১১ কিলোমিটার সংস্কার হতে যাচ্ছে ৮ বছর পর
পটুয়াখালী কুয়াকাটা মহাসড়কের ১১ কিলোমিটার সড়ক দীর্ঘ ৮ বছর পর সংস্কার হতে যাচ্ছে।
মামলা জটিলতার কারণে কলাপাড়া উপজেলার পাখিমারা বাজার থেকে আলিপুর ব্রিজ পর্যন্ত সড়কের এ অংশটি ২০১৪ সালের পর সংস্কার করা হয়নি।
সম্প্রতি মামলা জটিলতার অবসান হওয়ায় এ সড়কের সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আগামী দুয়েক মাসের মধ্যেই প্রায় ১৮ কোটি টাকা ব্যয়ে এ সংস্কার কাজ শুরু হবে বলে জানিয়েছে পটুয়াখালী সড়ক ও জনপদ (সওজ) অধিদপ্তর।
পটুয়াখালী সওজ সূত্রে জানা গেছে, পটুয়াখালী সড়ক বিভাগ ২০১১ সালে পটুয়াখালী কুয়াকাটা সড়কের পাখিমারা থেকে আলিপুর পর্যন্ত ১১ কিলোমিটার সড়ক সংস্কারের কাজ হাতে নেয়।
খুলনার রূপসা ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেড ওই অংশের ঠিকাদার নিযুক্ত হয়। ব্যয় ধরা হয় ২০ কোটি টাকা। ঠিকাদার সড়কটি সংস্কারের পর চূড়ান্ত বিল দাবি করে সড়ক বিভাগের কাছে।
কিন্তু সংস্কার কাজে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগে সড়ক বিভাগ ঠিকাদারকে ১২ কোটি টাকা পরিশোধের পর বাকি ৮ কোটি টাকা আটকে রাখে।
শিডিউলের শর্ত অনুযায়ী আবার সংস্কারের জন্য বলা হলে ঠিকাদার তাতে অস্বীকৃতি জানায়।
এ নিয়ে সওজ পৃথক তদন্ত কমিটি গঠন করে এবং কমিটি সরেজমিনে তদন্ত করে সড়কের কাজে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগের সত্যতা পায়।
পরে ঠিকাদারের চূড়ান্ত বিল পরিশোধে আপত্তি জানায় তদন্ত কমিটি।
এ অবস্থায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রূপসা ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেডের পরিচালক রাশেদুর রহমান ২০১৪ সালে হাইকোর্টে পিটিশন দাখিল করেন।
এর পরিপ্রেক্ষিতে আদালত সড়কটিতে সংস্কার কাজের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে।
সম্প্রতি হাইকোর্ট ওই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করায় সড়কের ওই অংশ সংস্কারে বাধা কেটে গেছে।
কুয়াকাটা সৈকতে দেশি-বিদেশি পর্যটকরা আসেন। ব্যবসা-বাণিজ্য ও স্থানীয়দের যাতায়াতের গুরুত্ব বিবেচনায় এ সড়কের ওই অংশ জরাজীর্ণ থাকায় অশেষ ভোগান্তি পোহাতে হয় যাত্রীদের।
পটুয়াখালী জেলা বাস মালিক সমিতির সভাপতি রিয়াজ উদ্দিন মৃধা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'পটুয়াখালী-কুয়াকাটা সড়কের পাখিমারা থেকে আলিপুর পর্যন্ত ১১ কিলোমিটার সড়ক দীর্ঘ ৮ বছর ধরে জরাজীর্ণ অবস্থায় আছে। এতে যানবাহন চলাচল বিঘ্নিত হয় এবং যাত্রীদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়। সড়ক বিভাগ এবার সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়ায় যাত্রীদের দুর্ভোগ লাঘব হবে আশা করি।'
পটুয়াখালী সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী এ এম আতিকুল্লাহ ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এটি গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়ক। এর সংস্কার জরুরি হলেও আদালতের নিষেধাজ্ঞার কারণে আমরা এতদিন ওই ১১ কিলোমিটার অংশ সংস্কার করতে পারিনি।'
তিনি আরও বলেন, 'সম্প্রতি আদালতের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার হওয়ায় আমরা ১৭ কোটি টাকার প্রাক্কলন তৈরি করে অনুমোদনের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়েছি।'
'আশা করছি দুয়েক মাসের মধ্যেই সংস্কার কাজ শুরু করা যাবে এবং সড়কের ওই অংশের সংস্কার কাজ শেষ হলে কুয়াকাটা থেকে ঢাকা পর্যন্ত প্রায় ৩০০ কিলোমিটার সড়কে সব ধরনের যানবাহন চলাচল নির্বিঘ্ন হবে,' যোগ করেন তিনি।
Comments