হোটেল-মোটেলে বিশেষ ছাড়, তবুও পর্যটকশূন্য কুয়াকাটা

সৈকতের ঝাউবাগান ও গঙ্গামতি পয়েন্টেও একই দৃশ্য দেখা গেছে।
কুয়াকাটা সৈকত
বিশেষ ছাড়ের পরও পর্যটকশূন্য কুয়াকাটা সৈকত। ১৮ মার্চ ২০২৪। ছবি: সোহরাব হোসেন/স্টার

পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকতে গত ৮ ও ৯ মার্চ সাপ্তাহিক ছুটির দিনে পর্যটকের ঢল নেমেছিল। কিন্তু রমজান শুরুর মাত্র ১০ দিনে অনেকটা জনশূন্য হয়ে পড়েছে দেশের অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটনস্থলটি।

ঢাকা থেকে প্রায় ২৫০ কিলোমিটার দক্ষিণে বঙ্গোপসাগরের তীরে এ সৈকতের প্রায় দেড় শ হোটেল, রিসোর্ট, গেস্টহাউস ও কটেজ খালি পড়ে আছে। রোজার প্রথম দিন থেকে শহরের শতাধিক হোটেল-রেস্তোরাঁ বন্ধ। দুশ্চিন্তায় ব্যবসায়ীরা।

গত সোমবার দুপুরে সৈকতের জিরো পয়েন্ট এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, সুদীর্ঘ এই সৈকতে ৮-১০ জন পর্যটক। গরমের কারণে তাদের খুব বেশি ঘোরাঘুরি করতে দেখা যায়নি।

সৈকতজুড়ে পর্যটকদের আরামে বসার জন্য কমপক্ষে ৩০০টি চেয়ার-ছাতা খালি পড়ে ছিল। আশেপাশের অধিকাংশ দোকান বন্ধ।

ছবি তুলে দেওয়া ভ্রাম্যমাণ আলোকচিত্রীরা পর্যটকদের অপেক্ষায় এদিক-সেদিক ঘোরাফেরা করছেন। সৈকতের ঝাউবাগান ও গঙ্গামতি পয়েন্টেও একই দৃশ্য দেখা গেছে।

সৈকতের চেয়ার-ছাতা ব্যবসায়ী আলমগীর হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গত ৯-১০ দিন আগেও বিশেষ করে শুক্র ও শনিবার কুয়াকাটা কমপক্ষে ৫০ হাজার পর্যটক এসেছিল। এখন পর্যটক না থাকায় সৈকতকেন্দ্রীক পর্যটন ব্যবসায় ধস নেমেছে।'

কুয়াকাটা হোটেল-মোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোতালেব শরীফ ডেইলি স্টারকে জানান, বেশিরভাগ হোটেল-মোটেল ও রেস্তোরাঁয় সংস্কার কাজ চলছে। এগুলোর প্রায় অর্ধেক কর্মচারীকে ঈদের অগ্রিম বেতন-বোনাস দিয়ে ছুটিতে পাঠানো হয়েছে।

তিনি বলেন, 'রোজার প্রথম দিন থেকে সৈকত এলাকার শতাধিক হোটেল খালি পড়ে আছে। হোটেলগুলোয় এখন ধারণক্ষমতার মাত্র ৮-১০ শতাংশ রুমে পর্যটক আছে। আশা করছি ঈদুল ফিতরে টানা ৭-৮ দিনের ছুটিতে পর্যটকের ঢল নামবে, তখন ব্যবসা চাঙা হবে।'

বিশেষ ছাড়

কুয়াকাটা সৈকতের কয়েকটি এলাকার কমপক্ষে ২০টি হোটেল-মোটেল, গেস্টহাউস, রিসোর্ট ও কটেজে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সেগুলোর প্রায় ৯০ শতাংশ রুম খালি। কোনো কোনোটি পুরোপুরি খালি। এর মধ্যে কয়েকটি হোটেলের মূল ফটকে তালা ঝুলতে দেখা গেছে।

সিকদার রিসোর্টের সেলস অব হেড আশিকুর রহমান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমাদের ১৮৪টি কক্ষের ৯২ শতাংশ খালি। প্রথম রমজান থেকে ২৮ রমজান পর্যন্ত নির্ধারিত সেবামূল্যের ৫৫ শতাংশ ছাড় দিয়েছি। তবু পর্যটক পাচ্ছি না।'

সৈকতের ইলম পার্ক রিসোর্টের মালিক রুম্মান ইমতিয়াজ তুষার ডেইলি স্টারকে জানান, তারা পর্যটক আকৃষ্ট করতে ৫০ শতাংশ ছাড় দিয়েছেন। কাঙ্ক্ষিত পর্যটক না থাকায় অনেকেই লোকসানে আছেন।

অনেক হোটেল-মোটেলের কর্মচারীদের ছুটি দেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।

পর্যটক টানতে পুরো রোজায় হোটেল-মোটেলগুলোয় কক্ষ ভাড়ার বিপরীতে সর্বোচ্চ ৬০ শতাংশ ছাড় ঘোষণা করা হয়েছে বলে জানান হোটেল-মোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোতালেব শরীফ।

তিনি বলেন, 'ছাড়ের পর এক হাজার টাকার একটি কক্ষের ভাড়া পড়ছে ৪০০-৫০০ টাকা। এখানকার প্রায় দেড়শ হোটেল-মোটেলে দৈনিক ধারণক্ষমতা প্রায় ৪০ হাজার জন।'

'আশা করি ঈদে এখানে পর্যটকের ঢল নামবে,' বলেন তিনি।

Comments

The Daily Star  | English

DMCH doctors threaten strike after assault on colleague

A doctor at Dhaka Medical College Hospital (DMCH) was allegedly assaulted yesterday after the death of a private university student there, with some of his peers accusing the physicians of neglecting their duty in his treatment

5h ago