‘একদিকে আইনশৃঙ্খলা সংস্থার ওপরে স্যাংশন দেবে, আবার নিরাপত্তা চাইবে’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, 'একদিকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থার ওপরে স্যাংশন দেবে, আরেকদিকে আবার তাদের কাছ থেকে নিরাপত্তা চাইবে। এটা আবার কেমন কথা?'
আজ শুক্রবার বিকেলে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
সংবাদ সম্মেলনে বেসরকারি চ্যানেল ডিবিসির সাংবাদিক বিকাশ বিশ্বাস প্রশ্ন করেন, ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস অভিযোগ করেছেন তার এবং তার দূতাবাসের কর্মীদের নিরাপত্তায় হুমকি আছে। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্য জানতে চেয়েছেন তিনি।
এর জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'আমি উপদেষ্টার সামনে আমার অ্যাম্বাসেডর যে আছে আমেরিকায় তাকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম যে আমেরিকা সরকার থেকে আমার অ্যাম্বাসেডরকে কী ধরনের নিরাপত্তা দেওয়া হয়? ব্যক্তিগতভাবে কোনো নিরাপত্তাই দেওয়া হয় না। তিনি বললেন যে শুধু আমাদের অ্যাম্বাসিতে তারা কিছু নিরাপত্তা দেয়। প্রত্যেক অ্যাম্বাসিতে একটু নিরাপত্তা ব্যবস্থা আছে। সেখানে আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বললেন, আমাদের আমেরিকা অ্যাম্বাসিতে নিরাপত্তার জন্য ১৫৮ জন পুলিশ ডেপ্লয় করা আছে। আর এখানে যে অ্যাম্বাসেডর আছে তার জন্য গানম্যান দেওয়া আছে, সিভিল ড্রেসে। কাজেই তার নিরাপত্তার তো তেমন ঘাটতি নাই।
'হ্যাঁ হোলি আর্টিজেনের পর কয়েকটা দেশ তারা শঙ্কিত ছিল তখন তাদের কিছু আলাদা ব্যবস্থা করা হয়েছে। আমাদের দেশে হোলি আর্টিজেনের পর আর কোনো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড হয়নি। আর তাছাড়া অন্যান্য অ্যাম্বাসিও আছে তখন তো সবাইকেই দিতে হবে। তাদেরও ডিমান্ড, অনেকে বলে যে ওরা পেলে আমরা পাবো না কেন? এখন সেরকম কোনো অসুবিধা নাই বলেই আমরা কিন্তু… আমাদেরও পুলিশ দরকার এখন সারা বাংলাদেশের জন্য। কাজেই সেটা উইথড্র করা হয়েছে কিন্তু তার সাথে তো গানম্যান দেওয়া আছে। এছাড়া তাদের নিজস্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থা অ্যাম্বাসির ভেতরেও আছে। কাজেই এখানে এটা নিয়ে প্রশ্ন বারবার হচ্ছে কিন্তু এর কোনো অর্থ নেই,' বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, 'আমার অ্যাম্বাসেডর তো কোনো নিরাপত্তা পায় না। আমেরিকাতে তো প্রতিদিনই গুলি হয়। স্কুলে গুলি, শপিংমলে গুলি, খাবার দোকানে গুলি, রেস্টুরেন্টে গুলি, বাড়ির ভেতরে যেয়ে গুলি করে মানুষ মেরে ফেলে। আমরা তো এমনিতে শঙ্কায় থাকি আমাদের দেশের মানুষকে নিয়ে। কতজন বাঙালিই তো মারা গেছে। আমাদের বাঙালি এক মহিলা রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিল তাকে ছুরি মেরে ফেলে দিল। আমাদের একজন মুক্তিযোদ্ধা মসজিদ থেকে ইমামতি করে বের হয়েছে। তাকে গুলি করে মারলো। আমার আওয়ামী লীগের ভাইস প্রেসিডেন্ট নজরুলকে মারল। শিশুদের ধরে মারছে। এরকম যত্রতত্র গোলাগুলি। এটা তাদের নিজেদের দেশেরটা তো নিজেদের সামাল দেওয়া উচিত আগে। ওইখানে এই নিরাপত্তা সমস্যা। আমাদের দেশে এই সমস্যাটা তো নাই।
'আমরা সন্ত্রান্সবাদ, জঙ্গিবাদকে জিরো টলারেন্স ঘোষণা দিয়েছি। সেই থেকে আমরা অন্তত এই কয় বছর তো ধরে রাখতে পেরেছি। আমাদের যারা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা তারা যথেষ্ট ভালো কাজ করছে। একদিকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থার ওপরে স্যাংশন দেবে, আরেকদিকে আবার তাদের কাছ থেকে নিরাপত্তা চাইবে। এটা আবার কেমন কথা? আমি সে প্রশ্নটাও করেছি,' বলেন তিনি।
Comments