বাল্যবিয়ে দক্ষিণ এশিয়ায় সর্বোচ্চ বাংলাদেশে: ইউনিসেফ

২০৩০ সালের মধ্যে শিশুবিয়ের অবসান করার যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে তা পূরণের জন্য বিশ্বব্যাপী এর গতি ২০ গুণ দ্রুততর হতে হবে
প্রতীকী ছবি

বাংলাদেশে বাল্যবিয়ের প্রচলন দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে বেশি এবং বিশ্বের মধ্যে অষ্টম সর্বোচ্চ বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ।

আজ বুধবার প্রকাশিত ২০১৯ সালের বাংলাদেশ মাল্টিপল ইন্ডিকেটর ক্লাস্টার সার্ভের তথ্য অনুযায়ী তৈরি করা প্রতিবেদনে ইউনিসেফ এই তথ্য জানিয়েছে।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশে ৫১ শতাংশ তরুণীর বিয়ে হয়েছিল তাদের শৈশবে।

এতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশে ৩ কোটি ৪৫ লাখ নারীর বিয়ে হয়েছে তাদের বয়স ১৮ বছর হওয়ার আগে এবং ১ কোটি ৩ লাখ নারীর বিয়ে হয়েছে তাদের বয়স ১৫ বছর হওয়ার আগে।

বাংলাদেশে ইউনিসেফের প্রতিনিধি শেলডন ইয়েট বলেন, 'শিশুদের বিয়ে দেওয়া উচিত নয়। অগ্রগতি সত্ত্বেও বাংলাদেশে শিশুবধূর সংখ্যা বিস্ময়কর। লাখ লাখ মেয়ের শৈশব কেড়ে নেওয়া হচ্ছে এবং তাদের মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে।'

মেয়েদের অধিকার রক্ষা ও বাল্যবিয়ে বন্ধে তিনি সমন্বিত উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানান।

ইউনিসেফ জানায়, বিশ্বজুড়ে সংঘাত, জলবায়ু-সম্পর্কিত বিপর্যয় এবং কোভিড-১৯ এর চলমান প্রভাব, বিশেষ করে ক্রমবর্ধমান দারিদ্র্য, আয়-রোজগারে ধাক্কা এবং স্কুল থেকে ঝরে পড়ার ঘটনা শিশুবিয়ের চালিকা শক্তিগুলোকে বৃদ্ধি করতে সাহায্য করছে। একইসঙ্গে মেয়েদের জন্য স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা, সামাজিক সেবা ও কমিউনিটির সমর্থন পাওয়াকে কঠিন করে তুলছে, যা তাদের শিশুবিয়ে থেকে রক্ষা করে। ফল স্বরূপ ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশে বসবাস করা মেয়েশিশুর বিয়ে হওয়ার ঝুঁকি বৈশ্বিক গড়ের প্রায় দ্বিগুণ বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

বিশ্লেষণে অন্তর্ভুক্ত সর্বশেষ বৈশ্বিক হিসাব অনুযায়ী, বিশ্বব্যাপী প্রায় ৬৪ কোটি মেয়ে ও নারীর বিয়ে হয়েছে তাদের ছোটবেলায়; অথবা বলা যায়, প্রতি বছর ১ কোটি ২০ লাখ মেয়ের বিয়ে হয় তাদের ছোটবেলায়।

গত ৫ বছর আগে এ বিষয়ে সর্বশেষ হিসাব প্রকাশের পরে এ পর্যন্ত ছোটবেলায় বিয়ে হয়ে যাওয়া তরুণীর সংখ্যা ২১ শতাংশ থেকে ১৯ শতাংশে নেমে এসেছে। তবে এই অগ্রগতি সত্ত্বেও ২০৩০ সালের মধ্যে শিশুবিয়ের অবসান করার যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে তা পূরণের জন্য বিশ্বব্যাপী এর গতি ২০ গুণ দ্রুততর হতে হবে, মনে করছে ইউনিসেফ।

Comments