ডেঙ্গু দেখা দিয়েছে সবাই সাবধানে থাকেন এটাই সবচেয়ে বড় কথা: প্রধানমন্ত্রী

'বারবার তো টেলিভিশনে সবখানে বলা হচ্ছে। সারাক্ষণ কিন্তু আমরা প্রচার করে যাচ্ছি। এখন মানুষ কতটুকু সচেতন সেটা হলো বড় কথা।'
শুক্রবার বিকেলে গণভবনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: টিভি থেকে নেওয়া

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, 'শুধু নিজের ঘরবাড়ি না, ছাদ থেকে শুরু করে আশেপাশের অঞ্চলেও প্রত্যেকটা এলাকাভিত্তিক সবাই যদি একটু উদ্যোগ নেয় তাহলে ডেঙ্গুর প্রভাব থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। এটা হলো বাস্তবতা।'

আজ শুক্রবার বিকেলে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের (ইউএনজিএ) ৭৮তম অধিবেশনে যোগদানের ফলাফল সম্পর্কে গণমাধ্যমকে অবহিত করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন। যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে ১৬ দিনের সরকারি সফর শেষে বুধবার দেশে ফেরেন প্রধানমন্ত্রী।

সংবাদ সম্মেলনে জনকণ্ঠের সাংবাদিক ওবায়দুল কবির বাংলাদেশে ডেঙ্গু মহামারি চলছে উল্লেখ করে এ জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়, সিটি করপোরেশনসহ জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে উচ্চপর্যায়ের সমন্বয় কমিটি গঠন করে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার উদ্যোগ সরকার নেবে কি না জানতে চান।

এ প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'বিভিন্ন সিজনে বিভিন্ন ধরনের রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। এখানে কিন্তু প্রত্যেকের নিজেদের সচেতন হতে হবে। নিজের ঘরবাড়ি পরিষ্কার রাখা, কোথায় মশাটা জন্মাচ্ছে সেই জিনিসটা দেখা। শুধু নিজের ঘরে না, নিজের ঘরের বাইরেও রাস্তায় বা আশেপাশে পাড়া-প্রতিবেশি মিলেই কিন্তু মশার প্রজনন ক্ষেত্রগুলি যেন তৈরি হতে না পারে এ ব্যাপারে সবার কিন্তু দায়িত্ব থাকতে হবে। আমাদের সরকারের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে অবশ্যই প্রচেষ্টা আছে, প্রচেষ্টা চলছে। গবেষণাও চলছে। ইতোমধ্যে শুনলাম জাপান নাকি একটা টিকা আবিষ্কার করেছে। এগুলি তো আসলে সময়সাপেক্ষ।'

'আমি দেশবাসীকে এইটুকু বলব, সবাই নিজের ঘরবাড়ি পরিষ্কার রাখেন। মশারি টানিয়ে ঘুমান, এখন তো ফ্যাশন হয়ে গেছে কেউ মশারি টানায় না। অথচ মশারি টানানো একান্ত দরকার। খালি ওষুধ দিয়ে দিয়ে আর ওই ওষুধ দিতে দিতে মশাও চালাক হয়ে যায়, সেও ওই ওষুধ সহ্য করে ফেলে। সেজন্য প্রত্যেকের মশারি টানানো উচিত। ঘর থেকে বের হলে যেন কমোডের ঢাকনাটা ঢেকে দেওয়া। কোথাও কোনো পানি পড়ে আছে কি না সেটা দেখা, ছাদে টবে বা কোথাও পানি আছে কি না সেগুলি ফেলে দেওয়া, পানি যেন জমে থাকতে না পারে সেটা দেখা। শুধু নিজের ঘরবাড়ি না, ছাদ থেকে শুরু করে আশেপাশের অঞ্চলেও প্রত্যেকটা এলাকাভিত্তিক সবাই যদি একটু উদ্যোগ নেয় তাহলে কিন্তু ডেঙ্গুর প্রভাব থেকে মুক্তি পাওয়া যায় এটা হলো বাস্তবতা।'

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, 'সরকারের পক্ষ থেকে যেটুকু করার আমাদের সাধ্যমতো চেষ্টা করছি। চিকিৎসাব্যবস্থা দেওয়া, চিকিৎসার জন্য যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া এবং যা যা দরকার সেটা কিন্তু আমরা নিচ্ছি। এটা নিয়ে প্রচেষ্টা চলছে। যতই কমিটি করেন আর যাই করেন মানুষের সচেতনতা যতক্ষণ না আসবে নিজের ঘরবাড়ি কেউ যতক্ষণ পর্যন্ত পরিষ্কার না রাখবে, নিজেকে সুরক্ষিত করার ব্যবস্থা যতক্ষণ না করবে ততক্ষণ পর্যন্ত খুব বেশি কিছু যে করা যাবে, তা না। যেহেতু কলকাতার কথা বলছেন, হ্যাঁ তাদের অভিজ্ঞতাটা আমরা নেব, তারা কীভাবে করলো সেটা তাদের সঙ্গে আলোচনা চলছে এ ব্যাপারে আমাদের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় যথেষ্ট সচেতন।

'ডেঙ্গু দেখা দিয়েছে সবাই সাবধানে থাকেন এটাই তো সবচেয়ে বড় কথা। বারবার তো টেলিভিশনে সবখানে বলা হচ্ছে। সারাক্ষণ কিন্তু আমরা প্রচার করে যাচ্ছি। এখন মানুষ কতটুকু সচেতন সেটা হলো বড় কথা। গাড়ির টায়ার যেখানে পড়ে থাকে সেগুলোও আমরা খোঁজ নিয়েছি। কোনো একটা জিনিস পড়ে থাকলে সেখানে গিয়ে মশা জমা হয়, পানি থাকলে মশা জমা হয়। আমাদের আসলে জাতিগতভাবে একটু সচেতনতা নিজেদের সৃষ্টি করা দরকার। এটা খুব দুঃখজনক এত মানুষ ডেঙ্গুতে মারা যাচ্ছে। তবে আমাদের পক্ষ থেকে যা যা করণীয় সব তো করে যাচ্ছি,' প্রধানমন্ত্রী বলেন।

Comments

The Daily Star  | English
Effects of global warming on Dhaka's temperature rise

Dhaka getting hotter

Dhaka is now one of the fastest-warming cities in the world, as it has seen a staggering 97 percent rise in the number of days with temperature above 35 degrees Celsius over the last three decades.

10h ago