রাজশাহীতে ভেঙে ফেলা হয়েছে ভাষা সৈনিক মাদার বখশের সমাধির দেয়াল

রাজশাহীর হেতেম খাঁ গোরস্তানে ভেঙে ফেলা হয়েছে ভাষা সৈনিক মাদার বখশের সমাধির দেয়াল। ছবি: আনোয়ার আলী/স্টার

ভাষা সৈনিক মাদার বখশের সংরক্ষিত সমাধির দেয়াল ভেঙে ফেলেছে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের নির্মাণ শ্রমিকরা। সীমানা প্রাচীর সংস্কার করতে গিয়ে গত সপ্তাহে রাজশাহীর হেতেম খাঁ গোরস্তানে সমাধির দক্ষিণ পাশের দেয়ালটি ভেঙে ফেলা হয়।

মাদার বখশ্ (১৯০৭-১৯৬৭) ১৯৪৬ সালের বঙ্গীয় আইনসভা নির্বাচনে জয়ী হন। তিনি ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের সংগঠক ছিলেন। রাজশাহী পৌরসভার প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে তার নাম স্মরণীয় হয়ে আছে। মৃত্যুর পর পারিবারিকভাবে তার সমাধি সংরক্ষণ করা হয়। আগামীকাল শুক্রবার তার ৫৬তম মৃত্যুবার্ষিকী।

সরেজমিনে দেখা যায় রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক) গোরস্থান সংস্কার প্রকল্পের আওতায় হেতম খাঁ গোরস্থানে সীমানা প্রাচীর সংস্কার করতে গিয়ে মাদার বখশের সমাধির একটি দেয়াল ভেঙে ফেলা হয়েছে।

গোরস্থানে ব্যক্তিগতভাবে সংরক্ষিত আরও কয়েকটি সমাধি ভাঙা পড়েছে। এসব কবরের কয়েকটির স্মৃতিফলকও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে মাদার বখশের সমাধির উত্তর অংশের স্মৃতিফলক অক্ষত আছে।

সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)-এর রাজশাহী জেলা সভাপতি আহমেদ শফি উদ্দিন তার এক আত্মীয়ের কবর জিয়ারত করতে গিয়ে মাদার বখশের সংরক্ষিত সমাধির দেয়াল ভাঙা অবস্থায় দেখেন। তিনি ফেসবুকে একটি পোস্ট দেওয়ার পর বিষয়টি আলোচনায় আসে।

তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'রাষ্ট্রের উচিত তার মতো ব্যক্তির সমাধি সংরক্ষণ করা।'

মাদার বখশের নাতি কাজী হা-মীম সালেহ বলেন, উন্নয়ন কাজে তার কোনো আপত্তি নেই। তবে দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, তার দাদার সমাধি ভাঙার আগে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়নি।

তিনি বলেন, 'দুঃখ পেলেও আমাদের কিছু করার নেই।'

এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী মো. নূর ইসলাম বলেন, নির্মাণ শ্রমিকরা সীমানা প্রাচীর নির্মাণের সময় কিছু সংরক্ষিত কবর ভুল করে ভেঙে ফেলেছে।

তার দাবি, সংরক্ষিত কবরগুলো অক্ষত রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। যেসব কবর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সেগুলো আমরা পুনর্নির্মাণ করে দেবো।'

নতুন কবরের জন্য জায়গা বের করতে রাজশাহী সিটি করপোরেশন ২০২১ সাল থেকে শহরের গোরস্থানগুলো সংস্কার করছে।

Comments

The Daily Star  | English

Pathways to the downfall of a regime

The erosion in the credibility of the Sheikh Hasina regime did not begin in July 2024.

6h ago