লালমনিরহাট ও কুড়িগ্রাম

ঠান্ডায় গবাদি পশু পালনে হিমশিম, কমেছে দুধের উৎপাদন

ঠান্ডায় গবাদি পশু পালন
লালমনিরহাট সদর উপজেলার কুলাঘাট গ্রামে ঠান্ডার কারণে গবাদি পশুগুলোকে বস্তা পড়িয়ে রাখা হয়েছে। পশুগুলো ঠিকমতো খাবার খাচ্ছে না। ছবি: এস দিলীপ রায়/স্টার

ঠান্ডা আর কুয়াশার কারণে গবাদি পশু পালনে মারাত্মকভাবে হিমশিম খাচ্ছেন কুড়িগ্রামে ও লালমনিরহাটের চাষিরা। গবাদি পশুগুলো পর্যাপ্ত খাবার না পাওয়ায় পুষ্টিহীনতায় ভুগতে শুরু করেছে। ঠান্ডার কারণে ঠিকমতো পানিও পান করতে পারছে না।

এ ছাড়াও, ঠান্ডার কারণে গবাদি পশুর ক্ষুরারোগসহ শীতজনিত অন্যান্য রোগ দেখা দেওয়ার আশঙ্কা করছেন চাষিরা। গরু ও মহিষ প্রয়োজনীয় খাবার না পাওয়ায় দুধের উৎপাদনও কমে গেছে বলে জানিয়েছেন চাষিরা।

লালমনিরহাট সদর উপজেলার ধরলা নদীর চর কুলাঘাট গ্রামের কৃষক বদিয়ার রহমান (৬০) দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ঠান্ডা ও কুয়াশার কারণে ছয় গরু ও আট ছাগলকে ঠিকমতো খাবার দিতে পারছি না। ঠান্ডার কারণে গবাদি পশু ঠিকমতো পানি পান করতে পারছে না। গরুগুলো শীতজনিত জ্বর ও সর্দিতে আক্রান্ত হচ্ছে।'

তিনি জানান, গত তিন মাস ধরে তার ছয় গরুর মধ্যে তিনটি থেকে দুধ পাচ্ছেন। দুই সপ্তাহ আগেও তিনটি গরু থেকে প্রতিদিন গড়ে নয় লিটার দুধ পেয়েছিলেন। এখন পাচ্ছেন সাড়ে পাঁচ থেকে ছয় লিটার।

কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে জোড়গাছ এলাকার কৃষক সোলেমান আলী (৫৫) ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ঠান্ডার কারণে গরুর ক্ষুরা রোগ দেখা দেওয়ার আশঙ্কায় আছি। চারটি গরুর মধ্যে একটির ক্ষুরা রোগের লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। ঠান্ডা ও কুয়াশার কারণে চার গরু, দুই মহিষ ও ছয় ছাগল মাঠে নিয়ে ঘাস খাওয়াতে পারছি না। বাড়িতেই তাদেরকে কেনা খাবার খাওয়াতে হচ্ছে। আর কয়েকদিন শীত ও কুয়াশা থাকলে চরম ক্ষতির মুখে পড়তে হবে।'

লালমনিরহাট ও কুড়িগ্রাম জেলা প্রাণিসম্পদ অফিস সূত্র জানিয়েছে, দুই জেলায় প্রায় ২৭ লাখ গরু-ছাগল ও মহিষ আছে। প্রায় তিন লাখ পরিবার এসব গবাদি পশুপালন থেকে আয় করে থাকেন। ঠান্ডার কারণে চাষিরা গবাদি পশুপালনে হিমশিম খাচ্ছেন।

লালমনিরহাট জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা (ডিএলও) ডা. জাহাঙ্গীর হোসেন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ঠান্ডায় গবাদি পশু পালনে চাষিরা হিমশিম খাচ্ছেন ঠিকই তবে এখনো ক্ষুরা রোগের বিস্তার ঘটেনি। শীতজনিত জ্বর ও সর্দি হলেও তা চিকিৎসায় ভালো হচ্ছে।'

ঠান্ডার কবল থেকে গবাদি পশু রক্ষা করতে গরুকে চটের বস্তা দিয়ে ঢেকে রাখার পরামর্শ দেন তিনি। এ ছাড়া, গোয়াল ঘরের চারদিক পলিথিন দিয়ে ঢেকে রাখলে গবাদি পশু ঠান্ডার প্রকোপ থেকে রক্ষা পাবে বলেও তিনি জানান।

Comments

The Daily Star  | English

No justifiable reason to delay nat'l polls beyond Dec: Salahuddin

We have been able to make it clear that there is not even a single mentionable reason to hold the election after December, says the BNP leader

4h ago