নববধূকে হেলিকপ্টারে নিয়ে এসে হরিজন যুবকের স্বপ্ন পূরণ
হরিজন সম্প্রদায়ের যুবক অপু বাঁশফোড়ের (২৫) স্বপ্ন ছিল বিয়ে করে হেলিকপ্টারে চড়ে নববধূকে বাড়িতে আনবেন। আজ বুধবার দুপুরে অপু তার স্বপ্ন পূরণ করেছেন। বরবেশে তিনি হেলিকপ্টারে চড়ে নেত্রকোনা থেকে কুড়িগ্রামে আসেন। বিয়ে করে হেলিকপ্টারেই নববধূকে নিয়ে ফিরেছেন তিনি।
অপু বাঁশফোড়ের বাড়ি নেত্রকোনা জেলার জয়নগর হাসপাতাল এলাকায়। তিনি পরিচ্ছন্নকর্মী হিসেবে সরকারি চাকরি করেন। কুড়িগ্রাম জেলা শরের এলজিইডি বস্তি এলাকার ভুটটু লাল বাঁশফোড়ের মেয়ে সনিতা রানী বাঁশফোড়ের (১৮) সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধেছেন তিনি।
হরিজন সম্প্রদায়ের লোকজন জানান, তাদের সম্প্রদায়ের এক যুবক হেলিকপ্টারে চড়ে বিয়ে করতে আসায় তারা গর্বিত। এর আগে কখনো এমন ঘটনা ঘটেনি তাদের সম্প্রদায়ে। এ ঘটনা হরিজন সম্প্রদায়ের মানুষকে মাথা উঁচু করতে অনুপ্রেরণা যুগিয়েছে। তারা সবাই অপু-সনিতার বিয়েতে অংশগ্রহণ করেছেন।
কুড়িগ্রাম হরিজন যুব সম্প্রদায় কমিটির সাধারণ সম্পাদক জয়কুমার বাঁশফোড় ডেইলি স্টারকে বলেন, বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শেষে দুপুর দেড়টার দিকে কুড়িগ্রামের নববধূ সনিতা রানীকে হেলিকপ্টারে উড়িয়ে নিয়ে যান নেত্রকোণার বর অপু বাঁশফোড়। হেলিকপ্টারে চড়ে হরিজন যুবকের বিয়ে করতে আসার ঘটনাটি কুড়িগ্রাম শহরে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। অপু-সনিতার বিয়ে ভিডিও করা হয়েছে ড্রোন ক্যামেরা দিয়ে। বুধবার দুপুরে কুড়িগ্রাম স্টেডিয়াম থেকে নববধূকে হেলিকপ্টারে চড়ে নিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয়রা ভিড় জমান।
সনিতা রানী বাঁশফোড়ের বাবা ভুটটু লাল বাঁশফোড় ডেইলি স্টারকে বলেন, পারিবারিকভাবেই তার মেয়ের বিয়ে দেওয়া হয়েছে। জামাই হেলিকপ্টারে চড়ে আসবেন এটা তিনি আগে থেকে জানতেন না। বিষয়টি বিয়ের দুই দিন আগে জানানো হয়। তিনি বলেন, আমার মেয়ের কপাল খুবই ভালো। আমরা স্বপ্নেও ভাবিনি আমার মেয়ে হেলিকপ্টারে চড়ে শ্বশুর বাড়িতে যাবে।
বর অপু বাঁশফোড় জানান, তার এবং পরিবারের লোকজনের স্বপ্ন ছিল নববধূকে হেলিকপ্টারে চড়ে বাড়িতে নিয়ে আসার। স্বপ্ন পূরণ করতে তিনি টাকা জমিয়েছিলেন। প্রতি ঘণ্টায় ৮০ হাজার টাকায় ৩ ঘণ্টার জন্য হেলিকপ্টারটি ভাড়া করা হয়েছিল।
Comments