প্রকল্প বাস্তবায়নে অহেতুক কালক্ষেপণ যেন আর না হয়: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: বাসস

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের জন্য প্রয়োজন এমন গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণের পাশাপাশি যেগুলোতে কম অর্থের প্রয়োজন সেগুলো দ্রুত সম্পন্ন করার জন্য সকল মন্ত্রণালয়কে তাগিদ দিয়েছেন।

তিনি বলেন, 'আর্থসামাজিক উন্নয়নের জন্য যে প্রকল্পগুলো গুরুত্বপূর্ণ ও গ্রহণযোগ্য সেগুলো আমাদের নিতে হবে। প্রকল্প বাছাই করার সময় সে বিষয়টা আমাদের একটু দেখা দরকার যাতে আমরা আমাদের লক্ষ্যটা অর্জন করতে পারি।'

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ সকালে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় দেওয়া প্রারম্ভিক ভাষণে একথা বলেন। তিনি বলেন, যেসব প্রকল্প অল্প খরচ করলেই দ্রুত শেষ হয়ে যাবে সেগুলো সম্পন্ন করে ফেলা উচিত। তাহলে আমরা আবার নতুন প্রকল্প নিতে পারব। কিছু কিছু প্রকল্পের মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়েছে, তবে আমার মনে হয়, সেগুলোও দ্রুত সম্পন্ন করা উচিত। কারণ দ্রুত শেষ না করলে খরচ, যেমন বাড়ে তেমনি অহেতুক কালক্ষেপণ হয়, সেটা যেন আর না হয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি বলছি আর্থসামাজিক উন্নয়নের জন্য যে প্রকল্পগুলো গুরুত্বপূর্ণ ও গ্রহণযোগ্য সেগুলো আমাদের নিতে হবে। প্রকল্প বাছাই করার সময় সে বিষয়টা আমাদের একটু দেখা দরকার। যাতে আমরা আমাদের লক্ষ্যটা অর্জন করতে পারি।

তিনি বলেন, আজকে বৈশ্বিক কারণেই কিছু অর্থনৈতিক চাপ রয়েছে তাছাড়া আমরা খুব ভালভাবেই এগোচ্ছিলাম। আমাদের প্রবৃদ্ধিও সেভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছিল। দেশের উন্নয়নটা তরান্বিত হচ্ছিল। এ সময় কোভিড-১৯ অতিমারী আসায় বিশ্বব্যাপী সবকিছু স্থবির হয়ে পড়ল। এরপর যখন আমরা এটি মোকাবিলা করে এর থেকে উত্তরণ ঘটানোর চেষ্টা করে যাচ্ছি তখনই এল ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ, স্যাংশন ও কাউন্টার স্যাংশন, এখন আবার গাজায় যেভাবে গণহত্যা চলছে এবং আক্রমণ চলছে, বিশ্বব্যাপীই একটি অশান্ত পরিবেশ। যার কারণে জিনিষপত্রের মূল্যবৃদ্ধির পাশাপাশি পণ্য পরিবহন ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে। সময়ও বেশি লেগে যাচ্ছে। বহির্বিশ্বের নানা কারণে চাপটা আমাদের ওপরও এসে পড়েছে।

তিনি দেশের প্রতি ইঞ্চি অনাবাদী জমিকে চাষের আওতায় আনার মাধ্যমে সার্বিক উৎপাদন বাড়ানোয় তার আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, এতে ভালো ফল পাওয়া যায়।

তিনি এ সময় বাড়ির পাশের পরিত্যক্ত জমিতে চাষাবাদের পাশাপাশি জলাভূমিতে মাছ চাষের ওপর গুরুত্ব দিয়ে বলেন, তার নিজের এলাকায় (টুঙ্গিপাড়া-কোটালিপাড়া) সমবায় ভিত্তিক চাষাবাদের ব্যবস্থা করেছেন। যারা অনুপস্থিত মালিক তারা একটা অংশ পাবে কিন্তু তাদের অংশটা একটু কম হবে, যারা শ্রম দেবে তারা একটা অংশ পাবে আর সমবায়ের জন্য একটা অংশ থাকবে। যাতে করে খরচটা চালানো যায়। আমি এটা করে যাচ্ছি এবং আমি মনে করি এটাতে সফল হতে পারলে এবং সারা বাংলাদেশে এটা চালু করে দিতে পারলে কোন জমি আর অনাবাদী থাকবে না।

তিনি বলেন, কিছু কিছু জিনিস আমাদের বাইরে থেকে আনতেই হয়। তারপরেও সার্বিক উৎপাদন বাড়ানো গেলে এর শুভফলটা জনগণ পাবে, অন্যের ওপর আর নির্ভরশীল হয়ে থাকতে হবে না।  তিনি উদাহরণ দেন, তার সরকার উদ্যোগ গ্রহণ করায় এখন দেশের প্রয়োজনের ৪০ শতাংশ পেঁয়াজ দেশেই উৎপাদন হচ্ছে। ভোজ্যতেলের ৯০ শতাংশ আমদানি নির্ভর। কিন্তু এবারের আমাদের যে পরিমাণ সরিষা হয়েছে তাতে ৪০ শতাংশ আমরা এই তেল দিয়ে বা ধানের তুষ থেকে রাইস ব্রান ওয়েল উৎপাদন করছি, এভাবেই ধীরে ধীরে নিজেদের স্বয়ংসম্পূর্ণ করে তোলাই আমাদের লক্ষ্য। তাছাড়া মাছ, মাংস, দুধ ডিমের উৎপাদনও বেড়েছে এবং মানুষের এগুলো গ্রহণের হারও বেড়েছে। যারা আগে আমিষ খাবার কথা চিন্তা করত না, এখন তারাও নিচ্ছেন।

শেখ হাসিনা বলেন, আমি মনে করি, অবকাঠামোগত উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে একেবারে গ্রাম পর্যায় পর্যন্ত উন্নয়নটা আমাদের দরকার। কাজেই সেদিকে লক্ষ্য রেখেই আমাদের পরিকল্পনা নিতে হবে।

Comments

The Daily Star  | English
bangladesh to clear rooppur dues

Govt moves to clear Rooppur dues to Russia after US waiver

Central bank seeks nod from Washington after Russia's reply

11h ago