সিলেটে বুধবার থেকে অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘট

সিলেট_ধর্মঘট
ধর্মঘটের আগে আজ মঙ্গলবার সিলেটের শাহ পরান বাইপাসে যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণ করছে পরিবহন শ্রমিকরা। ছবি: শেখ নাসির/স্টার

সিলেট-তামাবিল মহাসড়কে গত শুক্রবার সড়ক দুর্ঘটনায় ৫ জন নিহত হওয়ার প্রতিবাদে মহাসড়কে বাস চলাচল বন্ধের ঘোষণা দেয় এলাকাবাসী। এর প্রতিবাদে ২ দফা দাবিতে সোমবার ও মঙ্গলবার এ মহাসড়কে পরিবহন ধর্মঘট পালন শেষে এবার সিলেট জেলা জুড়ে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছেন পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা।

ঘোষণা অনুযায়ী, আগামীকাল বুধবার ভোর থেকে সিলেট জেলায় বাস, মিনিবাস, লেগুনা, মালবাহী ট্রাক, পিকআপ ভ্যানসহ সবধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে।

সিলেট জেলা বাস-মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ময়নুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তাদের ২ দফা দাবি হলো- সিলেট-তামাবিল মহাসড়কে নির্বিঘ্নে বাস চলাচল করতে দেওয়া এবং জৈন্তাপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি কামাল আহমদের গ্রেপ্তার।

ময়নুল ইসলাম বলেন, 'এ ২ দফা দাবিতে সোমবার সকাল থেকে সিলেট-তামাবিল মহাসড়কে পরিবহন শ্রমিকদের কর্মবিরতি চলছে। কিন্তু আমাদের দাবি পূরণ না হওয়ায় বুধবার সকাল থেকে সিলেট জেলায় সর্বস্তরের পরিবহন শ্রমিকরা অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি পালন করবেন। কর্মবিরতি চলাকালে শুধু যাত্রীবাহী নয়, পণ্যবাহী যান চলাচলও বন্ধ থাকবে।'

গত শুক্রবার রাত ১০টার দিকে সিলেট-তামাবিল মহাসড়কের জৈন্তাপুর উপজেলার দরবস্ত এলাকায় বাসের ধাক্কায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার ৫ যাত্রী নিহত হন।

এ ঘটনার পরদিন উপজেলার ১৭ পরগনার সালিশ সমন্বয় কমিটি জরুরি বৈঠক করে সিলেট-তামাবিল মহাসড়কে অদক্ষ ও লাইসেন্সবিহীন চালকদের ছাঁটাই না করা পর্যন্ত মহাসড়কে বাস-মিনিবাস চলাচল বন্ধের ঘোষণা দেয়। এ ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে রোববার কয়েক ঘণ্টার জন্য এ মহাসড়কে বাস-মিনিবাস চলাচলে করতে দেওয়া হয়নি।

বাস চলাচলে বাঁধা দেওয়ার প্রতিবাদে সোমবার সকাল থেকে এ মহাসড়কে সবধরনের যানবাহনের শ্রমিকরা কর্মবিরতি শুরু করেন, যা আজ মঙ্গলবার পর্যন্ত চলছে। এ কর্মবিরতিতে মহাসড়কে সবধরনের যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।

এদিকে, সোমবার ১৭ পরগনা সালিশ কমিটি আবারও বৈঠক করে ৩টি সিদ্ধান্ত নেয়। সিদ্ধান্তগুলো হলো- শ্রমিক ইউনিয়ন সভাপতি ময়নুল ইসলাম ও বাস মালিক সমিতির পক্ষ থেকে ১৭ পরগনার কাছে প্রকাশ্যে ক্ষমা না চাওয়া পর্যন্ত বাস চলাচল বন্ধ থাকবে, মালিক সমিতি ক্ষমা চাওয়ার পর ১৭ পরগনার অনুমতি নিয়ে বাস চালাবে এবং বাস ব্যতীত অন্য যানবাহন চলাচলে কেউ বাঁধা দিলে স্থানীয়রা প্রতিহত করবেন।

এ বিষয়ে জৈন্তাপুর উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কামাল আহমদ বলেন, 'সড়ক দুর্ঘটনায় যাত্রী নিহতের পর মালিক সমিতি নিহতদের প্রতি কোনো ধরনের সমবেদনা দেখায়নি। তাই স্থানীয় সালিশ কমিটি অদক্ষ লাইসেন্সবিহীন বাসচালকদের ছাঁটাইয়ের দাবিতে বাস চলাচল বন্ধের ঘোষণা দেয়। কিন্তু পরিবহন শ্রমিকরা নিজেরাই বাস চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে।'

তিনি আরও বলেন, 'এখন তারা আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা দাবি উত্থাপন করে কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়ে প্রশাসনকে চাপে ফেলছে। আমরা চাই- যারা সড়কে মানুষ হত্যা করে তাদের স্বার্থে পরিবহন ধর্মঘট ডেকে জনভোগান্তি সৃষ্টি করে, তাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্র কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করুক।'

Comments

The Daily Star  | English
Government notification banning Awami League

Govt issues gazette notification banning AL activities

A Public Security Division joint secretary confirmed the matter

1h ago