‘জারের ঠ্যালায় খ্যাতোত কাজ কইরবার পাবার নাইকছোং না’

লালমনিরহাট সদর উপজেলার বনগ্রাম এলাকায় ঘনকুয়াশা আর ঠান্ডার মধ্যে ফসলের খেতে কাজ করছেন কৃষক। সোমবার ভোরে তোলা ছবি। ছবি: দিলীপ রায়/ স্টার

ঘনকুয়াশা আর কনকনে ঠান্ডায় বিপর্যস্ত উত্তরের লালমনিরহাট ও কুড়িগ্রামের জনজীবন। রোববার থেকে দেখা মিলছে না সূর্যের। এতে ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক কাজকর্ম। নিদারুন কষ্টে পড়েছেন ব্রহ্মপুত্র, দুধকুমার, গঙ্গাধর, তিস্তা ও ধরলা নদী তীরবর্তী, চরাঞ্চলের মানুষ।

শীতার্তরা বলছেন, কুয়াশার চাদরে ঢেকে থাকছে চারদিক। দিনের বেলাতেও যানবাহন চলাচল করছে হেড লাইট জ্বালিয়ে। দিনভর সূর্যের দেখা না মেলায় ঠান্ডার প্রকোপ আরও বেড়েছে।

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার ধরলা নদীর চর সোনাইকাজী এলাকার কৃষক নবির হোসেন (৬৫) ডেইলি স্টারকে বলেন, 'হামরাগুলা খ্যাতোত কাজ কইরবার পাবার নাইকছোং না জারের ঠ্যালায়। জারের ঠ্যালায় হামরাগুলার শরিল টোপলা নাগি যাবার নাইকছে। জারোত হাত-পা টাডারি নাগে। কাইও কাইও খ্যাতোত কাজ কইরবার গ্যাইলেও ম্যালাক্ষণ থাইকবার পায় না।'

লালমনিরহাট সদর উপজেলার তিস্তা নদীর চর কালমাটি এলাকার শীতার্ত দিনমজুর মেহের আলী (৫৫) বলেন, 'হামারগুলার কম্বল নাই। জাইবরা-জঙ্গল জড়ো করি আগুন ধরে দিয়া শরীল গরম কইরবার নাগছি।'

কুড়িগ্রামের রাজারহাট কৃষি আবহাওয়া পযর্বেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার সোমবার সকালে দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, আজ সকাল ৯টায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৪ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। তবে রাতে ঠান্ডার প্রকোপ আরও বেড়ে যায়। দিনভর কুয়াশা থাকায় রোববার থেকে সূর্যের আলো দেখা যাচ্ছে না। আগামী কয়েকদিন আবহাওয়া পরিস্থিতি এভাবে চলতে থাকবে। আগামী ২০ ডিসেম্বর থেকে শৈত্যপ্রবাহ দেখা দিতে পারে।

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন অফিস সূত্র জানায়, লালমনিরহাটে ৫ উপজেলায় শীতার্ত দুঃস্থদের জন্য সরকারিভাবে ১৯ হাজার ২৭০টি ও কুড়িগ্রামের ৯ উপজেলার জন্য ৪৫ হাজার কম্বল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। সরকারিভাবে বরাদ্দকৃত কম্বল বিতরণের জন্য সংশ্লিষ্ট উপজেলাগুলোতে পাঠানো হয়েছে।

কুড়িগ্রাম জেলা ত্রাণ ও পুর্নবাসন কর্মকর্তা আব্দুল হাই সরকার ডেইলি স্টারকে বলেন, উপজেলা প্রশাসন ও ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে সরকারি বরাদ্দের কম্বল বিতরণ করা হচ্ছে। প্রয়োজনে আরও বরাদ্দ চেয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেওয়া হবে বলে তিনি জানান।

Comments

The Daily Star  | English

What are we building after dismantling the AL regime?

Democracy does not seem to be our focus today. Because if it were, then shouldn’t we have been talking about elections more?

9h ago