যে কারণে বন্ধ হয়ে গেল ফুড ভিলেজ

ফুড ভিলেজ রেস্টুরেন্ট কর্তৃপক্ষ গতকাল আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের সব কার্যক্রম স্থগিত করেছে।
ফুড ভিলেজ রেস্টুরেন্টের এই ব্যস্ততা আর দেখা যাবে না। ছবি: সংগৃহীত

সিরাজগঞ্জের হাটিকুমরুলকে বলা হয় উত্তরবঙ্গের প্রবেশদ্বার। ঢাকা থেকে উত্তরবঙ্গের যেকোনো জেলায় যেতে হাটিকুমরুল পর্যন্ত যেতেই হয়। এরপর গাড়িগুলো চলে যায় বিভিন্ন পথে, বিভিন্ন জেলায়।

দূর দুরান্তের যাত্রীদের দীর্ঘ যাত্রা পথে বিরতির প্রধান স্থান হাটিকুমরুলের 'ফুড ভিলেজ'।

প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হাজারো মানুষ এই হাইওয়ে রেস্টুরেন্টে যাত্রা বিরতি করলেও আজ মঙ্গলবার থেকে আর কোনো গাড়ি সেখানে দাঁড়াবে না।

ফুড ভিলেজ রেস্টুরেন্ট কর্তৃপক্ষ গতকাল আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের সব কার্যক্রম স্থগিত করেছে।

এর ফলে, বেকার হয়ে পড়েছে প্রায় ৬ শতাধিক শ্রমিক-কর্মচারী।

ফুড ভিলেজের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার সাগর আহম্মেদ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, '২০১৩ সালে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) কাছ থেকে লিজ নিয়ে রেস্টুরেন্টটি করা হয়েছিল। বর্তমানে হাটিকুমরুল গোলচত্বর এলাকায় ৪ লেনের মহাসড়কের পাশাপাশি তৈরি হচ্ছে আন্তর্জাতিক মানের ইন্টারচেঞ্জ। এর মাধ্যমে গোলচত্বরের ১ কিলোমিটার আগেই ভাগ হয়ে যাবে উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের ২৭টি জেলার যানবাহন। এ কারণেই মূলত আমাদের রেস্টুরেন্টটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।'

তিনি জানান, মহাসড়কের নলকা এলাকায় পুনরায় রেস্টুরেন্টটি চালু করার চিন্তা রয়েছে। এ জন্য জায়গা খোঁজা হচ্ছে। তবে খুব শিগগির সেটা সম্ভব হবে না।

ফুড ভিলেজ বন্ধ হয়ে যাওয়ার বিষয়ে এই রুটে চলাচলকারী একটি বাসের চালক মিল্টন হোসেন বলেন, 'ঢাকা থেকে উত্তরবঙ্গে যেতে হাটিকুমরুল এলাকায় প্রতিটি যাত্রীবাহী বাস বিরতি দেয়। যাত্রীরা খাবার খাওয়া ও টয়লেট ব্যবহারের প্রয়েঅজন হলে তা এখানে সেরে নেন। ফুড ভিলেজেই বেশিরভাগ গাড়ি দাঁড়ানো। এই রেস্টুরেন্ট বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এখন যাত্রীদের জন্য বিরতি দিতে সমস্যা তো হবেই।'

ঢাকায় একটি সরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত পাবনার বাসিন্দা রুকুনুল হাসান বলেন, 'প্রতি সপ্তাহের বৃহস্পতিবার বাড়িতে আসি। যাত্রাপথে ফুড ভিলেজে বিরতি দিলে যাত্রীরা একটু ফ্রেস হতে পারেন। এখন তো আর সেটা হবে না।'

বঙ্গবন্ধু সেতু চালু হওয়ার পর থেকে উত্তরের পথে যানবাহন ও যাত্রীর চাপ বাড়তে থাকে। যাত্রাপথের বিরতির জন্য ২ দশক আগে হাটিকুমরুল এলাকায় এরিষ্ট্রক্রেট নামে একটি হাইওয়ে রেস্টুরেন্ট চালু হওয়ার পর থেকে যাত্রীরা ভ্রমণের ক্লান্তি দূর করার সুযোগ পায়।

ধীরে ধীরে যাত্রী ও পরিবহনের চাপ বাড়তে থাকায় একে একে প্রায় ডজনখানেক হাইওয়ে রেস্টুরেন্ট গড়ে উঠে। বর্তমানে চলমান উন্নয়ন প্রকল্পের কারণে এসব রেস্টুরেন্টের বেশিরভাগই বন্ধ হয়ে গেছে বা বন্ধ হওয়ার উপক্রম।

সবশেষ ফুড ভিলেজও বন্ধ হয়ে যাওয়ায় উত্তরের পথে যাওয়া যাত্রীরা খানিকটা বিপাকেই পড়েছেন।

ফুড ভিলেজের কর্মী জাহিদুল ইসলামের ভাষ্য, রেস্টুরেন্টের সব কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যাওয়ায় প্রায় ৬ শতাধিক শ্রমিক-কর্মচারী বেকার হয়ে গেছেন।

সিরাজগঞ্জ এলজিইডি নির্বাহী প্রকৌশলী সফিকুল ইসলাম বলেন, 'ফুড ভিলেজকে ২ দশমিক ৬৭ একর জায়গা ২০১৩ ও ২০১৮ সালে ৫ বছর মেয়াদী লিজ দেওয়া হয়েছিল। শর্ত অনুযায়ী লিজের মেয়াদ শেষ হয়েছে। এ ছাড়া, ইন্টারচেঞ্জ প্রকল্পে জায়গাটি প্রয়োজন হওয়ায় সরকার অধিগ্রহণের কাজও সম্পন্ন করেছে। তাই আমরা রেস্টুরেন্টের মালিকপক্ষকে জায়গাটি খালি করে দিতে বলেছি।'

Comments

The Daily Star  | English
Sakib Jamal. Photo: Crain's New York Business. Image: Tech & Startup

Bangladeshi Sakib Jamal on Forbes 30 under 30 list

Bangladeshi born Sakib Jamal has been named in Forbes' prestigious 30 Under 30 list for 2024. This annual list by Forbes is a compilation of the most influential and promising individuals under the age of 30, drawn from various sectors such as business, technology, arts, and more. This recognition follows his earlier inclusion in Crain's New York Business 20 under 20 list earlier this year.

1h ago