দেশে ফিরলেন রকিব, বিমানবন্দরে স্বাগত জানালেন মাহি

সনিরাজ কার প্যালেসের মালিক ও ও চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহির স্বামী রকিব সরকার সৌদি আরব থেকে দেশে ফিরেছেন।
বিমানবন্দরে নামার পর রকিবকে স্বাগত জানান মাহি। ছবি: সংগৃহীত

সনিরাজ কার প্যালেসের মালিক ও ও চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহির স্বামী রকিব সরকার সৌদি আরব থেকে দেশে ফিরেছেন।

২ মামলার গ্রেপ্তারি পরোয়ানা নিয়ে আজ রোববার সকাল পৌনে ১০টার দিকে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নামেন রকিব। 

তার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে এবং জোরপূর্বক জমি দখলের অভিযোগে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ (জিএমপি) এবং ব্যবসায়ী ইসমাইল হোসেন মামলা ২টি করেছেন। তার স্ত্রী মাহিয়া মাহিও এই ২ মামলার আসামি। 

বিমানবন্দরে নামার পর স্ত্রী মাহি তাকে স্বাগত জানান। পরে সেখান থেকে তারা তাদের ঢাকার বাসায় চলে যান।

মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে রকিব সরকার আজ দুপুরে দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'মিথ্যা মামলাগুলো আমি আইনগতভাবে মোকাবিলা করব। আমি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। সত্যের জয় হবে। আমি কোনো অপরাধ করিনি।'

ওমরাহ পালন শেষে গতকাল শনিবার সকালে সৌদি আরব থেকে ঢাকা ফেরেন মাহিয়া মাহি। সকাল ১১টা ৪৫ মিনিটের দিকে বিমানবন্দর এলাকা থেকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করে গাজীপুর মহানগর পুলিশ। এরপর মাহিকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন গাজীপুর মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. ইকবাল হোসেনের আদালত। পরে বিকেল ৫টার দিকে মাহির জামিন চেয়ে আবেদন করেন আইনজীবীরা। সেই আবেদন বিবেচনা করে তাকে আদালত ২টি মামলাতেই জামিন দেন।

মাহির আইনজীবী আনোয়ার সাদাত সরকার ডেইলি স্টারকে বলেন, 'মাহি অন্তঃসত্ত্বা। তাছাড়া, মামলা যখন হয়েছে তখন তিনি দেশের বাইরে ছিলেন। আবেদনে আমরা এগুলো তুলে ধরেছি। এসব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে আদালত তার জামিন মঞ্জুর করেছেন।'   

ওমরাহ পালন করতে স্বামীর সঙ্গে সৌদি আরবে গিয়েছিলেন মাহি। সেখান থেকেই লাইভে এসে তিনি অভিযোগ করেন, ইসমাইল হোসেন ওরফে লাদেন ও মামুন সরকারের নেতৃত্বে রকিবের গাড়ির শো-রুম সনিরাজ কার প্যালেসে হামলা ও ভাঙচুর চালানো হয়েছে। গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ ইসমাইলের কাছ থেকে দেড় কোটি টাকা ঘুষ নিয়েছেন বলে তিনি উল্লেখ করেন।

মাহিকে গ্রেপ্তারের পর গতকাল গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মোল্লা নজরুল ইসলাম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ফেসবুকে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের বিরুদ্ধে "ঘুষ" নেওয়ার অভিযোগ তোলেন মাহি। পুলিশের বিরুদ্ধে ঢালাও অভিযোগ করেছেন তিনি। তারা পুলিশকে বিতর্কিত করার মিশনে নেমেছেন। অথচ মাহি বা তার স্বামী জমিজমা সংক্রান্ত কোনো বিষয় নিয়ে আমার কাছে আসেননি। যাদের বিরুদ্ধে তিনি অভিযোগ করেছেন, তাদেরও আমি চিনি না। পুলিশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার অভিযোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করেছে পুলিশ।'

এদিকে সংবাদ সম্মেলন করে ইসমাইল হোসেন পাল্টা তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে জানান, রকিব তার প্রায় সোয়া ১১ শতাংশ জমি দখল করে গাড়ির শো-রুম করেছেন। জমি উদ্ধার ও তাদের নির্যাতন থেকে বাঁচার জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছেসহ সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের তিনি অভিযোগ দিয়েছেন। বিষয়টি মীমাংসার জন্য দফায় দফায় চেষ্টাও করা হয়। এরই মধ্যে বৃহস্পতিবার রাতে ওই শো-রুমে নতুন কিছু গাড়ি উঠাতে থাকে রকিবের লোকজন।

'খবর পেয়ে সেখানে আমিসহ কয়েকজন হাজির হই। সেই সময় দেশীয় অস্ত্রসহ রকিব সরকারের লোকজন আমাদের ওপর হামলা চালায়। নিজেরাই নিজেদের শো-রুম ভাঙচুর করেছে। এ ঘটনায় আমিসহ ৩ জন আহত হই। ওই জমি রকিব সরকারের নয়', বলেন তিনি।

ইসমাইল আরও বলেন, 'জমি ছেড়ে দেওয়ার বিনিময়ে রকিব সরকার আমার কাছে ১ কোটি টাকা দাবি করেছিলেন। যেখানে ১ কোটি টাকা দিলে সমস্যা সমাধান হয়, সেখানে কেন আমি পুলিশকে দেড় কোটি টাকা দেবো? পুলিশ আমার পক্ষে থাকলে আজ কেন আমি মার খেলাম? কেন মুক্তিযুদ্ধমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে অভিযোগ দিলাম? গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্যই রকিব তার স্ত্রী চিত্রনায়িকা মাহিকে ব্যবহার করছেন।'

 

Comments