নানা অনুষঙ্গ ধারণ করে আমরা তরুণদের প্রশিক্ষিত করে তোলার উদ্যোগ নিয়েছি। স্মার্ট বাংলাদেশ, স্মার্ট গভার্নেন্স, স্মার্ট জনগোষ্ঠী, স্মার্ট শিল্প, কলকারখানা ও ব্যবসা-বাণিজ্য, স্বাস্থ্য-শিক্ষা বাণিজ্যিক কৃষিসহ সকল ক্ষেত্রে রোবোটিকস, আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স, ন্যানো টেকনোলজি, জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং, জৈবপ্রযুক্তি অর্থাৎ ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার নিশ্চিত করা হবে। সকল ক্ষেত্রে গবেষণার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।' 

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শোষণ-বঞ্চনামুক্ত একটি সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'আসুন স্মার্ট দেশ গড়ার মাধ্যমে একটি সুখী সমৃদ্ধ অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ে তুলি, আমরা তার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করি। এদেশের সাধারণ মানুষের মুখে হাসি ফোটায়।'

সবশেষে তিনি বলেন, 'যতক্ষণ দেহে আছে প্রাণ/প্রাণপণে সরাব জঞ্জাল/এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি/নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।'

 

Comments