ড. ইউনূসের পক্ষে খোলা চিঠি

‘বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থার ওপর হস্তক্ষেপে’ ঢাবি শিক্ষক সমিতির প্রতিবাদ

ছবি: স্টার ফাইল ছবি

নোবেলজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পক্ষে বিশ্বনেতাদের চিঠিকে বাংলাদেশের স্বাধীন বিচার ব্যবস্থার ওপর হস্তক্ষেপ বলে মনে করছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি।

এ বিষয়ে আজ বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে একটি প্রতিবাদ লিপি পাঠিয়েছে তারা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. নিজামুল হক ভুইয়া ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. জিনাত হুদা প্রতিবাদ লিপিতে সই করেছেন।

এতে বলা হয়, গত ২৮ আগস্ট বেশ কয়েকজন নোবেলবিজয়ী, রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী এবং সুশীল সমাজের সম্মানিত সদস্য বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে একটি খোলা চিঠি দিয়েছেন। চিঠিতে তারা বাংলাদেশের শ্রম আইনে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে চলমান মামলা স্থগিত করার জন্য বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে আহ্বান জানিয়েছেন। একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশের বিচার ব্যবস্থার ওপর এমন অযাচিত হস্তক্ষেপের বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছে।

প্রতিবাদ লিপিতে উল্লেখ করা হয়, বাংলাদেশের সংবিধানের ৯৪ (8) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী বাংলাদেশের বিচার বিভাগ সম্পূর্ণরূপে স্বাধীনভাবে বিচারকার্য পরিচালনা করে থাকে। কাজেই এ ধরনের চিঠি প্রদানের মাধ্যমে তারা অনৈতিক, বেআইনি ও অসাংবিধানিকভাবে বাংলাদেশের স্বাধীন বিচার ব্যবস্থার ওপর হস্তক্ষেপ করেছেন বলে আমরা মনে করি। আরও উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষণীয় যে, চিঠিতে স্বাক্ষরকারী ব্যক্তিরা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের স্বার্থরক্ষায় আগ্রহী হলেও 
শ্রমিকদের মানবাধিকার ও আইনি সুরক্ষার বিষয়ে সম্পূর্ণভাবে নিশ্চুপ থেকেছেন। এ ধরনের বিবৃতি আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) এবং বাংলাদেশের আইনে শ্রমিকদের প্রদত্ত অধিকার সংক্রান্ত বিধানাবলীর সম্পূর্ণ পরিপন্থী। 

এতে জানানো হয়, শ্রম আইন-২০০৬ এর ধারা ২৩৪ অনুযায়ী গ্রামীণ টেলিকমের বিরুদ্ধে শ্রমিক কর্মচারী কল্যাণ তহবিল গঠন না করা এবং ধারা 8 (৭) ও 8 (৮) অনুযায়ী শ্রমিকদের চাকরিতে স্থায়ী না করার অভিযোগ করেছেন ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীরাই। অধিকন্তু অন্য একটি মামলায় বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালত কর্তৃক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে কর ফাঁকি দেওয়ার অভিযোগ চূড়ান্তভাবে প্রমাণিত হয়েছে। আমাদের জানামতে, খোলা চিঠিতে যেসব সম্মানিত ব্যক্তিত্বের নাম রয়েছে, তাদের দেশেও শ্রমিকদের অধিকার ও রাষ্ট্রীয় বিধি-বিধানকে সর্বোচ্চ সম্মান ও গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হয়। তাছাড়া, একই চিঠিতে বাংলাদেশের গণতন্ত্র এবং নির্বাচন সংক্রান্ত বিষয়ে যে ধরনের মন্তব্য করা হয়েছে, তা স্বাধীন সার্বভৌম একটি রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে সরাসরি হস্তক্ষেপের শামিল। মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত স্বাধীন দেশের নাগরিক হিসেবে বাংলাদেশের জনগণ এ ধরনের অবমাননাকর, অযাচিত ও বেআইনি হস্তক্ষেপ কোনোভাবেই মেনে নেবে না। এ ধরনের বিবৃতির পেছনে গোপন কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নিহিত রয়েছে বলে প্রতীয়মান হয়। আমরা সংশ্লিষ্ট সবাইকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, স্বাধীন বিচার ব্যবস্থা এবং শ্রমিকদের অধিকারের বিষয়ে সম্মান প্রদর্শনের জন্য আহ্বান  জানাচ্ছি।

Comments

The Daily Star  | English
BNP's stance on president removal in Bangladesh

BNP for polls roadmap in 2 to 3 months

Unless the interim government issues a roadmap to the next election in two to three months, the BNP may take to the streets in March or April next year, say top leaders of the party.

7h ago