পদ্মহেম ধামে সাধুসঙ্গে লালনের গান

ছবি: তানজিল হাসান/স্টার

অনন্য একটি নাম পদ্মহেম ধাম। মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার ইছামতি নদীর পাড়ে ছোট্ট দোসরপাড়া গ্রামে এর অবস্থান।

গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে সরেজমিনে সেখানে গিয়ে দেখা যায়, নদীর পাড়ে খোলা মাঠে অশ্বথ গাছের নিচে ভিড় করেছে কিছু মানুষ। তাদের উদ্দেশ্য, ফকির লালন সাঁইয়ের গান শুনবেন। কুষ্টিয়াসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে গান শুনাতে এসেছেন সাধকরা।

সন্ধ্যায় নানা আনুষ্ঠানিকতা শেষে শ্রোতাদের এই অপেক্ষার পালা শেষ হয়।

বীর মু্ক্তিযোদ্ধা শাহ সুফি দরবেশ নহির ফকির শুরু করেন লালনের গান। 'রাখিলেন সাঁই কূপজল করে/ আন্দেলা পুকুরে, কবে হবে সজল বরষা/ চেয়ে আছি সেই ভরসা…'

গানের সাথে আন্দোলিত হয়ে উঠল ভক্তরা। প্রায় ৮ মিনিট লাগল প্রথম গান শেষ হতে। এরপর ধরলেন 'সামান্যে কি তার মর্ম জানা যায়, হৃদ-কমলে ভাব দাঁড়ালে অজান খবর আপনি হয়…'

আশেপাশের নিস্তব্ধতা ভেদ করে দূরপ্রান্তেও পৌঁছে যায় সে গান। গান শুরু আগে নহির ফকির দর্শক-শ্রোতাদের উদ্দেশে বলেন, 'আমরা জন্মসূত্রে জ্ঞানান্ধ। তাই মানুষরূপে প্রতিষ্ঠা পেতে হলে জ্ঞান সঞ্চয় করা দরকার। সেই জ্ঞান সঞ্চয়ের জন্য একজন শুদ্ধ জ্ঞানের অধিকারী সৎ চরিত্রবান ব্যক্তিত্বের দরকার আছে যিনি হবেন আমাদের গুরু। কারণ, গুরুজ্ঞান ছাড়া কেউ মানুষ হতে পারে না।'

পদ্মহেম ধামের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি কবির একতারা শাহ বলেন, 'লালন ফকির গানের মাধ্যমে মানুষের মনকে সংস্কার করেছেন। ২০০৩ সালে কুষ্টিয়া গিয়ে গান শুনে আমি অনুপ্রাণিত হয়ে মুন্সীগঞ্জে পদ্মহেম ধাম প্রতিষ্ঠা করি। লালনের গান থেকেই পদ্মহেম ধাম শব্দগুচ্ছ নিয়ে এর নামকরণ করি। আমাদের উদ্দেশ্য একটাই। পদ্মহেম ধামের মতো আরও আখড়া তৈরি হোক। লালনের গানের মাধ্যমে মানুষের মধ্যে প্রেম তৈরি হোক। ভেদাভেদ দূর হোক।'

গতকাল মঙ্গলবার পদ্মহেম ধামে অনুষ্ঠিত ২০তম সাধুসঙ্গের আসর। এর উদ্বোধক ছিলেন সাংস্কৃতিক বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের সচিব খলিল আহমদ। দিনব্যাপী নানা অনুষ্ঠানের পর মধ্যরাতে গান শেষে এ সাধুসঙ্গ শেষ হয়।

Comments

The Daily Star  | English

Opening aid corridors, leasing out ports not this govt’s job

Making decisions on a “humanitarian corridor” to Rakhine and leasing out container terminal of Chittagong Port to foreign companies are not the interim government’s job, said BNP acting chairman Tarique Rahman last night.

3h ago