যাত্রী সংকটে ঢাকা-বরগুনা নৌরুটে লঞ্চ চলাচল বন্ধ

বরগুনা নদীবন্দর। ছবি: সোহরাব হোসেন/স্টার

পদ্মা সেতুর চালুর কারণে যাত্রী সংকট তৈরি হয়েছে বরগুনা-ঢাকা নৌরুটে। এ অবস্থায় লঞ্চ চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে এই রুটে।

আজ মঙ্গলবার ঢাকা থেকে বরগুনায় কোনো লঞ্চ যায়নি। সবশেষ গতকাল সোমবার বিকেল ৪টায় বরগুনা লঞ্চঘাট থেকে একটি লঞ্চ ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায়। 

বরগুনা নদীবন্দরের সহকারী পরিচালক নিয়াজ মোহাম্মদ দ্য ডেইলি স্টারকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এ রুটের চলাচলকারী লঞ্চের মালিকরা বলছেন, পদ্মা সেতু চালুর আগে এই পথে চলাচলকারী প্রতিটি লঞ্চে বরগুনা নদীবন্দর ঘাট থেকেই প্রতিদিন ৪০০-৫০০ যাত্রী পাওয়া যেত। কিন্তু সেতু চালুর পর ১০০ জন যাত্রীও পাওয়া যাচ্ছে না। 

পদ্মা সেতু চালুর আগে ঢাকা-বরগুনা নদীপথে ৪টি বিলাসবহুল যাত্রীবাহী লঞ্চ চলাচল করলেও, সেতু চালুর পর ১টি করে লঞ্চ চলাচল করছিল।

বরগুনা নদীবন্দর। ছবি: সোহরাব হোসেন/স্টার

এম কে শিপিং লাইনস কোম্পানির মালিক মাসুম খান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমরা আপাতত ঢাকা-বরগুনা রুটের লঞ্চ চলাচল বন্ধ রেখেছি। প্রতি ট্রিপে আমাদের দেড় থেকে দুই লাখ টাকা লোকসান হচ্ছে।'

তিনি বলেন, 'পদ্মা সেতু চালুর পর থেকেই দক্ষিণাঞ্চলের নৌ-পথগুলোতে যাত্রী সংকট দেখা দেয়। পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত আমাদের কোম্পানির সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকা তেলের দাম বাকি পড়েছে। এত লোকসান দিয়ে আর লঞ্চ চালু রাখতে পারছি না।'
     
যাত্রীরা বলছেন, লঞ্চের যাত্রা আরামদায়ক, কিন্তু সময় বেশি লাগে। নিরাপদ যাতায়াতের জন্য মানুষ এখনো লঞ্চে যাতায়াত করে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া যাত্রীরা বাসে না গিয়ে লঞ্চে যাতায়াত করেন।

এখন এ রুটে লঞ্চ চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় যাত্রীরা দুর্ভোগে পড়েছেন। 

নদীবন্দর সূত্রে জানা যায়, গতকাল সোমবার বিকেলে বরগুনা নদীবন্দর থেকে ৮০-৯০ জন যাত্রী নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায় এমভি রাজহংস-৮ লঞ্চ। পরে সেটি কাকচিড়া ও ফুলঝুড়ি ঘাট থেকে আরও প্রায় ৫০ জন যাত্রী নেয়। আগে এই ২ ঘাট থেকে ২০০-২৫০ জনের মতো যাত্রী উঠত।

এদিকে এই নৌপথে লঞ্চ চলাচল স্থায়ীভাবে বন্ধ হয়ে গেলে বরগুনার ব্যবসা-বাণিজ্য হুমকির মুখে পড়বে বলে ব্যবসায়ীরা মনে করছেন।
 
বরগুনা ব্যবসায়ী সমিতির সহসভাপতি জহিরুল হক পনু ডেইলি স্টারকে বলেন, 'লঞ্চ চলাচল বন্ধ হয়ে গেলে মালামাল পরিবহনে ব্যয় বৃদ্ধির প্রভাব পড়বে বাজারে। ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি ক্রেতারাও ক্ষতির মুখে পড়বেন।'

জানতে চাইলে নদীবন্দরের সহকারী পরিচালক নিয়াজ মোহাম্মদ বলেন, 'শুনেছি যাত্রী সংকটের কারণে লঞ্চ সার্ভিস বন্ধ করা হয়েছে। কিন্তু অফিসিয়ালি লঞ্চ মালিকদের পক্ষ থেকে আমাদের কিছু জানানো হয়নি। আমি বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।'

Comments

The Daily Star  | English

Blockade at Shahbagh demanding AL ban

The demonstration follows a sit-in that began around 10:00pm last night in front of the Chief Adviser's residence

3h ago