আতঙ্কে মানুষ, এলাকা ছাড়ছেন অনেকে
স্থানীয়দের আতঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই বলে পুলিশ আশ্বস্ত করলেও সেখানে এখনো থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে।
আজ শুক্রবার দুপুরে সরেজমিনে এক ঘণ্টা থানচি বাজার এলাকা থেকে পাঁচটি চান্দের গাড়িতে স্থানীয়দের এলাকা ছেড়ে যেতে দেখা গেছে।
স্থানীয় বাসিন্দা দিদারুল আলম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'স্ত্রী ও দুই সন্তানকে সাতকানিয়ায় পাঠিয়ে দিচ্ছি। এখানে গোলাগুলি হচ্ছে। ছেলে-মেয়ে নিয়ে আতঙ্কিত। এর ঈদের দিনও কাছে চলে এসেছে। তাই সব মিলিয়ে নিরাপত্তার খাতিরে সাতকানিয়ায় পাঠিয়ে দিচ্ছি।'
থানচি থানার পাশেই রয়েছে ডাকাতির শিকার সোনালী ব্যাংক ও কৃষিব্যাংক। এর পাশেই থানচি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় তার পাশেই থানচি উপজেলা সদর ইউনিয়নের বাজার। এছাড়া থানার পাশে ও থানচি বাজারে রয়েছে দুইটি বিজিবির নিরাপত্তা ক্যাম্প।
থানচি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জসীম উদ্দিন বলেন, 'গতকালের হামলার পর সন্ত্রাসীরা থানার এক থেকে দেড় কিমি এলাকার মধ্যে অবস্থান করছে। আমরা সতর্ক অবস্থানে আছি। আমাদের ধারণা, পুলিশের উপর হামলা করে তারা নিজেদের শক্তির জানান দিচ্ছে ও অস্ত্র লুটের পরিকল্পনা করছে। আগামীকাল রাতে দুটি জায়গা থেকে তাদের দুটি দল তইক্ষন পাড়া ও শাহজাহান পাড়া থেকে হামলা চালিয়েছে।'
'থানার জন্য বাড়তি ফোর্স আনা হয়েছে এবং আরও ফোর্স আনা হচ্ছে। সবাই অস্ত্র নিয়ে থানায় চারপাশে সতর্ক অবস্থানে আছে,' বলেন তিনি।
স্থানীয়দের আতঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই বলেও আশ্বস্ত করেন তিনি।
দুপুর সাড়ে ১১টার দিকে গিয়ে থানচি বাজারে গিয়ে দেখা যায় বেশিরভাগ দোকানই বন্ধ। একটি দোকানে কিছু লোককে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন বিজিবির সদস্যরা। বাজারের মধ্যেই রয়েছে থানচি উপজেলা আওয়ামী লীগের অফিস। বিজিবির সদস্যরা অস্ত্র ও নিরাপত্তা সরঞ্জামসহ সেখানেও টহল দিচ্ছেন।
পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক থানচি বাজারের এক বইবিক্রেতা বলেন, 'গতকাল রাতে গোলাগুলি শুরু হলে এখানকার সব দোকানদাররা শাটার নামিয়ে দোকানের ভেতরে অবস্থান করি। রাত ১০টার দিকে পরস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলে আমরা দোকান বন্ধ করে বাসায় চলে যাই।'
তরমুজ বিক্রেতা মো. শাকিব বলেন, 'গতকাল ৪০/৫০ টি তরমুজ বিক্রি করেছিলাম আজ দুপুর ১২টা পর্যন্ত মাত্র দুটি বিক্রি করেছি। অবস্থা ভালো না। মানুষ খুব আতঙ্কে আছেন। ভয়ে কেউ দোকান খুলছেন না।'
স্থানীয় এক কাপড় ব্যবসায়ী দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গতকাল গোলাগুলি শুরু হলে দোকানের খাটিয়ার নিচে শুয়ে ছিলাম। সন্ত্রাসীরা পায়ে হেঁটেই বাজারের ভেতর দিয়ে চলে গেছে। ১ ঘণ্টা গোলাগুলির পর সাড়ে ১০টায় দোকান বন্ধ করে দিয়েছি।'
'পাশে থানা পুলিশ, বিজিবির ক্যাম্প কিন্তু তারপরও এই অবস্থা। আমরা সত্যিই আতঙ্কিত,' বলেন তিনি।
জানতে চাইলে থানচি বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক জসিম উদ্দিন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'মানুষ আতঙ্কে আছে। গতকাল থেকে বিজিবির টহল জোরদার করা হয়েছে কিন্তু বারবার হামলার ঘটনার পর আতঙ্ক কমছে না।'
'প্রশাসনকে আরও আন্তরিক হতে হবে আমরা সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি,' বলেন তিনি।
Comments