বাংলাদেশ

উত্তরের পথে ঈদযাত্রা স্বস্তিদায়ক হবে, আশা বঙ্গবন্ধু সেতু কর্তৃপক্ষের

স্বাভাবিক সময়ে প্রতিদিন প্রায় ১৫-২০ হাজার যানবাহন বঙ্গবন্ধু সেতু পার হলেও, ঈদের সময় তা তিনগুণ বেড়ে যায়।
বঙ্গবন্ধু সেতু
বঙ্গবন্ধু সেতু। ফাইল ফটো

ব্যাপক প্রস্ততি ও পূর্ব অভিজ্ঞতার আলোকে বিভিন্ন ব্যবস্থা নেওয়ার উল্লেখ করে সড়ক পথে বঙ্গবন্ধু সেতু হয়ে উত্তরাঞ্চলের এবারের ঈদযাত্রা ভোগান্তিমুক্ত ও স্বস্তিদায়ক হবে বলে আশা করছে বঙ্গবন্ধু সেতু কর্তৃপক্ষ।  

জানা যায়, স্বাভাবিক সময়ে প্রতিদিন প্রায় ১৫-২০ হাজার যানবাহন বঙ্গবন্ধু সেতু পার হলেও, ঈদের সময় তা তিনগুণ বেড়ে যায়। এতে সেতুর উভয় প্রান্তে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয় এবং ভোগান্তিতে পড়েন ঘরে ফেরা মানুষ।  

বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের বঙ্গবন্ধু সেতু সাইট অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসানুল হক খান পাভেল দ্য ডেইলি স্টারে জানান, ঈদে মানুষের নির্বিঘ্নে বাড়ি যাওয়া নিশ্চিত করতে এবং ঈদের আগে সেতু ও সেতুর সংযোগ সড়ক যানজটমুক্ত রাখতে নানা পরিকল্পনা নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। 

তিনি বলেন, 'এবার ১৩ কিলোমিটার বঙ্গবন্ধু সেতুর পূর্ব লিংক রোডের মধ্যে মোট পাঁচ কিলোমিটার চারলেন সুবিধা সুবিধা নিশ্চিত করা হবে। এর মধ্যে এলেঙ্গার পর এক কিলোমিটার গত ঈদের সময় করা হয়েছিল। এবার এলেঙ্গার পর আরও এক কিলোমিটার এবং জোকারচর থেকে সেতুর পূর্ব প্রান্ত পর্যন্ত আরও তিন কিলোমিটার চারলেন সুবিধা পাওয়া যাবে।'

'এছাড়া পরিস্থিতি বিবেচনায় উত্তরমুখী এই পূর্ব লিংক রোডকে ওয়ানওয়ে করে দেওয়া হতে পারে। অপরদিকে ঢাকামুখী যানবাহনগুলোকে সেতু পার হওয়ার পর ভূঞাপুর রোড দিয়ে বাইপাস করে দেওয়া হতে পারে,' বলেন তিনি।

এই প্রকৌশলী জানান, সেতুর উভয় প্রান্তে এবারও মোটরসাইকেলের জন্য একটি করে আলাদা টোল বুথ এবং অন্যান্য যানবাহনের জন্য প্রতি প্রান্তে ছয়টি করে বুথের সঙ্গে আরও একটি করে বুথ যোগ হবে।  

এছাড়া, এবার সেতুর উপর প্রতি এক কিলোমিটার পর পর লাইনম্যান মোতায়েন রাখা হবে। এই লাইনম্যানরা সেতুর উপর যেকোনো দুর্ঘটনা ঘটলে দুর্ঘটনাকবলিত গাড়িকে উদ্ধারের ব্যবস্থা করতে পারবে। 

সেতুর উপর কোনো গাড়ি নষ্ট হলে বা দুর্ঘটনাকবলিত হলে সেটিকে সারাতে রেকার নিয়ে যেতে অনেক সময় লেগে যায় এবং এরমধ্যে যানজট তীব্র আকার ধারণ করে। 

প্রকৌশলী পাভেল জানান, তারা গত ঈদের যানজটের কারণ পর্যালোচনা করে দেখেছেন যে গত ঈদ-উল আজহার সময় মোট ৫৯টি গাড়ি দুর্ঘটনার কবলে পড়েছিল, যার ৫৩টিই ঘটেছিলে সেতুর উপর। 

এবার সেতুর সংযোগ সড়কের পাশে অস্থায়ী টয়লেট নির্মাণসহ টোল প্লাজার কাছে যাত্রীদের জন্য পর্যাপ্ত খাওয়ার পানির ব্যবস্থা রাখা হবে। এছাড়া প্রস্তুত থাকবে দুটি রেকার ও ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি।

তাছাড়া এবার ঈদের ছুটির দিন বেশি থাকায় যানজটের আশঙ্কা কম বলে মনে করেন এই কর্মকর্তা। তবে, গার্মেন্টস ছুটির দিন একটু সমস্যা হতে পারে।

তিনি বলেন, 'সর্বোপরি এবার মানুষ স্বস্তি নিয়ে ঘরে ফিরে প্রিয়জনদের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করতে পারবে বলে আমরা আশা করছি।'

এদিকে আজ রোববার টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ঈদ যাত্রা ও সড়ক নিরাপত্তা বিষয়ে এক গণশুনানী ও মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। জেলা প্রশাসনের সহায়তায় সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ এ সভার আয়োজন করে। সভায় সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নূরী প্রধান অতিথি ছিলেন।  

সভায় ঈদযাত্রা যানজটমুক্ত ও শান্তিদায়ক করার লক্ষ্যে সব অংশীজনের সমন্বয়ে বিভিন্ন কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নের বিষয়ে আলোচনা হয়। 

এর আগে, সচিব বঙ্গবন্ধু সেতু ও সেতুর পূর্ব লিংক রোডের চারলেনের কাজ পরিদর্শন করেন।

Comments