নির্বাচনজুড়ে বিটিভির পর্দা ছিল কাদের-হাছানের দখলে

ওবায়দুল কাদের ও হাছান মাহমুদ। ছবি: সংগৃহীত

রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম বাংলাদেশ টেলিভিশনের (বিটিভি) প্রধান খবরে নির্বাচনকালীন এক মাসে সবচেয়ে বেশি দেখা গেছে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে।

গত ৫ ডিসেম্বর থেকে ৫ জানুয়ারি পর্যন্ত পর্দায় তার উপস্থিতি ছিল মোট ১১৫ মিনিট ৫১ সেকেন্ড, যা অন্য যেকোনো নেতার চেয়ে বেশি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিটিভির রাত ৮টার খবরে মোট ১০৭ মিনিট ২০ সেকেন্ড সময় বরাদ্দ পেয়েছেন।

এই এক মাসে বিটিভির রাত ৮টার প্রধান খবর বিশ্লেষণ করে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) জানিয়েছে, রাষ্ট্রীয় এই টেলিভিশন চ্যানেলটি নির্বাচন সম্পর্কিত মোট ৪৯৩ মিনিট সংবাদ প্রচার করেছে। যার মধ্যে ২৩ দশমিক ৬ শতাংশ ওবায়দুল কাদের এবং ২১ দশমিক ৮ শতাংশ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তৎকালীন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বরাদ্দ পেয়েছেন।

বিটিভির বিজ্ঞাপনের মূল্যহার অনুযায়ী ওবায়দুল কাদের জন্য বরাদ্দকৃত সময়ের দাম ১ কোটি ৪ হাজার টাকা। যা প্রধানমন্ত্রী ও তৎকালীন তথ্যমন্ত্রীর জন্য ৯৬ লাখ টাকা করে।

এই সময়ে নির্বাচন কমিশনের সংবাদ প্রচার করা হয়েছে ৯ শতাংশ সময় ধরে। নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণার খবর প্রচার হয়েছে ২০ শতাংশ সময় ধরে, যার বেশিরভাগ আবার বরাদ্দ ছিল আওয়ামী লীগ প্রার্থী বা আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থীদের জন্য।

নির্বাচন কমিশনের তফসিল অনুযায়ী, আনুষ্ঠানিক প্রচারণার সময় ছিল ১৮ ডিসেম্বর থেকে ৫ জানুয়ারি পর্যন্ত।

এই সময়সীমার মধ্যে মোট প্রচারিত ৩৭১ মিনিটের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সময় বা প্রায় ৯৫ মিনিট নির্বাচনে প্রার্থীদের প্রচারণার সংবাদ প্রচার করা হয়, যার বেশিরভাগ বরাদ্দ ছিল আওয়ামী লীগ প্রার্থী বা আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থীদের জন্য।

এ ছাড়া, প্রধানমন্ত্রীকে দেখা গেছে ৮৯ মিনিট, ওবায়দুল কাদেরকে ৬৫ মিনিট, তৎকালীন তথ্যমন্ত্রীকে ৬৩ মিনিট এবং নির্বাচন কমিশন সংক্রান্ত খবর ৩৩ মিনিট।

আজ বুধবার টিআইবি তাদের কার্যালয়ে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রক্রিয়া ট্র্যাকিং শীর্ষক এক গবেষণা প্রতিবেদনের প্রাথমিক ফলাফল ঘোষণা করে।

গবেষক নেওয়াজুল মওলা বলেন, বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলগুলোও সার্বিকভাবে ক্ষমতাসীন দলের সহায়ক অবস্থান গ্রহণ করে। হরতাল-অবরোধ-অগ্নিকাণ্ড ও নির্বাচন বর্জনের খবরসহ বিএনপি গণতন্ত্রের জন্য হুমকি—এ বিষয়ক সরকার দলীয় নেতাদের বক্তব্য অধিক প্রচার করা হয়। সরকারের উন্নয়ন কার্যক্রমের প্রচার এবং নির্বাচনে নৌকা ও আওয়ামী লীগ দলীয় স্বতন্ত্র প্রার্থীদের প্রচারণা বেশি দেখানো হয়।

তিনি বলেন, 'নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দল কর্তৃক রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন টিভির একচেটিয়া ব্যবহার করা হয়েছে। নির্বাচনে অনুমোদিত প্রচারণার সময়সীমার মধ্যেও ব্যাপকভাবে সরকারের উন্নয়ন কার্যক্রম সংক্রান্ত খবর প্রচার করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের স্বাধীনতা ও কমিশনের সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন করার সক্ষমতা সংক্রান্ত খবর প্রকাশ করা হয়েছে।'

 

Comments

The Daily Star  | English
future of bangladesh after banning awami league

What are we building after dismantling the AL regime?

Democracy does not seem to be our focus today. Because if it were, then shouldn’t we have been talking about elections more?

15h ago